রবিবার, ১ মার্চ, ২০১৫ ০০:০০ টা
দুই সিটি নির্বাচন

ঢাকায় প্রচার শুরু করেছেন প্রার্থীরা

ঢাকায় প্রচার শুরু করেছেন প্রার্থীরা

ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রচার-প্রচারণা শুরু করেছেন সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থীরা। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে আওয়ামী লীগের দুই প্রার্থী ইতিমধ্যে ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে প্রচার শুরু করেছেন। আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী হিসেবে ঢাকা উত্তর সিটিতে প্রচারে নেমেছেন এফবিসিসিআইর সাবেক সভাপতি আনিসুল হক। ঢাকা দক্ষিণে মহানগর আওয়ামী লীগের সংগঠনিক সম্পাদক সাঈদ খোকন। এদিকে আগেই দক্ষিণ সিটিতে মেয়র প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়ে মাঠে রয়েছেন স্বতন্ত্র এমপি হাজী সেলিম। তিনিও প্রচার-প্রচারণায় পিছিয়ে নেই। প্রতিনিয়ত বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ করছেন। ঢাকা দক্ষিণে মেয়র প্রার্থী হওয়ার বিষয়ে হাজী সেলিম গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘আমি আগে থেকেই প্রচারে আছি’। এ ছাড়া সাবেক এমপি গোলাম মাওলা রনিও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে মেয়র প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি ইতিমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে মেয়র হওয়ার বিষয়টি জানান দিয়েছেন। গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকেও তিনি দক্ষিণে মেয়র প্রার্থী হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। অন্যদিকে নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না ডিসিসি নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিলেও বর্তমানে তিনি মামলার অভিযুক্ত হিসেবে রিমান্ডে রয়েছেন। রিমান্ড শেষে তার প্রার্থী হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যাবে। তবে জাতীয় পার্টি এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো মেয়র প্রার্থীর নাম ঘোষণা না করলেও কয়েকজনের নাম আলোচনায় রয়েছে। এ ছাড়া সিপিবিও দুই সিটিতে প্রার্থী দিচ্ছে বলে জানা গেছে। একইভাবে কাউন্সিলর প্রার্থীরাও দলীয় মনোনয়ন পেতে কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেছেন। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা না হলেও ইতিমধ্যে বিলবোর্ড ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার-প্রচারণা শুরু হয়েছে। এমনকি ওয়ার্ড পর্যায়ে আওয়ামী লীগের একক প্রার্থী দিতেও কাজ শুরু করেছে দলের হাইকমান্ড।
এদিকে বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আনুষ্ঠানিক সাক্ষাৎ শেষে আওয়ামী লীগের দুই প্রার্থী মাঠে নেমেছেন। ঢাকা উত্তরের মেয়র প্রার্থী আনিসুল হক প্রচার চালাচ্ছেন। তার সমর্থকরাও উত্তর সিটির নাগরিকদের মধ্যে প্রচারে নেমেছেন। উত্তর সিটিতে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে নির্দলীয় ব্যক্তি ব্যবসায়ী নেতা ও এফবিসিসিআই এবং সার্ক চেম্বারের সাবেক সভাপতি আনিসুল হককে প্রার্থী করায় নতুন চমক হিসেবে দেখছেন নির্বাচন বিশ্লেষকরা। আর সাঈদ খোকনও গতকাল প্রচার নিয়ে ব্যস্ত সময় কাটিয়েছেন। পুরান ঢাকার কয়েকটি ওয়ার্ডে তার সমর্থনে মিছিলও হয়েছে। তিনিও গতকাল ইস্কাটন গার্ডেন উচ্চবিদ্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে ভোটারদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে দীর্ঘদিন ধরেই মাঠে আছেন ঢাকা সিটি করপোরেশনের প্রথম নির্বাচিত মেয়র মোহাম্মদ হানিফের ছেলে সাঈদ খোকন। এর আগে ডিসিসির তফসিল ঘোষণা হলে তখনো তিনি মেয়র পদে প্রার্থী ছিলেন। ইতিমধ্যে তার কর্মী-সমর্থকরা পুরান ঢাকা এলাকায় তার নামে বিলবোর্ডও লাগিয়েছেন। এমনকি ফেসবুকেও তার নামে প্রচার চলছে। এ বিষয়ে মেয়র প্রার্থী সাঈদ খোকন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘আমি অনানুষ্ঠানিক প্রচার শুরু করেছি। তফসিল ঘোষণা হলে আনুষ্ঠানিকভাবে কাজ শুরু করব।’ অন্যদিকে জাতীয় পার্টি এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে ঢাকার দুই সিটি নির্বাচনে প্রার্থী ঘোষণা না দিলেও দলের চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের গ্রিন সিগন্যাল পেয়ে সম্ভাব্য মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা অনানুষ্ঠানিক প্রচার শুরু করে দিয়েছেন। উত্তর সিটি করপোরেশনে মেয়র পদে দলের উত্তরের সভাপতি এম ফয়সল চিশতি ও সাধারণ সম্পাদক বাহাউদ্দিনের নাম শোনা যাচ্ছে। দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থীর তালিকায় রয়েছে দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও ঢাকা-৬ আসনের এমপি কাজী ফিরোজ রশীদ ও ঢাকা-৪ আসনের এমপি সৈয়দ আবু হোসেন বাবলার নাম। ঢাকার দুই সিটিতে মেয়র প্রার্থী দিচ্ছে সিপিবি। ঢাকা উত্তরে সিপিবির প্রার্থী হতে পারেন দলের জাতীয় পরিষদ সদস্য ও যুব ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সভাপতি আবদুল্লাহ আল কাফী রতন এবং দক্ষিণে সিপিবির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি রুহিন হোসেন প্রিন্স। এ ছাড়া ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থী হিসেবে গণফোরামের নেতা মোস্তফা মহসীন মন্টুর নামও শোনা যাচ্ছে। সম্প্রতি মন্ত্রিসভার বৈঠকে ও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আওয়ামী লীগের দুই প্রার্থীর সাক্ষাতের পরে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়টি আশার সঞ্চার করেছে ঢাকাবাসীর মনে। এ ছাড়া সম্ভাব্য মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরাও এ কারণে সক্রিয় হয়ে উঠেছেন। তারা নিজ নিজ অবস্থান থেকে প্রচারও চালাচ্ছেন। ইসি সূত্রে জানা গেছে, মার্চের মাঝামাঝিতে তফসিল দিয়ে এপ্রিলে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন। এ ছাড়া ঢাকার দুই সিটি ও চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচন একই দিনে করারও পরিকল্পনা রয়েছে ইসির। তবে রাজনৈতিক অবস্থার ওপর বিবেচনা করেই নির্বাচন কমিশন নির্বাচনের দিনক্ষণ নির্ধারণ করবে বলে জানা গেছে।

সর্বশেষ খবর