শুক্রবার, ২৮ জুন, ২০১৩ ০০:০০ টা
শুক্রবারের বিশেষ প্রতিবেদন

স্বাদ ও মানে অতুলনীয় নওগাঁর প্যারা সন্দেশ

স্বাদ ও মানে অতুলনীয় নওগাঁর প্যারা সন্দেশ

বিচিত্র রসনাবিলাস খাবারের মধ্যে নওগাঁর প্যারা সন্দেশের রয়েছে শত বছরের সুখ্যাতি। শুরুতে পূজামণ্ডপের দেবদেবীর উপাসনার জন্য তৈরি করা হলেও এখন এ সন্দেশ দেশের গণ্ডি পেরিয়ে যাচ্ছে বিদেশে। বিশেষ কিছু বৈশিষ্ট্যের কারণে মিষ্টান্ন জগতের অনেক বড় একটি জায়গা দখল করে আছে এ সন্দেশ। এখন দেশের বিভিন্ন স্থানে প্যারা সন্দেশ তৈরি হলেও এটি প্রথম তৈরি হয় নওগাঁ শহরে। নওগাঁ শহরের মিষ্টি কারিগররা বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, শহরের কালীতলা পূজামণ্ডপের প্রধান গেটসংলগ্ন এলাকায় রয়েছে ছোট ছোট কয়েকটি মিষ্টান্নের দোকান। এগুলোকে বলা হয় ভোগের দোকান। দেবীর আরাধনায় মিষ্টান্নের প্রয়োজনেই প্রায় শত বছর আগে এখানে প্রথম তৈরি করা হয় বিখ্যাত প্যারা সন্দেশ। কিন্তু পরে এ সন্দেশ শুধু দেবীর আরাধনার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকেনি। সুস্বাদু আর পুষ্টিগুণের কারণে এ সন্দেশ হয়ে উঠেছে এলাকার বিখ্যাত মিষ্টান্ন। তাই শুধু দেশের মধ্যেই নয়, এটি এখন যাচ্ছে বিদেশেও। জনশ্রুতি আছে, নওগাঁ শহরের কালীতলার মহেন্দ্রী দাস নামে এক ব্যক্তি প্রথমে প্যারা সন্দেশ তৈরি শুরু করেন। তখন কালীতলায় জনবসতি ছিল না বললেই চলে। মহেন্দ্রীর পর তার ছেলে ধীরেন্দ্রনাথ দাস দোকানের দায়িত্ব পান। সেই সময় বিমল মহন্ত নামে মিষ্টির এক কারিগরের হাতযশে প্যারা সন্দেশের সুখ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে। ধীরেন্দ্রনাথ দাস প্রায় ৩০ বছর ব্যবসার পর দোকানটি সুরেশ চন্দ্র মহন্তের কাছে বিক্রি করে অন্যত্র চলে যান। এরপর সুরেশ মহন্ত দোকানে মিষ্টির নতুন কারিগর নারায়ণ চন্দ্র প্রামাণিককে আনেন। নারায়ণ সেই থেকে প্যারা সন্দেশ তৈরি করে আসছেন। আবারও ওই দোকানের মালিকানা পরিবর্তন হয়। বর্তমানে দোকানের মালিক বৈদ্যরতন দাস। তবে মিষ্টির কারিগর রয়েছেন সেই নারায়ণ দাসই।

নওগাঁর বিখ্যাত প্যারা সন্দেশের ব্যাপারে কথা হয় 'নওগাঁ মিষ্টান্ন ভাণ্ডার'-এর স্বত্বাধিকারী নাজমুল হকের সঙ্গে। তিনি বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, প্যারা সন্দেশ তৈরির প্রথম ধাপে তরল দুধের সঙ্গে চিনি মিশিয়ে জ্বাল করে তৈরি করা হয় ক্ষীর। ক্ষীর যখন হাতায় জড়িয়ে আসে তখন উষ্ণ ক্ষীর দুই হাতের তালু দিয়ে রোল করে সামান্য চাপ দিলেই তৈরি হয়ে যায় হালকা খয়েরি রংয়ের প্যারা সন্দেশ। তৈরি পদ্ধতি খুব সহজ। প্রতিটি প্যারা সন্দেশ প্রায় আধা ইঞ্চি চওড়া ও দুই ইঞ্চি লম্বা। ৭৫-৮০ পিসে এক কেজি হয়।

 

 

সর্বশেষ খবর