ব্রহ্মপুত্র নদের কোলঘেঁষা খুদিরকুঠি গ্রামের অনার্স পড়ুয়া ছাত্র শফিকুল ইসলাম এখন নিজ বাড়িতে বসে বিদ্যুতের আলোয় পড়াশোনা করতে পারছেন। গত ছয় বছর আগেও এ গ্রামের মানুষ বিদ্যুতের আলো পাবে তা স্বপ্নেও ভাবতে পারত না। এখন দিন পাল্টে গেছে। যেখানে পল্লীবিদ্যুৎ পৌঁছাতে পারেনি সেখানে সৌরবিদ্যুতের আলো পৌঁছে গেছে। ফলে দুর্গম খুদিরকুঠি গ্রামের মতো শত শত গ্রাম এখন আলোয় উদ্ভাসিত। কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার বেগমগঞ্জ ইউনিয়নে সরেজমিন দেখা গেছে, জেলা শহরের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন এই গ্রামের ৭০ ভাগ মানুষ এখন সোলার প্যানেল ব্যবহার করে বিদ্যুতের চাহিদা মেটাচ্ছে। এরকমভাবে কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার ১৬টি গ্রাম, উলিপুরে ৪০টি, চিলমারীতে ৬০টি গ্রাম এখন সৌরবিদ্যুতের আলোয় আলোকিত। তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, ধরলা, তিস্তা, ব্রহ্মপুত্র, দুধকুমোর ও ফুলকুমারসহ ছোট-বড় ১৬টি নদ-নদী কুড়িগ্রামের ভূখণ্ডকে সাপের মতো পেঁচিয়ে রেখেছে। এসব নদ-নদীর অববাহিকায় প্রায় দুই শতাধিক চর ও দ্বীপচরে পল্লীবিদ্যুতের আলো পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হয়নি। ফলে চরাঞ্চলের প্রায় ৬ লক্ষাধিক মানুষ বিদ্যুতের ব্যবহার থেকে বঞ্চিত ছিল। সোলার প্যানেল পদ্ধতি চালু হওয়ার পর ধীরে ধীরে দুর্গম চরাঞ্চলগুলোর দৃশ্যপট পাল্টে যেতে থাকে। এখন চরের মানুষ তাদের সাধ্য অনুযায়ী সোলার প্যানেল কিনে অনায়াসে নিজ বাড়ি আলোকিত করছে। বিশেষ করে গ্রামীণ শক্তি নামে একটি এনজিও চরাঞ্চলের মানুষদের মাঝে সহজ কিস্তিতে সোলার প্যানেল বিক্রি করায় চরাঞ্চলগুলোতে এর চাহিদা বেড়েই চলেছে। এ ছাড়া কুড়িগ্রাম জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন অধিদফতর জানায়, দুই বছর আগে থেকে প্রতিটি কাবিটা (কাজের বিনিময়ে খাদ্য) এবং টিআর (টেস্ট রিলিফ) প্রকল্পের অর্থায়নে সোলার প্যানেল ক্রয় করে বিনামূল্যে দুস্থ মানুষ এবং বিভিন্ন শিক্ষা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে বিতরণ কার্যক্রম অব্যাহত থাকায় সোলার বিদ্যুতের প্রসারতা ক্রমে বাড়ছে। সূত্রটি জানায়, প্রতি বছর কুড়িগ্রামের ৯টি উপজেলায় গড়ে দুই হাজার টাকার বিনিময়ে কাবিখা এবং টিআর প্রকল্পের বিপরীতে প্রায় দেড় হাজার সোলার প্যানেল বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়েছে। এ ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকলে আগামী তিন বছরের মধ্যে চরাঞ্চলের ঘরে ঘরে বিদ্যুতের আলো পৌঁছে যাবে বলে সূত্রটি জানায়। এদিকে কুড়িগ্রামের ধরলা সেতুর পূর্বপ্রান্তে ১১০ একর জমির ওপর সোলার পার্ক প্রকল্প প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এ প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে কুড়িগ্রাম জেলার দুর্গম চরাঞ্চল ও পিছিয়ে পড়া গ্রামগুলোর চেহারা পাল্টে যাবে। সোলার পার্ক প্রকল্প থেকে উৎপাদিত বিদ্যুতে জেলার সার্বিক চাহিদা মেটার পর বাকি বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করার পরিকল্পনা রয়েছে। কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সিরাজ-উদ-দৌলা জানান, প্রতিটি কাবিখা ও টিআর প্রকল্পের অর্থায়নে সোলার প্যানেল ক্রয় করে বিনামূল্যে বিতরণের ব্যাপারে আমরা সর্বদা সজাগ রয়েছি। কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসন জানায়, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের দেওয়া দিকনির্দেশনা অনুসরণ করে সোলার বিদ্যুতের ব্যবহার বাড়িয়ে জ্বালানি উৎপাদিত বিদ্যুতের ওপর চাপ কমানোর বিষয়টিকে আমরা গুরুত্ব দিচ্ছি।
শিরোনাম
- আমেরিকানরা এখনো নারী নেতৃত্বে প্রস্তুত নয়: মিশেল ওবামা
- বিশ্বকাপ মঞ্চে দেখা যেতে পারে ক্ষুদ্রতম দেশ কুরাসাওকে
- নীলফামারীতে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আ.লীগের ১২ নেতাকর্মী গ্রেপ্তার
- জামিন পেলেন হিরো আলম
- শাহরুখের নামে দুবাইয়ে পাঁচতারা হোটেল
- ইবিতে ছাত্রলীগ সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে শিক্ষার্থী আটক, থানায় সোপর্দ
- ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ৫ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ৭৯২
- বিদেশি অপরাধী ঠেকাতে থাইল্যান্ডে ভিসা যাচাইয়ে নতুন কড়াকড়ি
- জলবায়ু পরিবর্তনে ক্ষতিপূরণের দাবিতে বলেশ্বর নদীতে নৌ-র্যালি
- আওয়ামী লীগের যেকোনো কর্মকাণ্ড অপরাধ বলে গণ্য হবে : অ্যাটর্নি জেনারেল
- একাত্তরের মতো জুলাইকে নিয়ে একটা শ্রেণি ব্যবসা শুরু করেছে : শিবির সভাপতি
- আশুগঞ্জে ১২০ কেজি গাঁজাসহ পাচারকারী গ্রেফতার, পিকআপ জব্দ
- সাংবাদিকদের সবসময় ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে: মুন্সীগঞ্জে ফারুক ওয়াসিফ
- কোনো অপশক্তিই নির্বাচন বানচাল করতে পারবে না : আইজিপি
- পুলিশের ঊর্ধ্বতন ৬ কর্মকর্তাকে রদবদল
- জনগণকে যারা বাদ দিয়েছে, তারাই আজ জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন : খোকন
- রূপগঞ্জে অজ্ঞাত ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার
- লকডাউন আর বেহেশতের টিকিট বিলিকারীদের মধ্যে সম্পর্ক আছে : এ্যানী
- ৫০০ মিটার সেতুর অভাবে তিন জেলার মানুষের ভোগান্তি
- নির্বাচন ঘিরে ৯ দিন মাঠে থাকবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
পজেটিভ বাংলাদেশ
সৌরবিদ্যুতে পাল্টে গেছে দুর্গম গ্রাম
সাইফুল আলম তুহিন, কুড়িগ্রাম
প্রিন্ট ভার্সন
এই বিভাগের আরও খবর
সর্বশেষ খবর