শনিবার, ২ জুলাই, ২০২২ ০০:০০ টা
প্রকৃতি

বর্ষায় সেজেছে পাহাড়

ফাতেমা জান্নাত মুমু, রাঙামাটি

বর্ষায় সেজেছে পাহাড়

পাহাড় মানেই নীল আকাশে শুভ্র সাদা মেঘের ভেলা। আর এ পাহাড়ের বুক চিরে আছড়ে পড়ছে অবিরাম জলধারা। এমন দৃশ্য কেবলই বর্ষায় দেখা মেলে তিন পার্বত্য জেলা- রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানে। রূপ-বৈচিত্র্যের এক অনন্য ভাণ্ডার যেন এ পাহাড়। নয়নাভিরাম দৃশ্যপট। আছে শত শত ঝরনা, গিরিখাদ, আর আঁকাবাঁকা নদী। এখানে প্রকৃতি যেন উজাড় করে দিয়েছে নিজেকে। তাই গ্রীষ্ম, বর্ষা, শরৎ, হেমন্ত, শীত, কিংবা বসন্তে এ পাহাড়ে রূপের জৌলুস থাকে সারা বছরই। তবে পার্থক্য কেবল ঋতুর সাজে। বর্ষায় পাহাড় যেন থাকে পূর্ণ যৌবনে। একটু বৃষ্টি নামলেই নীল আকাশের মেঘের ভেলায় ভাসতে থাকে পাহাড়। সারা দিন চলে নীল, সাদা ও সবুজের লুকোচুরি খেলা। সন্ধ্যার আকাশে গোধূলির রং ছড়াতেই ঝাঁক বেঁধে আসে বনের পাখিরা। তাদের খুনসুটি দেখে মুগ্ধ দর্শনার্থীরা। অপরূপ সৌন্দর্যে ভরপুর সমৃদ্ধ রাঙামাটির পাহাড় পর্যটকদের কাছে অনেকটা রূপকথার গল্পের মতোই। তাই তো এখানে এসে প্রকৃতির প্রেমে পড়েনি এমন মানুষ খুব কমই আছে। রাঙামাটি পর্যটন সূত্রে জানা যায়, বর্ষার শুরু থেকেই রাঙামাটিতে যাত্রা শুরু হয়েছে পর্যটকদের। এখনো আসছে হাজার হাজার পর্যটক। জেলার আশপাশের পর্যটক ছাড়াও আসছে বিদেশিরাও। পরিবার-আত্মীয়স্বজন, বন্ধু-বান্ধব নিয়ে সবাই ছুটছে হ্রদ-পাহাড়ের দেশে অর্থাৎ রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানে। এমনিতেই পাহাড়ে রয়েছে পর্যটকদের আনন্দ ও মনোরঞ্জন জোগানোর অসংখ্য নৈঃসর্গিক পর্যটক কেন্দ্র। শুধু রাঙামাটিতেই আছে-পর্যটন কমপ্লেক্সের ঝুলন্ত সেতু, ডিসি বাংলো, পলওয়েল পার্ক, পেদাটিংটিং, সুবলং ঝরনা, রাঙামাটি পার্ক, সুখী নীলগঞ্জ ও আসামবস্তি-কাপ্তাই সড়ক। এ ছাড়া রাঙামাটির কাপ্তাই হ্রদের নীল জলে নৌ ভ্রমণের মতো রোমাঞ্চকর পরিবেশ তো রয়েছেই। এসব দেখে পর্যটকদের আনন্দ-উল্লাসের ফোয়ারা বেড়েছে কয়েকগুণ। পাহাড় এখন পর্যটক উৎসবে মেতেছে। উৎসবের আমেজ ছাড়িয়েছে পাহাড়জুড়ে।

রাঙামাটি পর্যটন কমপ্লেক্সের ব্যবস্থাপক সৃজন বিকাশ বড়ুয়া বলেন, রাঙামাটিতে পর্যটন মৌসুমের আমেজ বইছে। শান্ত পরিবেশ। প্রকৃতিও সেজেছে আপন রূপে। দেশি-বিদেশি পর্যটকদের জন্য পাহাড়ে ঘুরার এটাই উত্তম সময়। অবকাশ কাটানোর জন্য দূরদূরান্ত থেকে আসছে পর্যটকরা। তাই রাজস্ব আয়ও বেড়েছে কয়েকগুণ। পর্যটকদের নিরাপত্তার জন্য আছে পর্যাপ্ত ট্যুরিস্ট পুলিশ।

এ ছাড়া দেশের যে কোনো স্থান থেকে রাঙামাটিতে আসার জন্য সড়ক যোগাযোগব্যবস্থা চালু রয়েছে। বিশেষ করে ঢাকা থেকে রাঙামাটি যেতে সরাসরি চালু রয়েছে সৌদিয়া, ইউনিক, বিআরটিসি, ডলফিন, এস. আলমসহ বিলাসবহুল বাস সার্ভিস। রয়েছে এসি বাসের সুবিধা। ঢাকার সায়েদাবাদ, কমলাপুর, ফকিরাপুল, মতিঝিল, কলাবাগান থেকে প্রতিদিন এমনকি রাতেও ছাড়ে বাসগুলো। চট্টগ্রাম থেকে যাওয়া যায় খুব সহজে। চট্টগ্রাম থেকে প্রায় ৭৭ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত পর্যটন শহর রাঙামাটি। চট্টগ্রাম শহর থেকে রাঙামাটি আসতে সময় লাগবে মাত্র দুই থেকে আড়াই ঘণ্টা। চট্টগ্রামের অক্সিজেন বাস স্টেশন। সেখান থেকে ছাড়ে পাহাড়িকা, সৌদিয়া, এস. আলম। ভাড়াও কম।

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর