বৃহস্পতিবার, ৩ মার্চ, ২০২২ ০০:০০ টা

যুদ্ধের প্রভাব নিয়ে উদ্বিগ্ন চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীরা

মুহাম্মদ সেলিম, চট্টগ্রাম

রাশিয়া ইউক্রেনের যুদ্ধের কারণে উদ্বিগ্ন চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীরা। গম, ভুট্টা, সূর্যমুখীর তেল রপ্তানিকারক এ দুই দেশের যুদ্ধের প্রভাব এরই মধ্যে পড়তে শুরু করেছে এসব আমদানি পণ্যে। এ ছাড়া জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির কারণে আমদানি-রপ্তানিতে আরও গুরুতর বিরূপ প্রভাবের শঙ্কায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি এবং খাতুনগঞ্জ ট্রেড অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, ‘যুদ্ধের প্রভাবে আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ছে হু হু করে।  তেলের দাম বৃদ্ধির প্রভাব পড়বে আমদানি-রপ্তানিসহ সব সেক্টরে। এ ছাড়া একের পর এক নিষেধাজ্ঞার প্রভাবও পড়বে সার্বিক অর্থনীতিতে। সামনে কঠিন পরিস্থিতি। তাই এখন থেকেই তা মোকাবিলার প্রস্তুতি নিতে হবে।’

দেশের বৃহত্তম পাইকারি বাজার চাক্তাই-খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ীদের সংগঠন ‘খাতুনগঞ্জ ট্রেড অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন’র সাধারণ সম্পাদক ছৈয়দ ছগির আহমেদ বলেন, ‘রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব অন্যান্য দেশের মতো এদেশেও পড়বে। কারণ যুদ্ধের প্রভাবে জ্বালানি তেলের দাম অস্বাভাবিক হারে বেড়ে গেছে। এর বিরূপ প্রভাব পড়বে আমদানি-রপ্তানিতে। এ ছাড়া পাল্টাপাল্টি নিষেধাজ্ঞার প্রভাবও  পেমেন্ট সিস্টেমেও কিছুটা জটিলতা তৈরি হবে।’ জানা যায়, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে এরই মধ্যে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ রাশিয়ার আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। আরও নিষেধাজ্ঞার শঙ্কা করা হচ্ছে। গম, ভুট্টা, সূর্যমুখীর তেলসহ নানান খাদ্যদ্রব্য আমদানি করে রাশিয়া ইউক্রেন থেকে। এদেশ থেকে রপ্তানি হয় তৈরি পোশাকও। এমন পরিস্থিতিতে আমদানি-রপ্তানি নিয়ে শঙ্কিত চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীরা। দেশের গমের মোট চাহিদার এক-তৃতীয়াংশ আসে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়া দুই দেশ রাশিয়া ইউক্রেন থেকে। যার মধ্যে চাহিদার ৭০ লাখ টনের মধ্যে ৩৫ লাখ টন গম আসে রাশিয়া থেকে। ভুট্টার চাহিদার ২০ শতাংশ আসে এ দুই দেশ থেকে। এ ছাড়া সূর্যমুখী তেলসহ কিছু খাদ্যদ্রব্য আমদানি হয় রাশিয়া থেকে। যুদ্ধের কারণে রাশিয়ার পরিবর্তে বিকল্প দেশ থেকে এসব পণ্য আমদানির চিন্তা করতে হচ্ছে ব্যবসায়ীদের। দেশের তৈরি পোশাক খাতের নতুন বাজার হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে রাশিয়াকে। গত অর্থবছরে রাশিয়ায় রপ্তানি হয়েছে ৬৬ কোটি ৫৩ লাখ মার্কিন ডলারের পণ্য। তার মধ্যে সবচেয়ে বেশিই রপ্তানি হয়েছে তৈরি পোশাক। তাই যুদ্ধের প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে তৈরি পোশাক খাতও। দুই দেশের যুদ্ধের কারণে পণ্যবাহী জাহাজগুলো এখন কৃষ্ণসাগর এড়িয়ে চলাচল করছে। এতে করে শিপমেন্ট বাধাগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। শিপমেন্ট বিলম্ব হওয়ার কারণে অনেক অর্ডারও বাতিল হতে পারে।

সর্বশেষ খবর