বুধবার, ২১ অক্টোবর, ২০১৫ ০০:০০ টা

মহাষ্টমী ও কুমারী পূজা আজ

প্রিন্স বিশ্বাস

মহাষ্টমী ও কুমারী পূজা আজ

জমে উঠেছে শারদীয় দুর্গোৎসব। আনন্দময়ী দেবীর এ শারদীয় আগমনে মুখরিত চারদিক। ঢাকের বোল, খোল, করতাল, উলু আর শঙ্খ ধ্বনিতে দেশব্যাপী এক উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে। গতকাল ছিল শারদীয় দুর্গোৎসবের দ্বিতীয় দিন মহাসপ্তমী। আজ উৎসবের তৃতীয় দিন মহাষ্টমীতে কুমারী ও সন্ধিপূজা অনুষ্ঠিত হবে। গতকাল মহাসপ্তমীর দিন সকালে কলাবউকে স্নান করিয়ে শুরু হয় দুর্গাপূজার মূল অনুষ্ঠানের প্রথাগত সূচনা। গতকাল রাজধানীর ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির, রামকৃষ্ণ মিশন মন্দির, স্বামীবাগের লোকনাথ ব্রহ্মচারী আশ্রম ও মন্দির এবং বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার পূজামণ্ডপ ঘুরে দেখা যায়, সকাল থেকেই দর্শনার্থী ও ভক্তবৃন্দদের সমাগম বাড়তে থাকে। শারদীয় এ স্নিগ্ধ নির্মল সকালে জগত্তারেনী দেবীর চরণে পুষ্পাঞ্জলি দিতে উপবাস থেকে সমবেত হয়েছেন। অশুভ শক্তির বিনাশ ও বিশ্বের সব প্রাণীর মঙ্গল কামনায় গতকাল সকাল সোয়া ৭টায় রাজধানীর বিভিন্ন পূজামণ্ডপে অনুষ্ঠিত হয় মহাসপ্তমী পূজা। এদিন রাজধানীর বিভিন্ন মণ্ডপে নারী-পুরুষ একত্রিত হয়ে ফুল, বেলপাতা হাতে নিয়ে অঞ্জলি প্রদানের মধ্যে দিয়ে দুর্গা মায়ের আশীর্বাদ প্রার্থনা করেন। সপরিবারে রামকৃষ্ণ মিশন মন্দিরে অঞ্জলি দিতে আসা অনামিকা রায় জানান, ‘মায়ের কাছে পৃথিবীর শান্তি, মঙ্গল ও সমৃদ্ধি কামনা করেছি। তিনি যেন আমাদের সবাইকে সুস্থ ও শান্তিতে রাখেন’। অঞ্জলি শেষে আগত ভক্তদের মধ্যে প্রসাদ বিতরণ করা হয়। পরে দুস্থদের মধ্যে বস্ত্র বিতরণ ও সন্ধ্যায় আরতি প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। ঢাকার রামকৃষ্ণ মিশনের সহসম্পাদক এবং পূজার তন্দ্রধারক স্থিরাত্মনন্দ মহারাজ (নিরঞ্জন মহারাজ) বলেন, ঈশ্বর সবকিছুর মাঝে রয়েছেন। প্রকৃতির বিভিন্ন সৃষ্টির মধ্যে নয়টি গাছের ফুল, ফল, পাতা দিয়ে সব অশুদ্ধকে শোধন করে মাকে পূজা করা হয়।

আজকের আয়োজন : দুর্গোৎসবের প্রধান আকর্ষণ মহাষ্টমীতে আজ কুমারী পূজা। সকাল ৮টা ৪০ মিনিটের মধ্যে অনুষ্ঠিত হবে দেবীর মহাষ্টমীকল্পারম্ভ ও বিহিত পূজা। এরপর আয়োজন করা হবে কুমারী পূজা। জগতের সব নারীর মধ্যে যে মমত্ববোধ ও শক্তি রয়েছে তার প্রতি শ্রদ্ধা জানাতেই মাটির প্রতিমার পাশাপাশি কুমারী পূজা করা হয়। পরে অনুষ্ঠিত হবে সন্ধিপূজা। মা দুর্গার কাছে অসুর বাহিনীর আত্মসমর্পণই হলো সন্ধিপূজা।

রাজধানীর বেশ কয়েকটি পূজামণ্ডপ ঘুরে দেখা যায়, মূলত হিন্দু সম্প্রদায়ের এ ধর্মীয় উৎসব হলেও অসাম্প্রদায়িক চেতনা নিয়ে দেশের সব ধর্ম ও বর্ণের লোকেরা এ আনন্দযজ্ঞে শামিল হয়েছেন। ভাগ করে নিচ্ছেন সবার মাঝে এ আনন্দ। দিনের বেলায় দর্শনার্থীদের সমাগম কিছুটা কম থাকলেও রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভক্ত ও দর্শনার্থীদের সমাগম বেড়ে চলে সমান তাগিদে।

নিরাপত্তা ব্যবস্থা : নির্বিঘ্নে পূজাউৎসব উদযাপিত করতে রাজধানীর মণ্ডপগুলোতে নেওয়া হয়েছে চার স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। প্রথম স্তরে মণ্ডপকে ঘিরে রয়েছে স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী ও পুলিশ, দ্বিতীয় স্তরে সিসি ক্যামেরা, মেটাল ডিটেক্টর ও স্টিল ক্যামেরা। তৃতীয় স্তরে র‌্যাব ও গোয়েন্দা পুলিশ সোয়াত এবং চতুর্থ স্তরে থাকছে সাদা পোশাকে গোয়েন্দা পুলিশ, টহল পুলিশ, ডগ স্কোয়ার্ড ও বোমা ডিসপোজাল ইউনিট।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর