মঙ্গলবার, ২৮ এপ্রিল, ২০১৫ ০০:০০ টা
পজেটিভ বাংলাদেশ

৪৫ মিনিটে লাকসাম থেকে চাঁদপুর

চাঁদপুর-লাকসাম রেলপথের ৫৭ কিলোমিটার এলাকায় ১৬৮ কোটি টাকার উন্নয়নকাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে। আগামী জুনের মধ্যে উন্নয়নকাজ শেষ হবে বলে সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন। এর ফলে একদিকে যেমন সময় বাঁচবে, তেমনি পাল্টে যাবে এ এলাকার যোগাযোগব্যবস্থা। ভারতীয় কালিন্দিসহ পাঁচটি কোম্পানির ব্যবস্থাপনায় দ্রুতগতিতে এ রেলপথের    কাজ এগিয়ে চলছে। বাংলাদেশ রেলওয়ের উপ-প্রকৌশলী (কুমিল্লা) মোস্তাফিজুর রহমান জানান, আগামী জুনের মধ্যেই পুরো কাজ শেষ হবে। ৫৭ কিলোমিটার রেলপথ অতিক্রমে যেখানে ২ ঘণ্টা লাগত, কাজ শেষ হওয়ার পর লাগবে মাত্র ৪৫ মিনিট। চাঁদপুর-লাকসাম রেলপথের উন্নয়নে একনেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১২ সালে ১৬৮ কোটি টাকা বরাদ্দ দেন। চাঁদপুর জেলা তথা দক্ষিণাঞ্চলের হাজার হাজার যাত্রী এ পথে প্রতিদিন যাতায়াত করেন। তাদের সুবিধার্থে ও সরকারের রাজস্বের লক্ষ্যে এ পথের উন্নয়ন চিন্তা করছে সরকার। ব্রিটিশ আমলে প্রায় দেড়শ’ বছর আগে এ রেলপথ স্থাপন করা হয়। সে সময় থেকে এর উন্নয়নে বড় ধরনের কোনো সংস্কার করা হয়নি। ২০১২ সালে রেল কর্তৃপক্ষ এ পথের সংস্কারের লক্ষ্যে ৫২ কিলোমিটার মেইন লাইন, ৫ কিলোমিটার লুপ লাইন, ৫৬টি ব্রিজ, স্টেশন ভবনগুলো সংস্কার ও কালার লাইট সিগন্যাল ও অপটিক্যাল ফাইবার ক্যাবল এবং গ্রামীণফোনের মাধ্যমে স্টেশনগুলো নেটওয়ার্কের আওতায় আনার কাজ শুরু করে। ৫৭ কিলোমিটার কাজের দায়িত্ব পায় ভারতীয় কালিন্দি কোম্পানিসহ পাঁচ প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানগুলো ২০১২ সালের ৩০ মার্চ কাজ শুরু করে হাজীগঞ্জ এলাকা থেকে। ২০১৩ সালের ৩০ জুন এ কাজ শেষ করার সময় নির্ধারণ করে দেওয়া হয়। প্রতিষ্ঠানগুলোর জনবল ও প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম না থাকায় ছয়বার কাজ শুরু করে আবার বন্ধ রাখে। রেল কর্তৃপক্ষ জানায়, এ পর্যন্ত পাঁচবার প্রতিষ্ঠানগুলোকে সময়সীমা বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
রেলওয়ে চট্টগ্রাম বিভাগের লাকসাম অঞ্চলের সিনিয়র উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. লিয়াকত আলী মজুমদার ও উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. আবদুল হাই জানান, ২০১৪ সালে কালিন্দিসহ পাঁচটি কোম্পানি চট্টগ্রাম আজমাইন ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল কোম্পানির কাছে কাজটি বিক্রি করে দেয়। ওই কোম্পানি দুবার কাজ শুরু করে বন্ধ করে দেয়। অবশেষে পাঁচটি কোম্পানি জামানতের অর্থ ক্ষতি হয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় পুনরায় কাজ শুরুর সিদ্ধান্ত নেয়। তিন সপ্তাহ ধরে উন্নয়নকাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে। তারা জানান, আগে রেলপথ যে অবস্থায় ছিল তার চেয়ে বর্তমান রেলপথ ১ ফুট উঁচু হবে। পুরাতন রেলপাত খুলে নতুন কংক্রিট স্লিপার বসিয়ে ৭৫ পাউন্ড ওজনের রেলপাত স্থাপন করা হচ্ছে। বর্তমানে ট্রেন চলাচল করছে ২৫-৩০ কিলোমিটার গতিতে। পুরো কাজ শেষ হলে চলাচল করবে ঘণ্টায় ৭২-৭৫ কিলোমিটার গতিতে। এতে যাত্রীদের সময় বাঁচবে সোয়া ১ ঘণ্টা। ২ ঘণ্টার স্থলে লাগবে ৪৫ মিনিট। এ পর্যন্ত ২৮ কিলোমিটারের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। হাজীগঞ্জ থেকে রেলপাত দ্রুতগতিতে বসিয়ে চাঁদপুরের কাছাকাছি ও চিতশী থেকে রেলপাত বসিয়ে শাহরাস্তি পর্যন্ত কাজ হয়েছে। এ কাজে প্রতিদিন ১৪৮ জন শ্রমিক দিনরাত কাজ করছেন।

সর্বশেষ খবর