বুধবার, ১৬ নভেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা
হাই কোর্টের মন্তব্য

পিরোজপুরের পিপির আচরণ রাষ্ট্রের জন্য কলঙ্ক

নিজস্ব প্রতিবেদক

পিরোজপুরের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আবু জাফর মো. নোমানকে হুমকি ও তার সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণের ঘটনায় পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) খান মো. আলাউদ্দিনকে কঠোরভাবে ভর্ৎসনা করেছেন হাই কোর্ট। আদালত বলেছেন, পিরোজপুরের পিপি একজন বিচারকের সঙ্গে যে আচরণ করেছেন তা রাষ্ট্রের জন্য কলঙ্ক। বিচার বিভাগের জন্য কলঙ্ক। এ ধরনের আচরণ মেনে নেওয়া যায় না। গতকাল বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের সমন্বয়ে গঠিত হাই কোর্ট বেঞ্চ এ মন্তব্য করেন। এর আগে আদালতের তলবে হাজির হয়ে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করেন পিরোজপুরের পিপি খান মো. আলাউদ্দিন।

আদালতে পিপির পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ফিদা এম কামাল,           সুপ্রিম কোর্ট বার সভাপতি অ্যাডভোকেট মোমতাজ উদ্দিন ফকির, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সাঈদ আহমেদ রাজা, সুপ্রিম কোর্ট বার সম্পাদক আবদুন নূর দুলাল, অ্যাডভোকেট নাহিদ সুলতানা যুথি, অ্যাডভোকেট রবিউল আলম বুদু ও অ্যাডভোকেট আবুল হোসেন। আদালত পিরোজপুরের পিপিকে উদ্দেশ করে বলেন, আপনি কোনো সাধারণ আইনজীবী নন। আপনি পিরোজপুরের পিপি, আইনজীবী নেতা। আপনারা যদি বিচারককে, আদালতকে সম্মান না করেন তাহলে তো সাধারণ মানুষ সম্মান করবে না। আর যদি আদালতের প্রতি, বিচার বিভাগের প্রতি মানুষের আস্থা উঠে যায়, তাহলে তো কেউ বাঁচবেন না। আমরা যদি আপনার আচরণ অ্যালাউ করি তাহলে সাধারণ মানুষের মাঝে কী ম্যাসেজ যাবে? বিচারকের সঙ্গে আপনার এই আচরণের কারণে যে ডেমেজ হয়েছে, তার খেসারত দিতে হবে। আপনার আচরণের কথা গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। এতে বিচার বিভাগের অনেক ক্ষতি হয়ে গেছে। আপনারও তো অনেক ক্ষতি হয়ে গেছে। এটা তো আপনার জীবনের বড় দুর্ঘটনা। আদালত বলেন, আদালত শক্তি প্রদর্শনের জায়গা নয়। এখানে যত বিনয়ী হবেন তত বড় হতে পারবেন। এখন যদি আপনাকে আমরা ছয় মাসের জন্য আইন পেশা থেকে বিরত থাকার আদেশ দেই তখন আপনার কী হবে? উপস্থিত সিনিয়র আইনজীবীরা আদালতকে বলেন, আমরা তার পক্ষ হয়ে নিঃশর্ত ক্ষমা চাচ্ছি। ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা আর ঘটবে না। এ পর্যায়ে আদালত পিপিকে ডায়াসের সামনে ডাকেন। তখন পিপি বলেন, আমি নিঃশর্ত ক্ষমা চাচ্ছি। ভবিষ্যতে আর এ ধরনের আচরণ করব না। পরে আদালত তাকে সতর্ক করে ক্ষমা করে দেন।

 

সর্বশেষ খবর