রাজশাহীর কাটাখালী পৌরসভার মেয়র আব্বাস আলীকে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন জানিয়ে আদালতে সোপর্দ করেছে পুলিশ। গতকাল সকালে তাকে বোয়ালিয়া মডেল থানার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় আদালতে সোপর্দ করা হয়। পরে আদালতের নির্দেশে তাকে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়। এর আগে ভোরে তাকে নিয়ে রাজশাহী পৌঁছায় বোয়ালিয়া থানা পুলিশ। আগের দিন বুধবার সকালে রাজধানীর হোটেল রাজমণি ঈশা খাঁ থেকে তাকে গ্রেফতার করে র্যাব। বোয়ালিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নিবারণ চন্দ্র বর্মণ জানান, বুধবার রাতে র্যাবের কাছ থেকে আব্বাসকে গ্রহণ করে বোয়ালিয়া থানা পুলিশ। এরপর তাকে নিয়ে রাজশাহীর উদ্দেশে রওনা দেয়। ভোরে তাকে নিয়ে রাজশাহী পৌঁছায় পুলিশ। পরে থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেফতার দেখিয়ে তাকে আদালতে সোপর্দ করা হয়। এ সময় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন জানানো হয়। তবে এর শুনানি অনুষ্ঠিত হয়নি। আগামী রবিবার রিমান্ড আবেদনের শুনানি হতে পারে। পরে আদালতের নির্দেশে তাকে রাজশাহী কারাগারে পাঠানো হয়। রাজশাহীর স্পেশাল পিপি অ্যাডভোকেট জহুরুল ইসলাম জানান, পুলিশের করা রিমান্ড আবেদনের শুনানি হবে রবিবার। তারা রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে অংশ নেবেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল স্থাপনের বিরোধিতা করে আলোচিত হন রাজশাহীর কাটাখালী পৌরসভার মেয়র আব্বাস আলী।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল স্থাপনকে কেন্দ্র করে আপত্তিকর মন্তব্য করেন নৌকা প্রতীকে দুইবারের নির্বাচিত মেয়র আব্বাস আলী। এরপর তার ফাঁস হওয়া অডিও ঘুরছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। ২২ নভেম্বর রাত থেকে অডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। তার এমন বক্তব্যে রাজশাহীজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়। এ ঘটনায় ২৩ নভেম্বর রাতের বিভিন্ন সময়ে রাজশাহী মহানগরীর রাজপাড়া, বোয়ালিয়া ও চন্দ্রিমা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মেয়র আব্বাসের বিরুদ্ধে তিনটি মামলার আবেদন করা হয়। তবে একই অভিযোগ হওয়ায় বোয়ালিয়া থানায় করা নগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের ১৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবদুল মোমিনের এজাহারটি গ্রহণ করে পুলিশ। ওই মামলায় র্যাব আব্বাস আলীকে গ্রেফতার করে।
এর আগে শুক্রবার জেলা আওয়ামী লীগের জরুরি সভায় আব্বাস আলীকে জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয় এবং স্থায়ী বহিষ্কারের জন্য কেন্দ্রে সুপারিশ পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া ১২ কাউন্সিলর তার প্রতি অনাস্থা এনে জেলা প্রশাসককে চিঠি দিয়েছেন।
বুধবার ভোরে রাজধানীর কাকরাইলের হোটেল রাজমণি ঈশা খাঁ থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। পরে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, মেয়র আব্বাসের বিরুদ্ধে মামলা হওয়ার পর থেকেই তাকে খোঁজা হচ্ছিল। ২৩ নভেম্বর থেকে তিনি আত্মগোপনে ছিলেন। ঢাকার বিভিন্ন হোটেলে ছিলেন তিনি। মঙ্গলবার তিনি হোটেল রাজমণি ঈশা খাঁয় অবস্থান নিলে র্যাবের গোয়েন্দারা জানতে পারেন। এরপর তাকে গ্রেফতার করা হয়। তিনি বলেন, তার কাছে পাসপোর্ট পাওয়া গেছে। তার দেশত্যাগের পরিকল্পনা ছিল।
