ইসরায়েলের সামরিক কর্মকর্তারা স্পষ্টভাবে সংকেত দিচ্ছেন তাঁরা লেবানন এবং গাজায় সামরিকভাবে যা অর্জন করতে পারেন, তা অর্জিত হয়েছে। এখন সময় এসেছে রাজনৈতিক সমাধানের। এর মধ্যে লেবাননের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, হিজবুল্লাহ এবং ইসরায়েলের মধ্যে একটি অস্ত্রবিরতি শিগগিরই কার্যকর হতে পারে। পাশাপাশি মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দুই প্রার্থীও বলেছেন, গাজা ও লেবাননের যুদ্ধ তাঁদের প্রশাসনের এজেন্ডায় থাকতে চায় না। আর ইসরায়েলের সামরিক প্রধান হারজি হালেভি লেবাননে হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে যুদ্ধের প্রতি ইঙ্গিত দিলেও গাজা নিয়ে মন্তব্য করেছেন, ‘যদি আমরা উত্তর গাজা ব্রিগেডের কমান্ডারকে অপসারণ করি, তবে এটি আরেকটি পতন ঘটাবে... আমি জানি না আমরা আগামীকাল কীসের সম্মুখীন হব, তবে এ চাপ আমাদের আরও অর্জনের দিকে নিয়ে যাচ্ছে।’ ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বারবার ‘বিজয়’ অর্জনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তবে তাঁর প্রতিরক্ষামন্ত্রী এবং রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ ইয়োয়াভ গ্যালান্ট এ লক্ষ্য নিয়ে অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন।
বরং গ্যালান্ট গাজার পরিস্থিতি নিয়ে নতুন প্রস্তাব দিয়েছেন। তার মধ্যে আছে অপহৃতদের মুক্তি, হামাসের সামরিক হুমকি নির্মূল এবং নাগরিক শাসন প্রতিষ্ঠা। এটি বর্তমান যুদ্ধের লক্ষ্য থেকে একটি মৌলিক পরিবর্তন নির্দেশ করে, যা হামাসের সামরিক ও শাসনিক ক্ষমতা সম্পূর্ণরূপে নির্মূল করার পরিকল্পনার সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয়। লেবাননের প্রধানমন্ত্রী নাজিব মিকাতি বুধবার আশা প্রকাশ করেছেন, শিগগিরই একটি অস্ত্রবিরতি কার্যকর হবে। তিনি জানান, হিজবুল্লাহ গাজা যুদ্ধের সমাপ্তির শর্তস্বরূপ যুদ্ধ বন্ধ করার দাবি থেকে সরে এসেছে। ‘এখন যুদ্ধ থেকে বেরিয়ে আসার ইচ্ছা রয়েছে,’ মিকাতি বলেন। গ্যালান্ট উল্লেখ করেছেন, হামাস এবং হিজবুল্লাহ এখন ইরানের কার্যকর হাতিয়ার হিসেবে কাজ করতে পারছে না। তিনি বলেন, ‘আমরা জানি কিছু লক্ষ্য সামরিক পদক্ষেপের মাধ্যমে অর্জন করা সম্ভব নয়, এবং আমাদের মানবিক দায়িত্বগুলোকে সম্মান জানাতে হবে।’ তবে নেতানিয়াহু এর বিপরীতে অব্যাহত যুদ্ধের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন।
এদিকে ইসরায়েল এবং হামাসের মধ্যে কাতারে প্রথমবারের মতো পরোক্ষ আলোচনা চলছে। নেতানিয়াহুর কার্যালয় জানিয়েছে, যদি সীমিত প্রস্তাব দেওয়া হয় অর্থাৎ অপহৃতদের মুক্তির বিনিময়ে সংক্ষিপ্ত অস্ত্রবিরতি; তবে প্রধানমন্ত্রী তা গ্রহণ করবেন। কিন্তু যুদ্ধের মূল লক্ষ্য অর্থাৎ অপহৃতদের ফিরিয়ে আনা, এখনো অর্জিত হয়নি। ‘গাজার পরিস্থিতি তখনই স্থিতিশীল হবে যখন অপহৃতদের ফিরিয়ে আনা হবে,’ এক কর্মকর্তা এ কথা বলেছেন।