আরবের সৎ, জ্ঞানী, শক্তিশালী ও যোগ্য ব্যক্তিদের একজন ছিলেন হজরত আত্তাব ইবনে আসিদ (রা.)। তাঁর উপনাম আবু আবদুর রহমান বা আবু মুহাম্মদ। পিতার নাম আসিদ। মায়ের নাম আরওয়া বা জায়নাব, যিনি বনু উমাইয়া গোত্রের কন্যা।
তিনি মক্কার খ্যাতনামা কুরাইশ গোত্রের বনু উমাইয়া শাখার সন্তান। তৎকালীন যুগে তাঁকে আরবের সম্ভ্রান্তদের একজন বিবেচনা করা হতো। হিজরতের ১৩ বছর আগে তাঁর জন্ম। মক্কা বিজয়ের সময় তিনি ইসলাম গ্রহণ করেন।
হুনাইনের যুদ্ধে যাওয়ার সময় রাসুল (সা.) তাঁকে মক্কার আমেল (প্রশাসক) হিসেবে নিয়োগ দেন। তখন তাঁর বয়স মাত্র ২০ বছর পেরিয়েছে। আল্লামা যুরকানির মতে, তাঁর বয়স ছিল ২১ বছর। তিনি নামাজের ইমামতি করেন এবং ওই বছর হজের নেতৃত্ব দেন। এরপর হজরত আবু বকর (রা.)-এর খেলাফতের শেষ দিন পর্যন্ত তিনি ওই দায়িত্বে বহাল ছিলেন।
ইন্তেকাল
ইবনে আসির (রহ.) বলেন, আল্লামা ওয়াকিদির বর্ণনা অনুযায়ী, যেদিন হজরত আবু বকর (রা.) ইন্তেকাল করেন, সেদিনই হজরত আত্তাব (রা.)-ও ইন্তেকাল করেন। দিনটি ছিল ১৩ হিজরির ২১ জুমাদাস সানিয়াহ। তখন তাঁর বয়স ছিল ২৬ বছর বা তার কিছু কমবেশি।
(আত-ত্বাবাকাতুল কুবরা : ৬/৫, ক্র: ১৪৮৫;
আত-ইসতিআব : ৩/১০২৪, ক্র: ১৭৫৬; উসদুল গাবাহ : ৩/৪৫২,
ক্র: ৩৫৩২; আল-আ’লাম : ৪/১৯৯-২০০)
স্ত্রী ও পুত্র
রাসুল (সা.)-এর জীবনের শেষ দিকে তাঁর এক পুত্র জন্ম নেয়, যার নাম আবদুর রহমান, সেই সূত্রেই তাঁর উপনাম আবু আবদুর রহমান। তিনি হজরত আয়েশা (রা.)-এর সঙ্গে জঙ্গে জামালে অংশ নেন। সেখানে আশতার নামের একজনের সঙ্গে মুখোমুখি লড়াইয়ে তিনি নিহত হন। (আল-ইসাবা : ৫/৩৫, ক্র: ৬২৪০)
আবদুর রহমানের মা ছিলেন আবু জাহলের কন্যা জুয়াইরিয়া। তিনি রাসুল (সা.)-এর কাছে বায়াত গ্রহণ করেন এবং ইসলাম গ্রহণ করেন। এই সেই জুয়াইরিয়া, যাঁকে বিয়ে করার প্রস্তাব দিয়েছিলেন হজরত আলী (রা.)। কিন্তু রাসুল (সা.)-এর অনুমতি না পাওয়ায় তিনি আর বিয়ে করেননি। পরে তাঁকে বিয়ে করেন হজরত আত্তাব ইবনে আসিদ (রা.)। এরপর তাঁকে বিয়ে করেন হজরত আবান ইবনে সাঈদ ইবনে আস (রা.), তবে সেখানে তাঁর কোনো সন্তান হয়নি। (আত-ত্বাবাকাতুল কুবরা : ৮/২০৬, ক্র: ৪২০৫; আল-ইসাবা : ৮/৭২, ক্র: ১১০০৭)
বিডি প্রতিদিন/এমআই