বৃহস্পতিবার, ২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা

রাঙামাটিতে ব্রাশফায়ারে নিহত ইউপিডিএফ কর্মী

রাঙামাটি প্রতিনিধি

রাঙামাটিতে বন্দুকভাঙ্গা ইউনিয়নে সশস্ত্র সন্ত্রাসীর ব্রাশফায়ারে ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্র্যাটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) কর্মী নিহত হয়েছেন। নিহত ব্যক্তির নাম সুমন চাকমা ওরফে অক্টোবর (৩০)। এ সময় সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা অস্ত্রের মুখে তুলে নিয়ে গেছে বাবুছ চাকমা ওরফে অর্পণকে (৩১)। গতকাল সকাল ৯টার দিকে সদর উপজেলার বন্দুকভাঙ্গা ইউনিয়নের সারিক্ষং মুখের বোয়ালছড়ি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এদিকে পৃথক ঘটনায় দুর্বৃত্তের অস্ত্রের মুখে অপহৃত হয়েছেন কাপ্তাই উপজেলার ২ নম্বর রাইখালী ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মং চিং মারমা। উভয় ঘটনায় এলাকাগুলোতে চরম উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে। যৌথ বাহিনীর বিশেষ দল অপহৃতদের উদ্ধারে নেমেছে। ইউপিডিএফের রাঙামাটি জেলা ইউনিটের সংগঠক সচল চাকমা জানান, রাঙামাটি সদর উপজেলার বন্দুকভাঙ্গা ইউনিয়নের সারিক্ষং মুখের বোয়ালছড়ি গ্রামে রূপায়ণ চাকমার (উত্তরণ) নেতৃত্বে একদল সশস্ত্র সন্ত্রাসী স্পিডবোটে করে এসে বোয়ালছড়ি গ্রামে সাংগঠনিক কাজে নিয়োজিত দুই ইউপিডিএফ সদস্যের ওপর অতর্কিতে ব্রাশফায়ার করে। এতে সুমন চাকমা ঘটনাস্থলে মারা যান। এরপর সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা অপর ইউপিডিএফ সদস্য বাবুছ চাকমা ওরফে অর্পণকে টেনেহিঁচড়ে মারধর করতে করতে অস্ত্রের মুখে অপহরণ করে নিয়ে যায়। তবে এ ঘটনার জন্য ইউপিডিএফের এই নেতা কোনো আঞ্চলিক সংগঠনকে দায়ী না করলেও সহকর্মী সুমন চাকমার খুনিদের বিচারের আওতায় আনার এবং অপহৃত বাবুছ চাকমাকে নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানান। অন্যদিকে এ ঘটনার খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে যায় যৌথ বাহিনীর একটি দল।

এ ব্যাপারে রাঙামাটি কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর জাহেদুল ইসলাম রনি জানান, পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে সুমন চাকমার রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করেছে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য রাঙামাটি মেডিকেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের পর লাশ তার স্বজনদের হস্তান্তর করা হবে। এ বিষয়ে মামলা প্রক্রিয়াধীন। এদিকে রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার ২ নম্বর রাইখালী ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মং চিং মারমাকে (৫০) অস্ত্রের মুখে তুলে নিয়ে গেছে সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা। গতকাল ভোররাতে কাপ্তাই উপজেলার রাইখালী ইউনিয়নের কারিগরপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার রাইখালী ইউনিয়নের কারিগরপাড়ায় একদল সশস্ত্র সন্ত্রাসী হানা দেয়। এ সময় কাপ্তাই উপজেলার ২ নম্বর রাইখালী ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মং চিং মারমা নিজ বাড়িতে ঘুমাচ্ছিলেন। পরে সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা ঘরের দরজা ভেঙে অস্ত্রের মুখে তাকে তুলে নিয়ে যায়। এ ঘটনার পর থেকে এ প্রতিবেদন তৈরি পর্যন্ত তার কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি।

কাপ্তাই উপজেলার রাইখালী ইউপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মো. এনামুল হক বলেন, ‘৫ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মং চিং মারমার স্ত্রী বিষয়টি আমাকে মুঠোফোনে জানিয়েছেন। খবর পেয়ে আমরা তার বাড়িতে যাই। তবে কে বা কারা তাকে তুলে নিয়ে গেছে সে বিষয়ে সঠিক কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।’

কাপ্তাই উপজেলার চন্দ্রঘোনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আশরাফ উদ্দিন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, পুলিশ ঘটনাটি তদন্ত করছে। একই সঙ্গে অপহৃত ইউপি সদস্যকে উদ্ধারে তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে যৌথ বাহিনী।

সর্বশেষ খবর