গাজায় ইসরায়েলের নির্বিচার হামলায় শুধু ফিলিস্তিনিই মারা যাননি। এ হামলায় প্রাণ গেছে জাতিসংঘ কর্মীদেরও। আর এই সংখ্যা ১০০ পেরিয়ে গেছে। নিহত কর্মীদের স্মরণে গতকাল সংস্থাটির অঙ্গসংস্থাগুলোর সদর দফতরেও জাতিসংঘের পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়। একই দিন জাতিসংঘের এসব দফতরের কর্মীরা নিহত সহকর্মীদের স্মরণে এক মিনিটের নীরবতা পালন করেন। জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থী বিষয়ক ইউএনআরডব্লিউএ সর্বশেষ গত শুক্রবার জানায়, গাজায় ইসরায়েলি হামলায় ১০০ জনেরও বেশি জাতিসংঘের কর্মী নিহত হয়েছেন।
আল-শিফা হাসপাতাল ঘিরে কী চলছে : হাসপাতালের নিচে ভূগর্ভে এবং আশপাশে হামাসের কমান্ড সেন্টার রয়েছে দাবি করে ইসরায়েল গাজার সর্ববৃহৎ হাসপাতাল আল-শিফা অবরুদ্ধ করে রেখেছে। বিদ্যুৎ, পানি, অক্সিজেন ও জ্বলানির অভাবে হাসপাতালটি অচল হয়ে পড়েছে। ভিতরে মরতে শুরু করেছে শিশুসহ চিকিৎসাধীন রোগীরা। ইসরায়েলি ট্যাংক বহর কাছে চলে এসেছে, কয়েকদিন ধরে এমন খবর পাওয়ার পর আল-শিফা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অনেকে প্রাণ বাঁচাতে পালিয়ে গেছেন। অবশেষে এই হামলায় গত পরশু গাজার আল-শিফা ও আল কুদস হাসপাতাল বন্ধ হয়ে গেছে। শহরের সব থেকে বড় দুটি হাসপাতাল ছিল এ দুটি হাসপাতাল। আল-শিফা হাসপাতালে ইসরায়েলি হামলায় ইতোমধ্যেই মৃত্যু হয়েছে তিন নার্সের। এমনকি স্নাইপার হামলাও চালানো হচ্ছে হাসপাতালের ভিতরে। আটকে পড়েছেন হাজার হাজার মানুষ। হাসপাতালের পরিস্থিতি ভয়াবহ বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিদেশ নীতির প্রধান জোসেফ বোরেল জানিয়েছেন, যাদের জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন তাদের সরিয়ে নেওয়ার জন্য যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করা দরকার। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তরফে জানানো হয়েছে, বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আল-শিফা হাসপাতালে পাঁচ রোগীর মৃত্যু হয়েছে। হাসপাতালে শতাধিক মৃতদেহ পড়ে রয়েছে। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনয়ামিন নেতানিয়াহুর দাবি, তাদের থেকে জ্বালানি নিতে চাইছে না হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা-হুর প্রধান টেড্রোস আধানম গেব্রেয়াসাস জানিয়েছেন, আল-শিফা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন তারা। সেখানকার পরিস্থিতি মারাত্মক ও বিপজ্জনক বলে মনে করছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।