আসমান ও জমিনের অবিনশ্বর স্রষ্টা মহান আল্লাহর সত্তাগত নাম ‘আল্লাহ’। তা কোনো শব্দ থেকে উৎপন্ন নয়। আল্লাহ শব্দ ছাড়া আর যত শব্দ দ্বারা তাঁকে বোঝানো হয় তা আল্লাহর গুণবাচক নাম। এটাই বেশির ভাগ আলেমের মত।
আল্লামা খাজিন (রহ.) লেখেন, ‘আল্লাহ’ শব্দটি আল্লাহর জন্য বিশেষায়িত নাম। যা আর কারো জন্য প্রযোজ্য নয় এবং অন্য কোনো শব্দমূল থেকে তা উৎপন্নও নয়। আল্লাহ শব্দে কোনো শরিকানাও নেই। এটাই বিশুদ্ধ মত। কেননা পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘তাঁর সমনামের কাউকে কি তোমরা জানো?’ (সুরা মারিয়াম, আয়াত : ৬৫)
উল্লিখিত আয়াতের ভিত্তিতে তাফসিরবিদরা বলেন, পৃথিবীর কোনো সৃষ্টির জন্য আল্লাহ শব্দের প্রয়োগ বৈধ নয়। ইমাম আবু হাইয়ান (রহ.) বলেন, ‘আল্লাহ এমন একটি নাম যা শুধু প্রকৃত উপাস্যের জন্যই প্রয়োগ করা বৈধ। ’ (তাফসিরে ইবনে হাইয়ান : ১/২৭)
আর আল্লাহ যেহেতু মহান স্রষ্টার সত্তাগত নাম তাই তা আল্লাহর সব গুণবাচক নামকেও অন্তর্ভুক্ত করে। ইমাম মালিক (রহ.) বলেন, ‘আল্লাহ প্রকৃত উপাস্যের এমন নাম, যা তাঁর সব গুণবাচক নামকে অন্তর্ভুক্ত করে। চাই গুণবাচক নামটি আমরা জানি অথবা না জানি। এ জনই বলা হয়, আল্লাহ শব্দ ছাড়া মহান স্রষ্টার সব নামই গুণবাচক। ’ (শরহুত তাসহিল : ১/১৭৭)
ইমাম ইবনুল কায়্যিম (রহ.) লেখেন, ‘পৃথিবীর বেশির ভাগ মানুষ জানে আল্লাহ শব্দটি আসমান ও জমিনের স্রষ্টার সত্তাগত নাম। এই নাম থেকে কোনো শব্দ উৎপন্ন হয়নি এবং কোনো শব্দ থেকেও তাকে গ্রহণ করা হয়নি। ’ (সাওয়ায়িকুল মুরসালা : ২/৬৮১)
অবশ্য একদল আরবি ব্যাকরণ ও তাফসির বিশেষজ্ঞ মনে করেন যে আল্লাহ শব্দটি ‘ইলাহুন’ শব্দমূল ও ‘আলাহা’ ক্রিয়াপদ থেকে উৎপন্ন। কেননা পবিত্র কোরআনে আল্লাহকে বোঝাতে ‘ইলাহুন’ শব্দটিও ব্যবহার করা হয়েছে। এ ছাড়া এই বিষয়ে একাধিক মত আছে।
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন