মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ঘিরে এশিয়ায় তৈরি হয়েছে এক নাটকীয় পরিবেশ। অনেকে একে বলছেন, জ্বি হুজুর সংস্কৃতি। কারণ, এশিয়ায় পা রাখার পর থেকেই প্রশংসায় ভাসছেন ট্রাম্প। এই অঞ্চলের বাঘা বাঘা নেতারা ট্রাম্পকে কাছে পেয়ে বিগলিত হয়েছেন। মুখের কথায় চিড়ে ভেজানোর পাশাপাশি তার নানা উপঢৌকনেও মার্কিন সম্রাটকে তুষ্ট করার চেষ্টা করেছেন।
আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্পকে বশ করার যেন এক নতুন মন্ত্র খুঁজে পেয়েছেন এশীয় নেতারা; তোষামোদ। পুনর্নির্বাচিত হওয়ার পর ট্রাম্পের প্রথম পাঁচ দিনের পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া সফরে তাকে প্রচুর প্রশংসা ও সম্মানে ভাসিয়েছেন নেতারা।
মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার মধ্যে প্রায় অসম্ভব যুদ্ধবিরতি চুক্তি করার জন্য ট্রাম্পের দৃঢ়তা ও সাহসের প্রশংসা করেছেন। জাপানের প্রধানমন্ত্রী সানায়ে তাকাইচি তার শান্তি প্রচেষ্টায় মুগ্ধ ও অনুপ্রাণিত হওয়ার কথা জানিয়ে ট্রাম্পকে নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য সুপারিশ করেছেন।
অন্যদিকে, দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট লি জে মিয়ং ট্রাম্পকে উপহার হিসেবে দিয়েছেন প্রাচীন সিল্লা রাজ্যের প্রত্নবস্তুর প্রতিরূপ একটি সোনার মুকুট এবং দেশের সর্বোচ্চ সম্মাননা গ্র্যান্ড অর্ডার অফ মুগুংহওয়া।
আশ্চর্যের বিষয় হলো, এই বিপুল তোষামোদের পরই মালয়েশিয়া, জাপান এবং দক্ষিণ কোরিয়া ট্রাম্প প্রশাসনের সাথে বাণিজ্য চুক্তি চূড়ান্ত করেছে। সিঙ্গাপুর ম্যানেজমেন্ট ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক হেনরি গাওয়ের মতে, এশিয়ায় রাজা বা সম্রাটের সঙ্গে আচরণের যে দীর্ঘ ঐতিহ্য রয়েছে, নেতারা যেন সেই রীতি মেনেই ট্রাম্পের সঙ্গে ব্যবহার করছেন, যাতে তাদের বাণিজ্য আলোচনায় সুবিধা হয়।
এমনকি, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ক্ষমতার দিক থেকে সবচেয়ে কাছাকাছি অবস্থানে থাকা চীনও প্রশংসা করতে পিছপা হয়নি। চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই ট্রাম্প এবং শি জিনপিং উভয়কেই বিশ্বমানের নেতা হিসেবে অভিহিত করেছেন।
তবে সাবেক মার্কিন অ্যাটর্নি জেনারেল বিল বারের ভাষায়, ট্রাম্প সবসময়ই দেশের স্বার্থের চেয়ে তার নিজের স্বার্থ ও অহমকেই বেশি গুরুত্ব দেন। এই সফরের ঘটনাগুলো তারই ইঙ্গিত দিচ্ছে।
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল