শুক্রবার, ২ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

বেটউইনারে চার মাসে পাচার ৪ কোটি টাকা

নিজস্ব প্রতিবেদক

অনলাইন জুয়ার সাইট বেটউইনারের মাধ্যমে গত চার মাসে ৪ কোটি টাকার বেশি পাচার হয়েছে। এ অনলাইন পরিচালনাকারী তিন বাংলাদেশি এজেন্টকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। তারা হলেন- আবু বক্কর সিদ্দিক (৩০), তার ভাই আবদুল্লাহ আল আউয়াল (২৬) ও তোরাফ হোসেন (৩৭)। এর মধ্যে তোরাফ হোসেন হলেন মোবাইল ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠান ‘নগদ’-এর কর্মকর্তা। সিআইডি জানায়, জুয়ার ওই ওয়েবসাইটের সদর দফতর সাইপ্রাস। কিন্তু সেটি রাশিয়া থেকে পরিচালিত হতো। এ সাইটে দেশের গ্রামাঞ্চলের অল্পশিক্ষিত-অর্ধশিক্ষিত মানুষ পর্যন্ত জুয়া খেলছে। গতকাল সকালে রাজধানীর মালিবাগে সিআইডি কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব জানান সংস্থার সাইবার ইন্টেলিজেন্স অ্যান্ড রিস্ক ম্যানেজমেন্ট ইউনিটের বিশেষ পুলিশ সুপার রেজাউল মাসুদ। তিনি বলেন, সাইবার পুলিশ সেন্টারের নিয়মিত মনিটরিংকালে ‘বেটউইনারডটকম’ বেটিং সাইটটি নজরে আসে। যেখানে অনলাইনে বেটিং করা হয় বা জুয়া খেলা হয়। এটা নিয়ে ছায়া তদন্ত শুরু হয়। তদন্ত শেষে সাইটটি পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত তিনজনকে শনাক্ত করে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলা থেকে গ্রেফতার করা হয়। একজন জুয়াড়ি মোবাইল নম্বর কিংবা ইমেইলের মাধ্যমে এ বেটিং সাইটে বা অ্যাপসে অ্যাকাউন্ট ওপেন করেন। অ্যাকাউন্টের বিপরীতে একটি ই-ওয়ালেট তৈরি করা হয়, যাকে জুয়াড়িরা ইউএসডিটি বলেন। শুরুতে এর ব্যালান্স শূন্য থাকে। ওয়ালেটে ব্যালান্স যোগ করার জন্য অনেক মাধ্যম রয়েছে, এর মধ্যে ‘বিকাশ’, ‘নগদ’, ‘রকেট’ ও ‘উপায়’ অন্যতম। এর যে-কোনো একটিতে এজেন্ট নম্বর দেখিয়ে ন্যূনতম ৫০০ টাকা দিলে কিছুক্ষণের মধ্যে ই-ওয়ালেট বা ইউএসডিটি ব্যালান্স যুক্ত হয়ে যায়। এ টাকা কিংবা ব্যালান্স দিয়ে তিনি পরবর্তীতে জুয়া খেলতে পারেন। আবু বক্কর সিদ্দিক ও আবদুল্লাহ আল আউয়াল বাহরাইনে দীর্ঘদিন ছিলেন। সেখানে তারা বেটউইনারে অনলাইন জুয়া পরিচালনার কার্যক্রম শিখে ফেলেন। এরপর মে-তে দেশে এসে এ কাজ শুরু করেন। তবে ধারণা করা হচ্ছে, বাংলাদেশে এটি অনেক আগেই শুরু হয়েছে। ২০১৬ সালে বেটউইনারের যাত্রা। ২০১৭ সাল থেকে তারা সারা বিশ্বে অনলাইন জুয়া পরিচালনা করে আসছে। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়- মোবাইল ফিন্যানশিয়াল সার্ভিসের এজেন্টরা জমাকৃত টাকা তুলে ওই টাকা ‘বাইন্যান্স’ নামক মানি এক্সচেঞ্জ অ্যাপের মাধ্যমে মার্কিন ডলারে কনভার্ট করেন। পরে বাইন্যান্সের মাধ্যমে এ টাকা বিভিন্ন দেশে পাচার হয়। অভিযানে গ্রেফতার তিনজনের কাছ থেকে ছয়টি মোবাইল ফোন, চারটি এজেন্ট সিম, দুটি মার্চেন্ট সিম, নগদের একটি ডিএসও সিম, দুটি পারসোনাল সিমসহ মোট ১২টি সিম ও একটি ল্যাপটপ জব্দ করা হয়েছে।

সর্বশেষ খবর