শনিবার, ২৭ আগস্ট, ২০২২ ০০:০০ টা

সিলেটে প্রবাসী বাবা, ছেলে ও মেয়ের মৃত্যু অক্সিজেন স্বল্পতায় : পুলিশ সুপার

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট

সিলেটের ওসমানীনগরে তিন প্রবাসীর অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনার মেডিকেল প্রতিবেদন পুলিশের হাতে এসে পৌঁছেছে। গত বৃহস্পতিবার এ রিপোর্ট পুলিশের কাছে আসে। মেডিকেল বোর্ডের দেওয়া প্রতিবেদনের তথ্য পর্যালোচনা করে মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন সিলেটের বিদায়ী পুলিশ সুপার (পদোন্নতিপ্রাপ্ত অতিরিক্ত ডিআইজি) মুহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন পিপিএম। যুক্তরাজ্য প্রবাসী ওই পরিবারের বাবা, ছেলে ও মেয়ে ‘অক্সিজেন-স্বল্পতায়’ মারা গেছেন বলে প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। এর আগে ২৩ আগস্ট নিজ কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলনে ফরিদ উদ্দিন জানিয়েছিলেন, প্রাথমিক তদন্তে তিন প্রবাসীর মৃত্যু জেনারেটরের ধোঁয়া থেকে হয়েছে। তবে সে সময় চিকিৎসকদের প্রতিবেদন না আসায় সেটি নিশ্চিত করতে পারেননি তিনি।

বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলন করে পুলিশ সুপার জানান, নিহত তিনজনের ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন, ভিসেরা প্রতিবেদন, ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হওয়া ২০টি আলামতের রাসায়নিক বিশ্লেষণ ও বিভিন্ন প্যাথলজিক্যাল প্রতিবেদন পাওয়ার পর বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দল পর্যালোচনা করেছেন। পরে তারা একটি মেডিকেল বোর্ডের মাধ্যমে প্রতিবেদন দিয়েছেন। সেটি গত বৃহস্পতিবার পুলিশের কাছে দেওয়া হয়েছে। এ প্রতিবেদন অনুযায়ী- এ তিন প্রবাসীর মৃত্যু কোনো বিষক্রিয়ায় হয়নি। কোনো আঘাতজনিত কারণেও মৃত্যু হয়নি। বরং জেনারেটরের ধোঁয়া থেকে দম বন্ধ হয়েই তাদের মৃত্যু হয়েছে- এটা নিশ্চিত।

প্রসঙ্গত, ১২ জুলাই ওসমানীনগর উপজেলার দয়ামীর ইউনিয়নের ধিরারাই (খাতুপুর) গ্রামের আবদুল জব্বারের ছেলে যুক্তরাজ্য প্রবাসী রফিকুল ইসলাম পরিবারের সদস্যদের নিয়ে দেশে আসেন। ঢাকায় এক সপ্তাহ থেকে বড় ছেলে সাদিকুলের চিকিৎসা শেষে ১৮ জুলাই তাজপুর স্কুল রোডে চারতলা একটি বাসার দোতলায় ভাড়াটিয়া হিসেবে উঠেন পরিবারের পাঁচ সদস্যকে নিয়ে। ২৫ জুলাই রাতের খাবার খেয়ে স্ত্রী, মেয়ে ও ছেলেদের নিয়ে বাসার একটি কক্ষে রফিকুল এবং অপর দুটি কক্ষে বেড়াতে আসা তার শ্বশুর, শাশুড়ি, শ্যালক, শ্যালকের স্ত্রী ও শ্যালকের মেয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। পরদিন সকালে বাসার অন্যান্য কক্ষে থাকা আত্মীয়রা ডাকাডাকি করে রফিকুলদের কোনো সাড়া-শব্দ না পেয়ে ৯৯৯ নম্বরে ফোন দেন শ্যালক দিলওয়ার। খবর পেয়ে দুপুর ১২টার দিকে ওসমানীনগর থানা পুলিশের একটি দল ওই বাসায় গিয়ে দরজা ভেঙে অচেতন অবস্থায় পাঁচ যুক্তরাজ্য প্রবাসীকে উদ্ধার করে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসকরা রফিকুল ইসলাম ও তার ছোট ছেলে মাইকুল ইসলামকে মৃত ঘোষণা করেন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় স্ত্রী হোসনে আরা, বড় ছেলে সাদিবুল ইসলাম ও একমাত্র মেয়ে সামিরা ইসলামকে হাসপাতালের আইসিইউ বিভাগে ভর্তি করা হয়। রফিকুলের স্ত্রী হোসনে আরা ও ছেলে সাদিকুল সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরলেও দীর্ঘ ১১ দিন সংজ্ঞাহীন অবস্থায় লাইফ সাপোর্টে থাকা সামিরা ৫ আগস্ট শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

সর্বশেষ খবর