বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০১৯ ০০:০০ টা

৭১ বেতের আঘাতে স্কুলছাত্র হাসপাতালে

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি

সপ্তম শ্রেণির ছাত্র সৈকত কুমার পালের শরীরে একের পর এক বেতের আঘাত করে যাচ্ছিলেন তার শিক্ষক। সৈকত সহ্য করতে না পেরে ওই শিক্ষকের হাতে-পায়ে ধরে রক্ষা পেতে চাইছিল। সেই সঙ্গে চিৎকার করছিল বাবাগো-মাগো বলে। কিন্তু তাতে মন গলেনি নিষ্ঠুর শিক্ষক নাজমুল আলমের। একে একে তিনি ৭১টি বেতের আঘাত করেন ছাত্রের শরীরে। পরে গুরুতর আহত সৈকতকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। ঘটনাটি ঘটেছে নারায়ণগঞ্জ শহরের চেঞ্জেস স্কুল নামের ইংরেজিমাধ্যম শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। জানা গেছে, ১৬ এপ্রিল দুপুরে চেঞ্জেস স্কুলের চাঁদমারি ক্যাম্পাসে আইসিটি বিষয়ে হোমওয়ার্ক করে না আনায় সপ্তম শ্রেণির ছাত্র সৈকত কুমার পালকে ৭১টি বেত্রাঘাত করে আহত করা হয়। পরে তাকে শহরের খানপুর সরকারি হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হয়। এ ঘটনায় গতকাল বেলা সাড়ে ১১টার দিকে চেঞ্জেস ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল কর্তৃপক্ষ ও অভিভাবকরা আলোচনার মাধ্যমে অভিযুক্ত শিক্ষক নাজমুল আলমকে বরখাস্ত করেন। শিক্ষার্থীরা জানায়, এই শিক্ষকের বিরুদ্ধে এর আগেও অভিযোগ করা হয়েছিল। কিন্তু স্কুল কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। তারা জানায়, ঘটনার দিন ছাত্র সৈকতের ওপর যে অমানবিক নির্যাতন চালানো হয় তা দেখে সহপাঠীরা চোখের জল ধরে রাখতে পারেনি। এ ঘটনার পর নাজমুল আলমের সহশিক্ষকরা তাকে সতর্ক করলেও তিনি উল্টো হুঙ্কার দিয়ে জানান দিয়েছিলেন, ‘তার পেছনে শক্তিশালী লোকেরা আছে। তার কিছু হবে না।’ আহত শিক্ষার্থী সৈকত কুমারের বাবা সুরিথ কুমার পাল বলেন, ‘ওই শিক্ষক হয়তো মানসিক অসুস্থ। কারণ কোনো সুস্থ মানুষ এমন কাজ করতে পারে না। তবে স্কুল কর্তৃপক্ষের এমন সিদ্ধান্তে আমি সন্তুষ্ট। তাই এখন আর অন্য কোনো স্টেপে যাব না।’ স্কুলটির প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক জি এম ফারুক বলেন, ‘এ স্কুল যখন প্রতিষ্ঠা করা হয়, তখন থেকেই বাচ্চাদের গায়ে হাত তুলে শাসন করতে শিক্ষকদের নিষেধ করা আছে। এর পরও সাম্প্রতিক ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক।’

সর্বশেষ খবর