সোমবার, ১১ জুলাই, ২০১৬ ০০:০০ টা

হেফাজতে ইসলামে মাইনাস টু ফর্মুলা

আল্লামা শফী-বাবুনগরীর বিকল্প চিন্তা

মুহাম্মদ সেলিম, চট্টগ্রাম

হেফাজতে ইসলামে মাইনাস টু ফর্মুলা

দেশের আলোচিত অরাজনৈতিক সংগঠন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ থেকে ‘মাইনাস’ হচ্ছেন আমির আল্লামা আহমেদ শফী ও মহাসচিব আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী। সংগঠনটির আগামী ওলামা মাশায়েক সম্মেলনে তাদের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়ে নতুন আমির ও মহাসচিবের নাম ঘোষণা করার পরিকল্পনা করছে সংগঠনটির একটি অংশের নেতারা। শীর্ষ পর্যায়ের কয়েকজন নেতার সঙ্গে আলাপকালে এমন আভাস মিলেছে। সংগঠনটির আমির ও মহাসচিবের পদ থেকে আল্লামা আহমেদ শফী ও আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরীকে সরিয়ে দেওয়ার কথা তৃণমূলের নেতা-কর্মীদে মধ্যে জানাজানি হওয়ার পর সংগঠনের অভ্যন্তরে তুমুল আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। হেফাজতে ইসলামের কয়েকজন নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বর্তমান আমির আল্লামা আহমেদ শফি এবং মহাসচিব আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরীকে পদ থেকে সরিয়ে নতুন দুজনকে দায়িত্ব দেওয়ার ‘ষড়যন্ত্র’ করছে হেফাজতের একটি অংশ। তারা আগামী ওলামা মাশায়েক সম্মেলনে বর্তমান আমির ও মহাসচিবের বয়সজনিত শারীরিক অসুস্থতার অজুহাতে সরিয়ে নতুন কাউকে দায়িত্ব দেওয়ার পরিকল্পনা করছেন। ঢাকায় অবস্থান করেন এমন কাউকে সংগঠনের আমির ও মহাসচিব করার প্রস্তাব করা হবে ওলামা মাশায়েক সম্মেলনে। এ ছাড়া সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ও ঢাকায় করার প্রস্তাব করা হবে। তাদের পরিকল্পনায় আমির হিসেবে আলোচনায় রয়েছেন হেফাজতে ইসলামের বর্তমান নায়েবে আমির মাওলানা নুর হোসেন কাশেমী, মুধুপুরের পীর সাহেব মাওলানা আবদুল হামিদ, হাফিজ্জি হুজুরের ছেলে মাওলানা আতাউল্লাহ বোখারী। মহাসচিব পদে আলোচনায় রয়েছেন ইসলামী ঐক্যজোট একাংশের বর্তমান মহাসচিব ও হেফাজতে ইসলামের বর্তমান যুগ্ম-মহাসচিব মুফতি ফয়জুল্লাহ, মাওলানা সাজেদুর রহমান এবং মাওলানা লোকমান হাকিম প্রমুখ। নাম প্রকাশ না করার শর্তে হেফাজতে ইসলামের একজন কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, ‘হেফাজতে ইসলামে মাইনাস টু ফর্মুলা বাস্তবায়ন করতে মাঠে রয়েছেন তিন নেতা। এ পরিকল্পনার মূলে রয়েছেন দুজন ঢাকার এবং একজন চট্টগ্রামের নেতা। তাদের এ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে হেফাজতে ইসলামের চেইন অব কমান্ড ভেঙে পড়বে। এক কথায় হেফাজতে ইসলামের অপমৃত্যু ঘটবে।’ হেফাজতে ইসলামের সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল হক ইসলামাবাদী বলেন, ‘হেফাজতে ইসলামে আল্লামা আহমেদ শফী ও আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরীর বিকল্প এখনো তৈরি হয়নি। একটি গ্রুপ এ ধরনের অপপ্রচার করে হেফাজতে ইসলামের অগ্রযাত্রা বাধাগ্রস্ত করতে চাইছে।’ ২০১৩ সালের ৫ মে সারা দেশ থেকে ঢাকা অভিমুখে লং-মার্চ করে এবং ঢাকার মতিঝিল শাপলা চত্বরে সমাবেশ করে আলোচনায় আসে হেফাজতে ইসলাম, বাংলাদেশ। পরে পুলিশি অভিযান ও কেন্দ্রীয় নেতাদের নামে মামলা দায়েরের পর আত্মগোপনে চলে যান হেফাজতে ইসলামের শীর্ষ নেতারা। পরবর্তীকালে ধীরে ধীরে প্রকাশ্যে আসেন হেফাজত নেতা-কর্মীরা। এ সময় হেফাজতের পক্ষ থেকে বেশ কয়েকবার ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় মহাসমাবেশ, বিক্ষোভ কর্মসূচি, ওলামা মাশায়েক সম্মেলনসহ নানা কর্মসূচি ঘোষণা দিলেও বিভিন্ন অজুহাতে তা স্থগিত ঘোষণা করা হয়।

সর্বশেষ খবর