বুধবার, ১৬ নভেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

ফুটবল বিশ্বকাপের আমেজে বাংলাদেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক

ফুটবল বিশ্বকাপের আমেজে বাংলাদেশ

বিশ্বকাপ এলেই ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা সমর্থনে ভাগ হয় মানুষ। জয়-পরাজয় নিয়ে উৎসবে মাতেন সমর্থকরা। রাজধানীর স্বামীবাগে কে এম দাস লেনের দেয়ালজুড়ে প্রিয় খেলোয়াড়দের চিত্র -রোহেত রাজীব

দরজায় কড়া নাড়ছে কাতারে শুরু হতে যাওয়া ফিফা ওয়ার্ল্ড কাপ-২০২২। বিশ্বকাপ ফুটবলের উত্তেজনার ঢেউ বাংলাদেশেও আছড়ে পড়ছে। এরই মধ্যে ঢাকার বাসাবাড়ির ছাদ ও বারান্দাগুলো বিশ্বকাপের ফেভারিট দলগুলোর রঙিন সব পতাকায় ছেয়ে গেছে। বেশির ভাগই ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনার পতাকা। সংখ্যায় কম হলেও জার্মানি, ফ্রান্স ও ইতালির পতাকাও চোখে পড়ে। শুধু পতাকাই নয়, বিক্রি বেড়েছে জার্সিরও। বিশ্বকাপকে সামনে রেখে প্রিয় দলের জার্সি কিনতে ফুটপাত থেকে শুরু করে বিভিন্ন বিপণিবিতান ও ব্র্যান্ডের দোকানগুলোতে বেড়েছে ভিড়। প্রিয় দলের খেলা উপভোগ করতে ইলেকট্রনিক্স পণ্যের দোকানগুলোতেও বড় বড় টিভি বিক্রির ধুম পড়েছে। রাজধানীর বিভিন্ন পাড়া-মহল্লার ছাদ ও বাগান এখন ফুটবল বিশ্বকাপে অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন দলের পতাকার দখলে। ছোট-বড় নানা আকৃতির এবং নানা রঙের পতাকায় ছড়িয়েছে ফুটবল বিশ্বকাপের আমেজ। কে কার চেয়ে কত বড় পতাকা লাগাবে তা নিয়ে চলছে প্রতিযোগিতা। বিক্রেতার কাছে কাক্সিক্ষত মাপের পতাকা না পেয়ে কেউ কেউ কাপড় কিনে অর্ডার দিয়েও পতাকা তৈরি করছেন। তবে পতাকা টাঙানোর বিষয়ে আগের চেয়ে মানুষের মধ্যে সচেতনতা কিছুটা বেড়েছে। তারা যে দেশের পতাকাই টাঙান না কেন অনেকেই সেই পতাকার ওপরে উত্তোলিত রেখেছেন বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা। ফুটবল বিশ্বকাপের আমেজ পুরান ঢাকার স্বামীবাগ এলাকাতেও। সেখানে এরই মধ্যে দেয়ালে দেয়ালে ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার সমর্থকরা চাঁদা তুলে ওয়াল পেন্টিংয়ে প্রিয় দলের খেলোয়াড় ও পতাকার রঙিন ছবি ফুটিয়ে তুলছেন। জানা যায়, তারা প্রজেক্টরের মাধ্যমে জায়ান্ট স্ক্রিনে খেলা উপভোগ করবেন। এরই মধ্যে রাজধানীতে বিভিন্ন ছোট ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা মৌসুমি ব্যবসা হিসেবে পতাকা বিক্রি শুরু করছেন। তাদেরই একজন মিরপুর-১০ নম্বর এলাকার মোহাম্মদ মিলন মিয়া। বাংলাদেশ প্রতিদিনকে তিনি বলেন, এক মাস ধরে আমি বিশ্বকাপ ফুটবলের পতাকা বিক্রি করছি। এর মধ্যে ৬ ফুট সাইজের একটি পতাকার দাম ২৫০ টাকা। আর পাঁচ ফুট সাইজের পতাকা ২০০ টাকা, তিন ফুটের পতাকা দেড় শ টাকা। তিনি জানান, সবচেয়ে বেশি কাটতি ব্রাজিল ও আর্জেটিনার পতাকার। তিনি প্রতিদিন দুই থেকে আড়াই হাজার টাকার পতাকা বিক্রি করেন। এতে তার ৮০০ টাকা লাভ হয়। তিনি আরও জানান, ছোট পতাকার চেয়ে বড় সাইজের পতাকার চাহিদা ও বিক্রি বেশি। আর ছোট শিশুদের অভিভাবকরা লাঠিসহ ১০ টাকা দামের ছোট পতাকা কিনে দিচ্ছেন। রাজধানীর বিভিন্ন ব্র্যান্ডের দোকানে গিয়ে জানা যায়, ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনা দলের জার্সির চাহিদা বেশি। এসব জার্সির দাম ৭০০ টাকার ওপর। মিরপুর দুই নম্বরের সারা লাইফস্টাইল লিমিটেডের  শোরুমে ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনার জার্সি বিক্রি হচ্ছে ৭২০ টাকায়। এখানে আসা কলেজ শিক্ষার্থী রুবেল হাসান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, আমি প্রিয় দল ব্রাজিলের জার্সি কিনতে এসেছি। খেলা শুরু হতে আর বেশি দেরি নেই। প্রতিবারই বিশ্বকাপে প্রিয় দলের জার্সি পরে খেলা উপভোগ করি। এ ছাড়াও রাজধানীর স্পোর্টস শোরুমগুলোতে এখন বিভিন্ন দলের জার্সির চাহিদা তুঙ্গে। ক্ষেত্রবিশেষে সাধারণ জার্সি ৬০০ থেকে ৭৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ক্রেতাদের অভিযোগ : গতবারের চেয়ে এবার জার্সির দাম দুই থেকে তিনগুণ বেশি। বিশ্বকাপ উপলক্ষে রাজধানীর ইলেকট্রনিক্স দোকানগুলোয় বিভিন্ন পণ্য ক্রয়ে বিশেষ ছাড় ও অফার দেওয়া হচ্ছে। বিশেষ করে এলইডি টিভি ক্রয়ে বড় ধরনের ছাড় দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়াও পণ্য ক্রয়ে বিনামূল্যে সাউন্ড বক্স, বিভিন্ন ভাউচার, এক্সটা ওয়ারেন্টি কার্ডসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হচ্ছে।

সর্বশেষ খবর