সিনিয়র সহকারী সচিব থেকে উপসচিব পদে পদোন্নতি পেয়েছেন ২৭৯ কর্মকর্তা। গতকাল রাতে ২৫৯ জনের পদোন্নতি দিয়ে দুটি আলাদা প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। এর একটিতে ২৪৯ কর্মকর্তাকে উপসচিব পদে পদোন্নতি দিয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়। আর বিদেশে বিভিন্ন মিশনে কর্মরত ১০ জনের জন্য আলাদা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, তারা উন্নীত পদে যোগদানের তারিখ থেকে উপসচিবের বেতন-ভাতা পাবেন। বাকি ২০ জন লিয়েন/শিক্ষা ছুটিতে থাকায় তাদের প্রজ্ঞাপন জারি হয়নি। তাদের লিয়েন ও ছুটি শেষ হলেই প্রজ্ঞাপন জারি হবে। পদোন্নতি পাওয়া কর্মকর্তাদের যোগদানপত্র ই-মেইলে ([email protected]) পাঠাতে বলা হয়েছে।
জানা গেছে, পদোন্নতি পাওয়া ২৫৯ কর্মকর্তার ১৯৪ জন বিসিএস প্রশাসন ক্যাডার এবং ৬৫ জন অন্যান্য ক্যাডারের। তবে সরকারের মেয়াদের শেষ সময়ে এসেও সরকার পদোন্নতি বঞ্চনার অভিযোগ থেকে মুক্ত হতে পারেনি। গতকাল রাতেই পদোন্নতিবঞ্চিত কয়েকজন কর্মকর্তা বাংলাদেশ প্রতিদিনের কাছে তাদের ক্ষোভ-অসন্তোষের কথা তুলে ধরেন। তাদের দাবি, দলমত নিরপেক্ষ মেধাবী কর্মকর্তা হওয়া সত্ত্বেও এবারও তাদের পদোন্নতি দেওয়া হয়নি। এ ছাড়া নতুন বিবেচনায় আসা ২৮তম ব্যাচ থেকেও বাদ পড়েছেন কমবেশি ৩০ জন। উপসচিব পদে অনুমোদিত পদের সংখ্যা ১০০৬।
বর্তমানে এ পদে কর্মরত আছেন ১৬৩৪ কর্মকর্তা। এ পরিস্থিতিতে গতকাল রাতে ২৭৯ জনকে উপসচিব করা হয়। এর ফলে এ পদে কর্মকর্তার সংখ্যা দাঁড়াল ১৯১৩-এ। হিসাব অনুযায়ী অনুমোদিত পদের চেয়ে অতিরিক্ত কর্মকর্তার সংখ্যা দাঁড়াল ৯ শতাধিক। এ অবস্থায় পদ না থাকায় পদোন্নতি পাওয়া অধিকাংশ কর্মকর্তাকে আগের পদেই (ইন সিটু) কাজ করতে হবে অথবা ওএসডি থাকতে হবে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, রেওয়াজ অনুযায়ী পদোন্নতিপ্রাপ্তদের ইতোমধ্যেই ওএসডি (বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা) করা হয়েছে। এর মধ্যে বিসিএস ২১ ব্যাচের দুজন, ২২ ব্যাচের দুজন, ২৪তম ব্যাচের একজন, ২৫তম ব্যাচের সাতজন, ২৭তম ব্যাচের ২০ জন। নিয়মিত ব্যাচ হিসেবে ২৮ ব্যাচের ১৬২ কর্মকর্তা রয়েছেন।
এ ছাড়া প্রশাসন ক্যাডারের বাইরে থেকে ৬৫ জনকে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে। তবে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্র বলেছে, অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে সুন্দর এবং সব ধরনের রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত পদোন্নতি হয়েছে। যারা পদোন্নতি পাননি তাদের বিভাগীয় মামলা, এসিআরে নম্বর কমসহ নানা ধরনের সমস্যা রয়েছে। এ কারণে কেউ কেউ পদোন্নতি পাননি। তবে যোগ্য সবাইকে এবার পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অপর একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা দাবি করেন, সবাইকে পদোন্নতি দেওয়ার সুযোগ নেই। পদোন্নতি কোনো অধিকার নয়, এটি অর্জন করতে হয়। যারা পদোন্নতি পাননি তাদের প্রত্যেকের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কারণ আছে। তা সত্ত্বেও সত্যিই যোগ্য-দক্ষদের কেউ যদি বাদ পড়ে থাকেন সেটি সরকার বিবেচনা করতে পারে।
‘সরকারের উপসচিব, যুগ্ম-সচিব, অতিরিক্ত সচিব ও সচিব পদে পদোন্নতি বিধিমালা-২০০২’-এ বলা হয়েছে, উপসচিব পদে পদোন্নতির ক্ষেত্রে ৭০ শতাংশ প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের ও ৩০ শতাংশ অন্যান্য ক্যাডারের উপসচিব পদে কর্মরতদের বিবেচনায় নিতে হবে।