শিরোনাম
বুধবার, ২৬ মে, ২০২১ ০০:০০ টা
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পর্যালোচনা

দেশের চেয়ে আন্তর্জাতিক বাজারে ভোজ্য তেলের দাম বেশি

নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশের চেয়ে আন্তর্জাতিক বাজারে ভোজ্য তেলের দাম বেশি বেড়েছে। বর্তমানে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতি কেজি সয়াবিনের দাম ১৩৫.৮৪ টাকা হলেও দেশের বাজারে পণ্যটি প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১২৫ টাকা দরে। ভোজ্য তেলের স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বাজার দর পর্যালোচনা করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এক পর্যালোচনা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এক বছর আগে আন্তর্জাতিক বাজারে সয়াবিন তেলের মূল্য যা ছিল তার চেয়ে প্রায় ১৬০ শতাংশ দাম বেড়েছে। অপরদিকে দেশীয় বাজারে ভোজ্যতেলের মূল্য বৃদ্ধির হার ৩৫ শতাংশ। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আমদানি ও অভ্যন্তরীণ বাণিজ্য অনুবিভাগের দ্রব্যমূল্য পর্যালোচনা ও পূর্বাভাস সেল কর্তৃক নিয়মিত পর্যবেক্ষণ এবং পর্যালোচনা প্রতিবেদনে বলা হয়, বিগত এক বছরে বিশেষ করে রমজান মাসে ভোজ্যতেল ব্যতীত অন্য সব পণ্যের বাজার দর মোটামুটি স্থিতিশীল ছিল। সংশ্লিষ্টরা জানান, ২০১৪ সাল থেকে ২০২০ সালের জুন পর্যন্ত ভোজ্যতেলের বাজার মোটামুটি স্থিতিশীল ছিল। গত বছরের জুনের পর থেকে আন্তর্জাতিক বাজারে অস্বাভাবিক ঊর্ধ্বগতি পরিলক্ষিত হচ্ছে। আমদানি নির্ভর পণ্য হওয়ায় ভোজ্যতেলের বাজার দর মূলত নির্ভর করে আন্তর্জাতিক বাজার দরের ওঠানামার ওপর। কর্মকর্তারা জানান, দেশে ভোজ্যতেলের মোট চাহিদার ৯৫ ভাগেরও বেশি আমদানির মাধ্যমে পূরণ করা হয়। তাই সাম্প্রতিক সময়ে আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে স্থানীয় বাজারেও এর প্রভাব পড়েছে। তবে, আন্তর্জাতিক বাজারে যে হারে বেড়েছে, স্থানীয় বাজারে সেভাবে বাড়েনি। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মো. জাফর উদ্দীন বলেন, করোনা মহামারীর কারণে দফায় দফায় লকডাউন বাড়লেও নিত্যপণ্য সরবরাহে কোনো ধরনের ঘাটতি ছিল না। বন্দর ও কাস্টমস কর্তৃপক্ষকে নিয়মিত তাগিদ দেওয়া হয়েছে ভোগ্যপণ্য যাতে দ্রুত ছাড় করা হয়। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বাজার মনিটরিং টিম সার্বক্ষণিক বাজার মনিটরিং কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। নিত্যপণ্যের স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বাজার নিয়মিত পর্যবেক্ষণ এবং পর্যালোচনার ফলে ব্যবসায়ীরাও অহেতুক কোনো পণ্যের দাম বাড়াতে পারেনি। এ ছাড়া আন্তর্জাতিক বাজারের তুলনায় দেশে ভোজ্যতেলের দাম কম ছিল। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের পারস্পরিক সহযোগিতামূলক মনোভাবের কারণে বাজার দর এতটা কম রাখা সম্ভব হয়েছে।

টিসিবির পণ্য পেয়েছে ৩ কোটি ৩৩ লাখ পরিবার : গত বছরের মার্চ থেকে চলতি বছরের মে পর্যন্ত ২ লাখ ৩৩ হাজার ৭৯৪ মেট্রিক টন পণ্য ন্যায্যমূল্যে বিক্রি করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)। দেশের ৩ কোটি ৩৩ লাখ ২৩ হাজার পরিবারের কাছে সাশ্রয়ীমূল্যে এসব পণ্য বিক্রি করা হয়েছে। এতে উপকৃত হয়েছেন ১৩ কোটি ৩৩ লাখ মানুষ। পণ্যগুলোর মধ্যে রয়েছে, সয়াবিন তেল, চিনি, মসুর ডাল, পিঁয়াজ, ছোলা, আলু এবং খেজুর। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গতকাল এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে। সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন দফতর সংস্থা নিত্যপণ্যের বাজার স্থিতিশীল রাখার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চলেছে। বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন নিয়মিতভাবে বিভিন্ন পণ্যের বাজার পরিস্থিতি পর্যালোচনা করছে। জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর দেশব্যাপী নিয়মিত বাজার মনিটরিং কার্যক্রম পরিচালনা করছে। পাশাপাশি, টিসিবি ট্রাক সেলের মাধ্যমে সাশ্রয়ীমূল্যে নিম্ন আয়ের মানুষের কাছে নিত্যপ্রয়োজনীয় বিভিন্ন পণ্য পৌঁছে দিচ্ছে।

সর্বশেষ খবর