কুয়ালালামপুর শহরে দৃষ্টি নন্দন যে কয়েকটি ভবন ভ্রমণ পিপাসু পর্যটকদের নজর কাড়ে তার একটি হলো মসজিদ জামেক। ভারতীয় মুসলিম মুঘল স্থাপত্য শৈলীতে তৈরি এ মসজিদটি দেখে যে কোনো ধর্মের লোকই বিমোহিত হন।
জাভা স্ট্রিট এবং মালয় স্ট্রিট এলাকায় মালয় সম্প্রদায়ের জন্য কয়েকটি মসজিদ আগে বিদ্যমান ছিল, কিন্তু জামেক মসজিদটি কুয়ালালামপুরে নির্মিত প্রথম বড় মসজিদ। ব্রিটিশ স্থপতি এবি হাবব্যাক ডিজাইন করেন এই দৃষ্টিনন্দন মসজিদটির। যিনি ইন্দো-সারাসেনিক শৈলীতে মসজিদটির নকশা করেছিলেন যা ভারতীয় মুসলিম মুঘল স্থাপত্য শৈলীকে শিথিলভাবে প্রতিফলিত করে।
১০৬৫ সালে জাতীয় মসজিদ খোলার আগ পর্যন্ত এটি শহরের ইসলামী উপাসনার কেন্দ্রবিন্দু ছিল। ২৩ মার্চ ১৯০৮ সালে সেলাঙ্গরের সুলতান স্যার আলাউদ্দিন সুলাইমান শাহ মসজিদটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। সুলতান আনুষ্ঠানিকভাবে ২৩ ডিসেম্বর ১৯০৯ সালে মসজিদটি খুলে দেন। মসজিদটি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে তৎকালিন ৩২,৬২৫ ডলার যার কিছু অংশ ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক সরকারের অবদানে মালয় সম্প্রদায় দ্বারা অর্থায়ন করা হয়।
যে কোন জাতি, ধর্মের মানুষ মসজিদের অভ্যন্তরে পরিদর্শন করতে পারেন এবং নামাজের সময়ের বাইরে এর আশেপাশের মাঠ এবং বাগানে বিশ্রাম করতে পারেন শালীন পোশাক পরিধান করে। তাৎক্ষনিক কারো শালীন পোশাক পরিধান করা না থাকলে মসজিদ এর পক্ষ থেকেও শালীন পোষাক (ফেরত যোগ্য) প্রদান করা হয়। মসজিদটি ১৯৮৪ সালে সংস্কার করা হয়েছিল এবং নদীর নিকটবর্তী মিনারটি ইতিমধ্যেই ঢালু হওয়ায় এটির নিচের অংশটি পুনরায় তৈরি করা হয়েছিল। মসজিদের একটি গম্বুজ ১৯৯৩ সালে ভারী বৃষ্টির কারণে ভেঙে পড়ে, তারপর সেটিও মেরামত করা হয়।
২৩ জুন ২০১৭ সালে সেলাঙ্গরের সুলতান শরাফুদ্দিন ইদ্রিস শাহ তার পূর্বপুরুষ সেলাঙ্গরের চতুর্থ সুলতান আব্দুল সামাদ এর নামানুসারে মসজিদটির নামকরণ করেন সুলতান আব্দুল সামাদ জামেক মসজিদ। কারণ মসজিদটি মূলত সেলাঙ্গর রাজ্যের অংশ ছিল এমন জমিতে নির্মিত হয়েছিল।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল