সোমবার, ৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা

পদ্মা সেতুর সাড়ে তিন কিলোমিটার দৃশ্যমান

বসল ২৩তম স্প্যান

শরীয়তপুর ও মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি

পদ্মা সেতুর সাড়ে তিন কিলোমিটার দৃশ্যমান

পদ্মা সেতুর ২২তম স্প্যান বসানোর ১২ দিনের মাথায় গতকাল বিকাল ৩টার দিকে বসানো হয়েছে ২৩তম স্প্যান। জাজিরা প্রান্তের ৩১ ও ৩২ নম্বর পিলারে ২৩ নম্বর স্প্যানটি বসানো হয়েছে। এতে ৩ হাজার ৪৫০ মিটার দৃশ্যমান হয়েছে। এটি প্রায় সাড়ে তিন কিলোমিটারের সমান। এর আগে ২৩ জানুয়ারি ২২তম স্প্যানটি বসানো হয়। পদ্মা সেতুর উপ-সহকারী প্রকৌশলী হুমায়ুন কবির জানান, সকাল সাড়ে ৯টায় ১৫০ মিটার দীর্ঘ ও ৩ হাজার ১৪০ টন ওজনের ২১তম স্প্যানটি বসাতে  ৩ হাজার ৬০০ টন ধারণ ক্ষমতার ‘তিয়ান-ই’ ভাসমান ক্রেনে মুন্সীগঞ্জের মাওয়া কুমারভোগ কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ড থেকে আনা হয়। এরপর স্প্যানটিকে পিলারের উপরে তোলার কার্যক্রম শুরু হলে ৩টার দিকে স্প্যানটি বসানো সম্পন্ন হয়। শিডিউল ঠিক থাকলে আগামী জুলাই নাগাদ ৪১টি স্প্যান বসানো শেষ হবে। পদ্মা সেতুর প্রকৌশল বিভাগ সূত্র জানায়, পদ্মা সেতুর মোট ৪১টি স্প্যানের মধ্যে বর্তমানে চীন থেকে মাওয়ায় এসেছে ৩৫টি স্প্যান। এর মধ্যে ২৩টি স্থায়ীভাবে বসানো হয়েছে। সেতুতে ২ হাজার ৯৫৯টি রেলওয়ে স্ল্যাবের মধ্যে ৪১০টি রেল স্ল্যাব বসানো হয়েছে। ২ হাজার ৯১৭টি রোডওয়ে স্ল্যাবের মধ্যে ১২৫টি স্ল্যাব বসানো শেষ হয়েছে। ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে দ্বিতল কাঠামোর সেতুটি কংক্রিট ও স্টিল দিয়ে নির্মাণ করা হচ্ছে। চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না রেলওয়ে মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং গ্রুপ কোম্পানি লিমিটেড মূল সেতু নির্মাণের কাজ করছে।

সেতু সংশ্লিষ্টরা জানান, গত ৩১ জানুয়ারি স্প্যানটি পিলারের ওপর বসানোর কথা থাকলেও আবহাওয়া অনুকূলে না থাকায় তা সম্ভব হয়নি। এদিকে আরও একটি পিলার বা খুঁটি সম্পন্ন হয়েছে। এ নিয়ে ৩৭টি পিলার সম্পন্ন হলো। বাকি ৫টি পিলার আগামী এপ্রিলের মধ্যেই সম্পন্ন করা হবে। ৪২টি পিলারের ওপর ৪১টি স্প্যান বসানো হবে। ইতিমধ্যে আগামী জুলাইয়ের মধ্যে সবকটি স্প্যান পিলারের ওপর বসানোর পরিকল্পনা রয়েছে কর্তৃপক্ষের। পদ্মা সেতুর নির্বাহী প্রকৌশলী দেওয়ান আবদুল কাদের বাসসকে জানান, প্রতি মাসে তিনটি স্প্যান বসানোর কথা থাকলেও জানুয়ারিতে স্প্যান উঠেছে দুটি। তবে ফেব্রুয়ারিতে এর সংখ্যা বাড়বে। তিনি বলেন, এ পর্যন্ত মূল সেতুর কাজ হয়েছে ৮৫ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ। সেতুর সার্বিক অগ্রগতি ৭৬ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ। এভাবে দ্রুততার সঙ্গে এগিয়ে চলছে পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ। আবদুল কাদের আরও জানান, করোনাভাইরাসের কারণে পদ্মা সেতুর নির্মাণে কিছুটা প্রভাব পড়েছে। পদ্মা সেতুতে প্রায় ১ হাজার ১০০ চীনা নাগরিক কর্মরত। চীনা নববর্ষ উপলক্ষে প্রায় ২০০ নাগরিক ছুটিতে চীনে গিয়ে করোনাভাইরাসের কারণে আটকা পড়েছেন। তিনি বলেন, চীনা কর্মকর্তাদের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা আলাদা। যারা তাদের সার্ভ করেন, তারা যেন সব সময় সেফটি ড্রেস (মাস্ক ও গ্লাভস) পরিধান করে থাকেন, সে বিষয়ে জোর দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া চীনা কর্মীদের আলাদা ক্যাম্প রয়েছে। চীন থেকে ইতিমধ্যে ৩২ জন চীনা নাগরিক ফিরে এসেছেন। তাদের প্রকল্প এলাকায়ই আলাদা করে রাখা হয়েছে। তারা সবাই সুস্থ আছেন।

সর্বশেষ খবর