শুক্রবার, ৭ অক্টোবর, ২০২২ ০০:০০ টা

তেল উৎপাদন কমানোর ঘোষণা ওপেক প্লাসের

নাখোশ আমেরিকা

তেল উৎপাদন কমানোর ঘোষণা ওপেক প্লাসের

ভিয়েনায় ওপেকভুক্ত দেশগুলোর জ্বালানিমন্ত্রীদের বৈঠক -এএফপি

আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম বাড়ানোর লক্ষ্যে প্রতিদিন ২০ লাখ ব্যারেল অপরিশোধিত তেল উত্তোলন কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে তেল রপ্তানিকারক দেশগুলোর সংগঠন ওপেক প্লাস। এ সিদ্ধান্তের পর আমেরিকার অভিযোগ, ওপেক প্লাস রাশিয়ার সঙ্গে হাত মিলিয়েছে। উল্লেখ্য, এই গ্রুপের সদস্য রাশিয়াও। মূলত তেলের দাম বৃদ্ধির লক্ষ্যেই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে ওপেক প্লাস। এ খবর দিয়েছে বিবিসি।

খবরে জানানো হয়, গত জুন মাস থেকে বিশ্ব বাজারে কমেছে তেলের দাম। রাশিয়ার ইউক্রেন আক্রমণের পর এ দাম আকাশ ছুঁয়েছিল। তবে পরবর্তীতে তা অনেকটাই স্বাভাবিক অবস্থায় নেমে আসে। কিন্তু তেলের দাম আবারও বৃদ্ধির লক্ষ্যে এখন এর উৎপাদন কমিয়ে দিচ্ছে ওপেক প্লাস। ২৩ রাষ্ট্র মিলে তৈরি এ গ্রুপটি প্রায়ই তেলের দাম ও উৎপাদনের মাত্রা নির্ধারণে মিলিত হয়। বিশ্বের মোট তেলের ৩০ শতাংশই উৎপাদন করে এই দেশগুলো। বুধবার অস্ট্রিয়ার রাজধানীর ভিয়েনায় ওপেকভুক্ত দেশগুলোর জ্বালানিমন্ত্রীরা ২০২০ সালের পর প্রথমবারের মতো বৈঠকে বসেন এবং তেলের উৎপাদন কমানোর সিদ্ধান্ত নেন। হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি কারিন জ্য পিয়েরে এয়ারফোর্স ওয়ান বিমানে ভ্রমণের সময় বলেন, ‘আজকের ঘোষণার মাধ্যমে এটি সুস্পষ্ট যে, ওপেক প্লাস রাশিয়ার সঙ্গে হাত মিলিয়ে কাজ করছে।’

বিশ্লেষকরা বলেন, সাম্প্রতিককালে তেলের দাম কিছুটা কমলেও ওপেক প্লাস উৎপাদন কমানোর মাধ্যমে তেলের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়ায় তা মূলত রাশিয়ার অর্থনৈতিক অবস্থানকে সুদৃঢ় করবে। সেক্ষেত্রে আমেরিকা এবং পশ্চিমা দেশগুলো রাশিয়ার অর্থনীতিকে দুর্বল করার যে প্রচেষ্টা চালিয়ে আসছে তা ব্যর্থ হবে। এর মধ্যে সৌদি আরব সব থেকে বেশি তেল উৎপাদনকারী দেশ। ইরানের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার হলে প্রতিদিন গড়ে ১৩ লাখ ব্যারেল তেল বিশ্ববাজারে যোগ করতে পারবে তেহরান।

তেলের চাহিদা কমে যাওয়ায় উদ্বেগ বেড়েছে রপ্তানিকারকদের। অপরিশোধিত তেলের আন্তর্জাতিক বেঞ্চমার্ক ব্রেন্টের দাম গত জুন মাসের ব্যারেলপ্রতি ১২৫ মার্কিন ডলার থেকে এখন মাত্র ৯৩ ডলারে নেমে এসেছে। পেট্রোলের দাম বাড়ায় ব্যবহারও কমেছে।

ইউরোপের গ্যাস সংকট, চীনের কভিড নীতি ও সম্পত্তি সংকট এবং ক্রমবর্ধমান সুদের হার বিশ্বব্যাপী মন্দার আশঙ্কা তৈরি করেছে। তেলের দাম নির্ধারণে ব্যবহৃত মার্কিন ডলারের মূল্যবৃদ্ধি আমেরিকার বাইরে জ্বালানি কেনা আরও ব্যয়বহুল করে তুলেছে।

তবে এই সিদ্ধান্তও ঝুঁকিমুক্ত নয়। চাহিদা কমে যাওয়ায় ২০২০ সালে উৎপাদন কমানোর ধাক্কা এখনো পুরোপুরি কাটিয়ে উঠতে পারেনি ওপেক প্লাস। এর মধ্যে আবারও উৎপাদন কমানোর সিদ্ধান্ত তেলের বাজারে এই জোটের অংশ আরও কমিয়ে দিতে পারে।

সর্বশেষ খবর