বৃহস্পতিবার, ২০ জানুয়ারি, ২০২২ ০০:০০ টা

গোষ্ঠীবিরোধ থেকে খুনোখুনি একজন নিহত, আহত ৫০

বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে যাচ্ছে মানুষ

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি

সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার বাঘাবাড়ী মোল্লাপাড়া গ্রামে পূর্ববিরোধের জেরে দুই পক্ষের সংঘর্ষে শরিফুল ইসলাম ইয়ামিন (৩৫) নামে একজন নিহত হয়েছেন। লাঠি-ফালার আঘাতে আহত হয়েছেন দুই পক্ষের অর্ধশতাধিক নারী-পুরুষ। তাদের বেড়া, ফরিদপুর ও শাহজাদপুর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

গতকাল সকালে রূপবাটি ইউনিয়নের মোল্লাপাড়া গ্রামে মোল্লা ও প্রামাণিক গোষ্ঠীর মধ্যে এ সংঘর্ষ ঘটে। এদিকে ইয়ামিন নিহতের খবর ছড়িয়ে পড়লে হামলা আতঙ্কে অনেক নারী-পুরুষ-শিশু আসবাবপত্র নিয়ে ঘরবাড়ি ছেড়ে অন্যত্র চলে যায়। ইয়ামিন মোল্লা গোষ্ঠীর ইউসুফ মোল্লার ছেলে। পুলিশ গিয়ে ২০ জনকে গ্রেফতার করে। স্থানীয়রা জানান, ওই গ্রামের মোল্লা গোষ্ঠীর আমিরুল মোল্লার সঙ্গে প্রামাণিক গোষ্ঠীর মধ্যে গত বছরের ২৭ ও ২৮ অক্টোবর সংঘর্ষ ঘটে। এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। এ অবস্থায় গতকাল সকাল ৮টায় নতুন করে সংঘর্ষ বাধে। সংঘর্ষ চলাকালে উভয় পক্ষের নারী-পুরুষ ও যুবকরা হাঁসুয়া, রামদা, লাঠি, ফালা, হলেঙ্গা, ঢাল ও সড়কি নিয়ে একে অন্যের ওপর হামলা চালায়। উভয় পক্ষে ব্যাপক ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, ইটপাটকেল নিক্ষেপ, বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। এতে বাঘাবাড়ী-চাটমোহর আঞ্চলিক সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। জানা গেছে, প্রতিপক্ষের ফালার আঘাতে ইয়ামিন আহত হন। তাকে বেড়া হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। নিহতের খবর ছড়িয়ে পড়লে দুই পক্ষের নারী-পুরুষরা বাড়ির আসবাবপত্র, ফ্রিজ, টেলিভিশন ও গরু-ছাগল নিয়ে অন্যত্র চলে যান। তারা বলেন, আবারও সংঘর্ষ ও লুটপাটের ভয়ে তারা এলাকা ছাড়ছেন। মোল্লা গোষ্ঠীর কামাল আহমেদ বাবু ও খলিল মোল্লা বলেন, ‘কোনো কারণ ছাড়াই প্রামাণিক গোষ্ঠীর লোকজন অতর্কিতে আমাদের বসতঘরে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর ও লুটপাট করেছে। বাধা দিলে উভয় পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপ ঘটে। প্রামাণিক গোষ্ঠীর ফালার আঘাতে আমাদের পক্ষের ইয়ামিন মারা যান এবং অন্তত ৩০ জন আহত হন।’

প্রামাণিক গোষ্ঠীর মিজানুর রহমান ও আবদুল লতিফ বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে মোল্লা গোষ্ঠীর আমিরুল মোল্লা ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী আমাদের ওপর নির্যাতন, হামলাসহ নারী নির্যাতন করে আসছে। সুবিচার না পাওয়ায় প্রতিবাদ করায় সকালে মোল্লা গোষ্ঠীর লোকজন আমাদের ওপর হামলা চালালে সংঘর্ষ বেধে যায়। এতে আমাদের পক্ষের অনন্ত ২০ জন আহত হয়েছেন।’

এ বিষয়ে শাহজাদপুর থানার ওসি শাহিদ মাহমুদ খান বলেন, ‘খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে লাঠিচার্জ করে উভয় পক্ষকে শান্ত করেছে। ২৪ জনকে আটক করা হয়েছে। লাশ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে।’

সন্ধ্যায় জানা গেছে, বর্তমানে পুরো গ্রাম থমথমে। পুরুষশূন্য।

সর্বশেষ খবর