নতুন পরমাণু চুক্তির জন্য ইরানকে দুই মাসের সময়সীমা বেঁধে দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এর মধ্যে চুক্তি না হলে সামরিক পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত যুক্তরাষ্ট্র। ইরানের পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে নতুন করে উত্তেজনা শুরু হয়েছে। সম্প্রতি পরমাণুবিষয়ক আলোচনার প্রস্তাব দিয়ে ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনিকে একটি চিঠি পাঠান মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে এ চিঠি প্রত্যাখ্যান করেন খামেনি।
ইরানের সরকারি বার্তা সংস্থা ইরনার উদ্ধৃতি দিয়ে এএফপি এই খবর জানায়। এএফপি জানিয়েছে, চিঠি প্রত্যাখ্যান করায় খামেনিকে দুই মাসের আলটিমেটাম দিলেন ট্রাম্প। এক্সিওস জানায়, দুই মাসের মধ্যে নতুন পারমাণবিক চুক্তি না হলে তেহরানের পারমাণবিক অবকাঠামোয় সামরিক হামলা চালানোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ট্রাম্প। এই পদক্ষেপের লক্ষ্য ইরানকে চাপ প্রয়োগ করা এবং পারমাণবিক কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ করা হবে বলে জানিয়েছে গণমাধ্যমটি। এদিকে, ইরনা আরও জানিয়েছে, ট্রাম্পের সাম্প্রতিক হুমকি পারমাণবিক অস্ত্র উৎপাদনের পক্ষে ইরানে জনগণের মাঝে ব্যাপক সমর্থন দেখা গেছে। ইরান তার আনুষ্ঠানিক অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করে বলেছে, তারা কখনো পারমাণবিক বোমা তৈরির উদ্যোগ নেয়নি।
তবে ট্রাম্পের কঠোর মনোভাবের কারণে দেশটির কিছু কট্টরপন্থি নেতা আত্মরক্ষায় পারমাণবিক বোমা তৈরির পক্ষে অবস্থান নিচ্ছেন বলে জানায় গণমাধ্যমটি। ইরনা আরও জানায়, এই পরিস্থিতিতে ইরানের ওপর চাপ আরও বেড়েছে। কারণ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ, বিশেষ করে ইউরোপীয় শক্তিগুলো দেশটির পারমাণবিক কার্যক্রম নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করছে। এসবের মধ্যেই ইরান চীনের সঙ্গে আলোচনা অব্যাহত রেখেছে এবং রাশিয়ার সঙ্গে সামরিক সম্পর্ক জোরদার করার দিকে আরও এগিয়ে যাচ্ছে। -আল জাজিরা
ফলে আন্তর্জাতিক চাপের মধ্যেও ইরান নিজেদের শক্তিশালি অবস্থান ধরে রাখার চেষ্টা করছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
নববর্ষের বার্তায় যা বললেন খামেনি : ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি নওরোজ উপলক্ষে ইরানি জাতিকে অভিনন্দন জানিয়েছেন এবং তার নববর্ষের বার্তায় উৎপাদনের জন্য বিনিয়োগ করার আহ্বান জানিয়েছেন। গতকাল বিকালে পারস্য নববর্ষ উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এক বার্তায় আয়াতুল্লাহ খামেনি এই মন্তব্য করেছেন। খামেনি সরকার এবং জনগণ উভয়েরই দৃঢ়তার সঙ্গে উৎপাদনের জন্য বিনিয়োগ করার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছেন। আয়াতুল্লাহ খামেনি জোর দিয়ে বলেছেন, বিনিয়োগের মাধ্যমে উৎপাদন সমৃদ্ধ হয়। খামেনি গাজায় নতুন করে শুরু হওয়া ইসরায়েলি হামলার নিন্দা জানিয়েছেন। অবরুদ্ধ উপকূলীয় অঞ্চলে মার্কিন-ইসরায়েলি অপরাধের বিরুদ্ধে সর্বসম্মতভাবে ব্যবস্থা নিতে বিশ্বজুড়ে দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। ইয়েমেনের প্রসঙ্গ টেনে আয়াতুল্লাহ খামেনি ইয়েমেনি জনগণের ওপর মার্কিন হামলাকে এমন একটি অপরাধ হিসেবে বর্ণনা করেছেন যা অবশ্যই বন্ধ করতে হবে। তিনি নতুন বছরে মুসলিম উম্মাহর জন্য সমৃদ্ধি, বিজয় এবং কল্যাণের আশা প্রকাশ করেছেন। আয়াতুল্লাহ খামেনেই ইরানি জাতির সুখ, তৃপ্তি, ঐক্য এবং সাফল্য কামনা করেছেন। -আল জাজিরা।
