সোমবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

এক বছরে বাল্যবিয়ে বেড়েছে ১০ শতাংশ

ইউএনএফপিএর প্রতিবেদন

নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশে ১৫ থেকে ১৯ বছর বয়সী মেয়েদের বিয়ের হার ২০২১ সালের আগের বছরের তুলনায় ১০ শতাংশ বেড়েছে। কভিডের প্রাদুর্ভাবে ওই দুই বছর এই বয়সী প্রায় ২৭ শতাংশ মেয়ের বিয়ে হয়েছে। গতকাল বাল্যবিয়ের ওপর এক জরিপ প্রতিবেদন প্রকাশ করে এ তথ্য ানিয়েছে জাতিসংঘের জনসংখ্যা তহবিল (ইউএনএফপিএ)। রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ‘কভিড-১৯ মহামারির সময়ে বাল্যবিয়ে এবং শহরের বস্তি এলাকায় মাসিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা’ শিরোনামে দুটি জরিপ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, করোনা মহামারির দুই বছরে ১৫-১৯ বছর বয়সী যে ২৭ শতাংশ মেয়ের বিয়ে হয়েছে তাদের মধ্যে প্রথম বছর (২০২০) বিয়ে হয়েছে প্রায় ২৪ শতাংশের ও দ্বিতীয় বছর (২০২১) বিয়ে হয়েছে প্রায় ৩৪ শতাংশের। এদিকে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) ও ইউনিসেফের মাল্টিপল ইন্ডিকেটর ক্লাস্টার সার্ভে (মিকস?) ২০১৯ অনুসারে, একই বয়সী মেয়েদের বিয়ের হার প্রায় ৩৩ শতাংশ। আর ১৮ বছর বয়সের নিচে এ হার ৫১ শতাংশ।

ইউএনএফপি-এর জরিপ প্রতিবেদনে বলা হয়, কভিডের কারণে ২০২০ সালে বাল্যবিয়ের হার কম হয়ে থাকতে পারে। তবে জরিপে অংশগ্রহণকারী বেশির ভাগের মত ছিল, কভিডকালে বাল্যবিয়ে বেড়েছে। এই সময়ে বুলিংসহ নানা ধরনের সহিংসতা বেড়ে যাওয়ায় মেয়েরা বাল্যবিয়ের শিকার হওয়ার ঝুঁকি বোধ করেছে। বাল্যবিয়েতে মহামারি ও লকডাউনের প্রভাব সম্পর্কে জানতে আরও জরিপ ও গবেষণার  প্রয়োজনীয়তার কথা বলা হয়েছে প্রতিবেদনে। ইউএনএফপি-এর সহায়তায় জরিপটি পরিচালনা করে বেসরকারি সংস্থা মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন (এমজেএফ)। ২০২১ সালের ডিসেম্বর ও চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে ২০টি জেলায় ২ হাজার ৮২০ জন মেয়ের ওপর জরিপ করা হয়। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, জেলায় জেলায় বাল্যবিয়ের হারের ব্যাপক তারতম্য রয়েছে। যেমন- রাঙামাটিতে বাল্যবিয়ে ৪ শতাংশ ও লক্ষ্মীপুরে ৪০ শতাংশ। জরিপের সময় দেখা গেছে, বিবাহিত ওই মেয়েদের ১৫ শতাংশ ছিল অন্তঃসত্ত্বা। বিবাহিত মেয়েদের মাত্র ২৪ শতাংশ স্কুলে ফিরেছে। মাসিক বিষয়ে ঢাকার উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনভুক্ত এলাকায় ১ হাজার কিশোরী ও নারীকে অন্তর্ভুক্ত করে পরিচালনা করা হয় জরিপ। এ বিষয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, এখনো ৪২ শতাংশ মেয়ে/নারী মাসিকের সময় কাপড় ব্যবহার করে। মাসিকের বিষয়ে তাদের মধ্যে নানা কুসংস্কার কাজ করে। কোনো কোনো মেয়ে/নারী বলেছেন, বেশির ভাগ সময় টয়লেটে ভিড় থাকে বলে মাসিকের জন্য ব্যবহৃত কাপড় ভালোভাবে পরিষ্কার করতে পারেন না তারা। ধোয়ার জন্য তারা রাত বা ভোরের সময়কে বেছে নেন। স্যানিটারি প্যাড ব্যবহারকারী মেয়ে/নারীদের ৬৮ শতাংশ নিজে প্যাড কিনতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন না। মাসিকে ব্যবহৃত কাপড় ধোয়ার পর ৮০ শতাংশ মেয়ে/নারীই বাড়ির ভিতর গোপন জায়গায় শুকাতে দেন। স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে মাসিক ব্যবস্থাপনার জন্য মেয়েদের আলাদা টয়লেট থাকা, কোথায়, কীভাবে ব্যবহৃত প্যাড ফেলতে হবে, তা শেখানোসহ সচেতনতা সৃষ্টির পরামর্শ দেওয়া হয় প্রতিবেদনে।

সর্বশেষ খবর