বুধবার, ১১ ডিসেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

ব্যাপক পরিবর্তন সংসদীয় সীমানা আইনে

জাতীয় জনসংখ্যা গড়ের ভিত্তিতে আসন বণ্টন । সিটি করপোরেশন, বড় শহর ও পল্লী এলাকার ভারসাম্য রক্ষা । সিটিতে মোট জনসংখ্যার দুই-তৃতীয়াংশের মাধ্যমে আসন নির্ধারণ । প্রত্যেক জেলায় একটি আসন সংরক্ষিত থাকবে

গোলাম রাব্বানী

ব্যাপক পরিবর্তন সংসদীয় সীমানা আইনে

জাতীয় সংসদের সীমানা নির্ধারণ সংক্রান্ত আইনে পরিবর্তন আসছে। নির্বাচন কমিশন নতুন করে এই আইন সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছে। আজ নির্বাচন কমিশনের বৈঠকে এই সংশোধনী উপস্থাপন করা হবে। এ আইন সংশোধন হলে আগামী সংসদ নির্বাচনে পরবর্তী সংসদের সীমানা নির্ধারণ হবে। এক্ষেত্রে কমিশন ৩০০ আসন বণ্টন করবে ‘জাতীয় জনসংখ্যা কোটা’ বা ‘জাতীয় জনসংখ্যা গড়’ এর ভিত্তিতে। তবে সিটিতে মোট জনসংখ্যার দুই-তৃতীয়াংশের মাধ্যমে নির্ধারণ হবে আসন। আর প্রত্যেক জেলায় একটি করে আসন সংরক্ষিত থাকবে। আর সিটি করপোরেশন, বড় বড় শহরের ও পল্লী এলাকার ভারসাম্য রক্ষার দিকে বিশেষ দৃষ্টি দেবে কমিশন।

ইসির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এবারের আইনে ‘জাতীয় জনসংখ্যা কোটা’র ভিত্তিতে প্রত্যেক জেলায় আসন বণ্টন করার বিষয় স্পষ্ট করা হচ্ছে। সেইসঙ্গে আসন বণ্টনে জনসংখ্যা কোটা কীভাবে নির্ধারণ হবে তাও উল্লেখ করা হচ্ছে আইনে। জানা গেছে, ২, ৫, ৬ ধারা ও বিভিন্ন উপধারায় ব্যাপক পরিবর্তন আসছে। ২ ধারায় যুক্ত হচ্ছে ‘জাতীয় জনসংখ্যা কোটা’ নামে নতুন উপধারা। ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নির্বাচনী প্রস্তুতির মধ্যে আজ নির্বাচন কমিশনের ৫৬তম সভা অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদার সভাপতিত্বে এ সভা অনুষ্ঠিত হবে। এ সভার অন্যতম পাঁচটি এজেন্ডায় ঢাকা সিটি নির্বাচনের প্রস্তুতিমূলক বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। এবারের ইসির সভার আলোচ্যসূচি-ক) নির্বাচনী প্রশিক্ষণ বাজেটের প্রমিতকরণ সংক্রান্ত নীতিমালা; খ) গণপ্রতিনিধিত্ব আইন, ২০১৯ এর খসড়া চূড়ান্ত করণ; গ) সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণ আইন, ২০১৯ এর খসড়া চূড়ান্ত করণ; ঘ) একাদশ সংসদ নির্বাচনের প্রতিবেদন মুদ্রণ সংক্রান্ত; ঙ) ইসির কার্যক্রমের ওপর একটি প্রামাণ্য চিত্র তৈরি এবং চ) বিবিধ।

সূত্র জানিয়েছে, সংশোনীতে ২ ধারায় ‘জাতীয় জনসংখ্যা কোটা’/ ‘জাতীয় জনসংখ্যা গড়’ শীর্ষক একটি উপধারা নতুন করে যুক্ত করা হচ্ছে। এ ছাড়া জাতীয় জনসংখ্যা কোটা কি তার ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে ৫ ধারার ২ উপধারায়। ৫ ধারার ২ উপধারায় ‘জাতীয় জনসংখ্যা কোটা’ কীভাবে নির্ধারণ হবে তাও উল্লেখ করা হয়েছে। ৫ এর ২ উপ-ধারায় বলা হয়েছে-(ক) সিটি করপোরেশন ব্যতীত সমগ্র দেশের বিদ্যমান ভোটার সংখ্যা এবং সর্বশেষ আদমশুমারি প্রতিবেদনে প্রাপ্ত জনসংখ্যার গড় নির্ধারণ; (খ) সিটি করপোরেশন সমূহের হালনাগাদকৃত বিদ্যমান ভোটার সংখ্যা এবং সর্বশেষ আদমশুমারি প্রতিবেদনে প্রাপ্ত জনসংখ্যার যোগফলের দুই তৃতীয়াংশ এর গড় নির্ধারণ; (গ) ক এবং খ তে প্রাপ্ত ফলাফলের যোগফলকে সংসদের মোট আসন সংখ্যা দ্বারা বিভাজনের মাধ্যমে প্রাপ্ত সংখ্যা। ৫ এর ৩ উপ-ধারায় বলা হয়েছে- “উপ-ধারা ২ অনুযায়ী একইভাবে প্রতিটি জেলার জনসংখ্যা এবং ভোটার সংখ্যার গড় নির্ধারণ করে জনসংখ্যার কোটা দ্বারা ভাগ করে প্রতিটি জেলার আসন বণ্টন করতে হবে। ৫ এর ৫ উপ-ধারায় বলা হয়েছে- ৩ উপ-ধারা এ প্রাপ্ত জনসংখ্যার গড় এবং জাতীয় জনসংখ্যা কোটার ভিত্তিতে প্রাপ্ত গড়ের ব্যবধান ২৫ শতাংশ পর্যন্ত কম-বেশি হলে সংশ্লিষ্ট জেলার আসন সংখ্যার কোনো কম বেশি হবে না। ৫ এর ৬ উপ-ধারায় বলা হয়েছে-৩ উপধারায় যা কিছুই থাকুক না কেন, কমিশন প্রত্যেক জেলার অনুকূলে অন্যূন ১টি আসন বণ্টন করবে। ৬ ধারায় জেলা জনসংখ্যা কোটার বিষয়ে বলা হয়েছে- ৪(ক) সিটি করপোরেশন (যদি থাকে) ব্যতীত সংশ্লিষ্ট জেলার বিদ্যমান ভোটার সংখ্যা এবং সর্বশেষ আদমশুমারি প্রতিবেদনে প্রাপ্ত জনসংখ্যার গড় নির্ধারণ; (খ) সিটি করপোরেশন (যদি থাকে) এর বিদ্যমান ভোটার সংখ্যা এবং সর্বশেষ আদমশুমারি প্রতিবেদনে প্রাপ্ত জনসংখ্যার যোগফলের দুই তৃতীয়াংশ গড় নির্ধারণ; (গ) দফা ক এবং খ তে প্রাপ্ত ফলাফলের যোগফলকে সংশ্লিষ্ট জেলার অনুকূলে বণ্টনকৃত মোট আসনে সংখ্যার দ্বারা বিভাজনের মাধ্যমে প্রাপ্ত সংখ্যা।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর