বৃহস্পতিবার, ১৩ আগস্ট, ২০২০ ০০:০০ টা
প্রকৃতি

গো-শালিক বা গোবরে শালিক

আলম শাইন

গো-শালিক বা গোবরে শালিক

স্থানীয় প্রজাতির পাখি গো-শালিক বা গোবরে শালিক খুবই নজরে পড়ে। সমতল ভূমি ছাড়াও পাহাড়ের পাদদেশে এদের দেখা মেলে। চালচলনে নোংরা, পরিচ্ছন্নতা নেই। বাংলাদেশ ছাড়াও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার নানা অঞ্চলে বিস্তৃতি রয়েছে এদের। মানুষের কাছাকাছি বিচরণ করলেও প্রজাতির অন্যদের মতো বসতঘরের কাছে ভেড়ে না। যেমনটি ভেড়ে ভাত-শালিক কিংবা ঝুঁটি শালিকরা। মূলত এদের পছন্দ খোলা মাঠ-প্রান্তর। সারা দিন ঘুরে বেড়ায় মাঠ-প্রান্তরেই। গবাদি পশুর মল ঘেঁটে পোকামাকড় ধরে খায়। গবাদি পশুর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার কারণে নামকরণ হয়েছে গো-শালিক। আবার গবাদি পশুর পিঠে চড়ে খানিকটা ঘুরেও বেড়ায়। কণ্ঠস্বর মিষ্টি। স্বভাবে ফুর্তিবাজ। পোষও মানে। শেখালে কথাও বলতে পারে, তবে ভাত শালিকের মতো কথা বলায় অতটা পারদর্শী নয়।  

পাখির বাংলা নাম : গো-শালিক, ইংরেজি নাম : ‘এশিয়ান পায়েড স্টার্লিং’, (Asian Pied Starling)। বৈজ্ঞানিক নাম : Sturnus contra। দেশে প্রায় ১০ প্রজাতির শালিক নজরে পড়ে। যথাক্রমে : গো-শালিক, ভাত-শালিক, ঝুঁটি-শালিক, গাঙ-শালিক, পাতি কাঠশালিক, গোলাপি কাঠশালিক, চিতিপাখ গোশালিক, খয়রালেজ কাঠশালিক, বামুন কাঠশালিক ও ধলাতলা শালিক। প্রজাতির গড় দৈর্ঘ্য ২২-২৩ সেন্টিমিটার। মাথা, গলা ও ঘাড় কালো। চোখের নিচ থেকে ঘাড় পর্যন্ত সাদা পট্টি। পিঠ ধূসর কালো। ডানায় সাদা টান। দেহের নিম্নাংশের পালক সাদা। ঠোঁটের গোড়া গাঢ় কমলা, অগ্রভাগ সাদাটে। পা হলদেটে। স্ত্রী-পুরুষ একই রকম। প্রজনন মৌসুমে উভয়েরই ঠোঁটের বর্ণ বদলায়। অবশ্য সবার ক্ষেত্রে সেটি না-ও ঘটতে পারে। প্রধান খাবার : পোকামাকড় , কেঁচো ইত্যাদি। এ ছাড়াও মাদার ও শিমুল ফুলের মধু এদের পছন্দ। প্রজনন মৌসুম মার্চ থেকে সেপ্টেম্বর। বাসা বাঁধে কাঁটাওয়ালা গাছে। এ ছাড়াও টেলিগ্রাম টেলিফোনের থাম-তারের সংযোগস্থলে অগোছালো বাসা বাঁধে। বাসা বানাতে উপকরণ হিসাবে ব্যবহার করে শুকনো ঘাস, লতাপাতা, দড়ি, কাপড়ের টুকরো ইত্যাদি। ডিম পাড়ে ৪-৬টি। ডিম ফুটতে সময় লাগে ১৪-১৫ দিন। লেখক : কথাসাহিত্যিক, কলামিস্ট ও বন্যপ্রাণী বিশারদ।

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর