সোমবার, ১২ ডিসেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

ইস্তাম্বুল ও কায়রোতে জঙ্গি হামলা, নিহত ৬৩

ইস্তাম্বুল ও কায়রোতে জঙ্গি হামলা, নিহত ৬৩

তুরস্কের ইস্তাম্বুুল ও কায়রোতে জঙ্গি হামলায় কমপক্ষে ৬৩ জন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে দুই শতাধিক মানুষ। এর মধ্যে ইস্তাম্বুলে দুটি বিস্ফোরণে কমপক্ষে ২৭ পুলিশ সদস্যসহ ৩৮ জন নিহত হয়েছে। শনিবার ইস্তাম্বুলের বেসিকটাসের ফুটবল ক্লাবের কাছে এই বিস্ফোরণ ঘটে। এ ঘটনায় আহত হয়েছে কমপক্ষে ১৬৬ জন। বিস্ফোরণে জড়িত থাকার সন্দেহে ১০ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

অপরদিকে কায়রোর একটি গির্জায় এক বোমা বিস্ফোরণে অন্তত ২৫ জন নিহত হয়েছে। দেশটির প্রধান খ্রিস্টান কপটিক গির্জার পাশেই ওই গির্জাটি অবস্থিত। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ৩৫ জন। দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে হতাহতের এ তথ্য জানিয়েছে। প্রাথমিকভাবে জঙ্গি সংগঠন আইএস এই বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

আন্তর্জাতিক একাধিক গণমাধ্যম জানায়, গতকাল ইস্তাম্বুলের  ভোডাফোন আরেনা ফুটবল স্টেডিয়ামে বেসিকটাস এবং বুরসাস্পোরের মধ্যে সুপার লিগের ম্যাচ চলছিল। ম্যাচ দেখতে স্টেডিয়ামে হাজির হয়েছিলেন প্রচুর দর্শক। ম্যাচ শেষ হওয়ার পর দর্শকরা যখন স্টেডিয়াম ত্যাগ করছিলেন তখনই একটা বিকট আওয়াজে কেঁপে ওঠে গোটা স্টেডিয়াম। প্রথম বিস্ফোরণের ৪৫ সেকেন্ডের মধ্যে ফের আরও একটা  জোরালো বিস্ফোরণ। পুলিশদের লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ফুটবলের আনন্দ কিছুক্ষণের মধ্যে বিষাদে পরিণত হয়। রক্ত আর শরীরের ছিন্নভিন্ন অঙ্গ ভীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করে। পুলিশ জানিয়েছে, প্রথম বিস্ফোরণটি ঘটে স্টেডিয়ামের বাইরে রাখা একটি গাড়িতে। আর দ্বিতীয় বিস্ফোরণটি ঘটে নিকটবর্তী ম্যাকা পার্কে। সেটি আত্মঘাতী বিস্ফোরণ বলেই মনে করছে পুলিশ। বিস্ফোরণের পরেই ১০ সন্দেহভাজনকে আটক করে পুলিশ।

তাত্ক্ষণিক কোনো গোষ্ঠী বা সংগঠন হামলার দায় স্বীকার করেনি। তবে বিবিসির তুরস্ক সংবাদদাতা মার্ক লোয়েন বলছেন, এ বছরের বিভিন্ন সময়ে মূলত কুর্দি জঙ্গিগোষ্ঠী কিংবা তথাকথিত ইসলামিক স্টেট তুরস্কে  বোমা হামলাগুলো চালিয়েছে।

এই ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে প্রেসিডেন্ট এরদোগান বলেন, ‘রাতে যেভাবে ফুটবল ম্যাচের সময়টাকে টার্গেট করা হয়েছিল তাতে নিশ্চিত বেশি প্রাণহানির জন্যই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

এদিকে মিসরের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মাগদি আবদেল গাফ্ফার এবং কায়রোর নিরাপত্তা প্রধান মহসিন মুরাদ আক্রান্ত চার্চ পরিদর্শন করেছেন। প্রসঙ্গত, মিসরে মোট জনসংখ্যার ১০ শতাংশ কপটিক খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী। রাজধানীর সেন্ট পিটার্স গির্জার সঙ্গেই সেইন্ট মার্ক ক্যাথেড্রাল অবস্থিত। এটি মিসরের অর্থোডক্স চার্চের সদর দফতর হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এখানে কপটিক খ্রিস্টানদের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা পোপ দ্বিতীয় থিয়োডর বসবাস করেন। এর আগে শনিবার কায়রোর উত্তরাঞ্চলীয় গির্জা এলাকায় রাস্তার পাশে পুঁতে রাখা পৃথক দুটি বোমা বিস্ফোরণে ছয় পুলিশ নিহত ও অপর ছয়জন আহত হন। ইসলামিক স্টেটের (আইএস) উত্তর সিনাই শাখার বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে লড়াই করছে মিসরীয় নিরাপত্তা বাহিনী। আইএস সদস্যরা প্রায়ই রাজধানী কায়রো ও অন্যান্য শহরগুলোতে প্রাণঘাতী হামলা চালিয়ে থাকে। এএফপি. বিবিসি।

সর্বশেষ খবর