মঙ্গলবার, ১৭ মে, ২০২২ ০০:০০ টা

রাজধানীতে গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু আটক ৪

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর কদমতলীতে এক গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। পরিবারের অভিযোগের পর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তার স্বামী, শ্বশুর, শাশুড়িসহ চারজনকে আটক করেছে পুলিশ। ওই গৃহবধূর নাম রাবেয়া আক্তার (১৮)। গতকাল সকালে কদমতলীর শ্যামপুর হাইস্কুলের পাশে বাদশা মিয়ার বাড়ি থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। আটকরা হলেন- স্বামী খাইরুল ইসলাম, শ্বশুর হানিফ গাজী, শাশুড়ি হাসনারা বেগম ও ননদজামাই কাইয়ুম। খায়রুল ইসলাম রাবেয়াকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসেন। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়। ঢামেক পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ বাচ্চু মিয়া বলেন, ওই গৃহবধূর স্বামী জানিয়েছেন বুকে ব্যথার কারণে অচেতন হলে তাকে হাসপাতালে নিয়ে এলে চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর মৃত ঘোষণা করেন। সংবাদ পেয়ে মেয়ের পরিবার এসে অভিযোগ করায় স্বামীসহ তিনজনকে আটক করে থানায় সোপর্দ করা হয়েছে। ঢামেকে ওই গৃহবধূর চাচা জহির জানান, এক বছর আগে প্রেমের পর বিয়ে করে রাবেয়া আর খায়রুল। পরে পারিবারিকভাবে বিষয়টির আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করা হয়। বিয়ের কিছুদিন পর থেকে উভয় পরিবারের মধ্যে ঝগড়া বা দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয়। দুই পরিবারের মধ্যে কথাবার্তা বন্ধ হয়ে যায়। শুধু কথোপকথন বন্ধ নয়, রাবেয়া অসুস্থ হলেও কোনো সংবাদও দেওয়া হতো না। গতকাল অন্যদের মাধ্যমে সংবাদ শুনে হাসপাতালে এসে লাশ দেখতে পান তারা। রাবেয়ার স্বামী ও তার পরিবার তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে।

জানা গেছে, রাবেয়া বরিশালের হিজলা উপজেলার কোলচর গ্রামের শহীদ সরদারের মেয়ে। তার স্বামীর গ্রামের বাড়ি পটুয়াখালী। স্বামী একটি এমব্রয়ডারি ফ্যাক্টরিতে চাকরি করেন। দুই ভাই, এক বোনের মধ্যে রাবেয়া বড়। এদিকে রাবেয়ার বাবা শহীদ সরদার বলেন, ‘আমার মেয়ে এবং জামাই আমাদের সঙ্গেই থাকত। কিন্তু ঈদে সামান্য বিষয় নিয়ে মনোমালিন্য হলে তারা আলাদা বাসায় থাকতে শুরু করে। আজ (সোমবার) সকাল ৬টার দিকে আমি এক প্রতিবেশীর মাধ্যমে খবর পাই মেয়ে অসুস্থ। পরে তাদের বাসায় গিয়ে দেখি মেয়ে অচেতন অবস্থায় পড়ে আছে। মেয়ের শ্বশুরবাড়ির লোকজন বলেন কিছু হয়নি। এ কথা শুনে আমি চলে আসি। পরে সকাল ১০টার দিকে অন্য আরেকজনের মাধ্যমে জানতে পারি আমার মেয়ে মারা গেছে। কিন্তু শ্বশুরবাড়ির লোকজন আমাদের জানায়নি। আমার মেয়ের গলার নিচে দাগ রয়েছে। আমরা ধারণা করছি তারা আমার মেয়েকে গলা টিপে হত্যা করেছে।’ কদমতলী থানার এসআই সোহেল রানা জানান, রাবেয়ার পরিবারের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে স্বামী, শ্বশুর, শাশুড়ি ও ননদজামাইকে আটক করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর