শুক্রবার, ১৪ জানুয়ারি, ২০২২ ০০:০০ টা

দুঃসময়ে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী

♦ লকডাউনের মধ্যে মদের পার্টি ♦ নিজ দলেই পদত্যাগের দাবি

দুঃসময়ে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী

এমন দুঃসময় এর আগে দেখেননি ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। তার পদত্যাগের দাবি উঠেছে খোদ দলের ভিতর থেকে। ২০২০ সালে ব্রিটেনে যখন কঠোর লকডাউন চলছিল সে সময় প্রধানমন্ত্রীর দফতর এবং বাসা ১০ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিটে একটি মদের পার্টি হয়, যাতে যোগ দিয়েছিলেন জনসন।

সারা দেশের মানুষ যখন কভিড বিধিনিষেধ মেনে  বাড়িতে বসে ছিল, তার মধ্যে আয়োজিত এই পার্টির  খবর ফাঁস হওয়ার পর জনগণের মধ্যে দেখা  দিয়েছে ক্রুদ্ধ প্রতিক্রিয়া। এ ঘটনা সামনে আসার পর তিনি ক্ষমা চেয়েছেন। কিন্তু এতে সন্তুষ্ট নন খোদ তাঁর দলের নেতারা। বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতাসীন দল কনজারভেটিভ পার্টির বেশ কয়েকজন জ্যেষ্ঠ নেতা বরিস জনসনের পদত্যাগ চেয়েছেন; যদিও উপপ্রধানমন্ত্রী ডোমিনিক রাব বরিসের পক্ষ নিয়েছেন।

জনসন বুধবার পার্লামেন্টে এক বিবৃতিতে এই ভুলের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন এবং বলেছেন, মানুষের ক্রোধের কারণটি তিনি বুঝতে পারছেন। কিন্তু ব্যাপারটা সেখানেই থেমে থাকেনি। বিরোধী দল লেবার পার্টি চায় জনসন এই মুহূর্তে পদত্যাগ করুন। কনজারভেটিভ পার্টির কিছু শীর্ষ নেতাও চাইছেন জনসন সরে যান। স্কটল্যান্ডে টোরি পার্টির নেতা ডাগলাস রস বলছেন, তিনি দলের ‘১৯২২ কমিটি’র কাছে লিখবেন যাতে দলের নেতৃত্ব পরিবর্তনের প্রক্রিয়াটি শুরু করা যায়।

ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভের নতুন নেতা নির্বাচন করতে হলে অন্তত ৫৪ জন এমপির প্রত্যেককে দলের কাছে আলাদাভাবে লিখতে হবে।

ওই মদের আসরটি হয়েছিল ২০২০ সালের ২০ মে। পার্টির আমন্ত্রণপত্রে বলা হয়েছিল এতে সামাজিক দূরত্ব মানতে হবে। এই পার্টিতে আগতদের নিজেদের মদ   সঙ্গে আনার কথা বলা হয়েছিল। টেবিলে বিছিয়ে    দেওয়া হয়েছিল নানা রকম খাবার।

বুধবার পার্লামেন্টে প্রধানমন্ত্রীর প্রশ্নোত্তর পর্বে এই ঘটনার জন্য বরিস জনসনকে বার বার করে ক্ষমা চাইতে দেখা যায়। তিনি জানান, ওই পার্টিতে তিনি ২৫ মিনিটের জন্য যোগ দিয়েছিলেন। তবে তার ধারণা ছিল ‘কাজের অংশ হিসেবে’ তার স্টাফদের ধন্যবাদ দেওয়ার জন্য ওই পার্টির আয়োজন করা হয়। তিনি মন্তব্য করেন, ‘এখন আমার মনে হচ্ছে, অন্য কোনোভাবে তাদের ধন্যবাদ জানানো উচিত ছিল। আমার বোঝা উচিত ছিল লাখ লাখ মানুষ বিষয়টাকে এভাবে নাও দেখতে পারেন।’ সেদিনের ওই পার্টির আয়োজন করে কভিড সংক্রান্ত কোনো আইন ভঙ্গ করা হয়েছিল কি না, তা যাচাই করতে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। বিবিসির রাজনীতি বিষয়ক সম্পাদক লরা কুন্সবার্গ বলছেন, এই ঘটনার দায় স্বীকার করা এবং হাউস অব কমন্সে ক্ষমা প্রার্থনার মধ্য দিয়ে জনসন কিছুটা সময় পেলেন। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে এই তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন পেশ করা হবে বলে মনে করা হচ্ছে। ততক্ষণ পর্যন্ত পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত থাকবে। কিন্তু তার নিজের দিক থেকে এই ঘটনায় জনসনের জড়িত থাকা নিয়ে তিনি কোনো সন্দেহের অবকাশ রাখেননি।

সর্বশেষ খবর