মাদারীপুর সদর উপজেলার ঝিকরহাটি গ্রামে ছিটকিনি আটকানো বন্ধ ঘরের ভিতরে আগুনে পুড়ে দুই ছেলে শিশুর করুণ মৃত্যু হয়েছে। এটি পরিকল্পিত হত্যা কি না তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। তবে ঘটনার পর থেকে পলাতক রয়েছে নিহত দুই শিশুর মা। গতকাল দুপুরে মাদারীপুর উপজেলার ঘটমাঝি ইউনিয়নের উত্তর ঝিকরহাটি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত শিশুরা হলো- রুদ্র বৈদ্য (২) ও মানত বৈদ্য (১)। তারা সদর উপজেলার শিরখাড়া ইউনিয়নের মানিক বৈদ্য ও পূর্ণিমা বৈদ্যর ছেলে। ঘটনার পর থেকেই শিশু দুটির মা পূর্ণিমা বৈদ্য পলাতক রয়েছেন। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ঘটমাঝি ইউনিয়নের উত্তর ঝিকরহাটি এলাকার বাসিন্দা সাবেক সেনাসদস্য মাওলা মাতুব্বরের বাড়িটি দুই মাস আগে ভাড়া নেয় সদর উপজেলার শিরখাড়া ইউনিয়নের বাসিন্দা ভ্যানচালক মানিক ও পূর্ণিমা দম্পতি। মানিক ও তার স্ত্রী পূর্ণিমার মাঝে-মধ্যেই ঝগড়াঝাটি হতো। পনেরো দিন আগে মানিক বৈদ্য একটি চুরির মামলায় গ্রেফতার হন। এরপর থেকে এ ভাড়াবাড়িতে মানিকের স্ত্রী পূর্ণিমা, তার শাশুড়ি ও দুই শিশু সন্তান থাকত। গতকাল বেলা ১২টার দিকে প্রতিবেশীরা এ বাসা থেকে ধোঁয়া দেখতে পান। পরে তারা এসে ঘরের দরজা খুলে আগুন নেভান। এ সময় তারা অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় এক শিশুকে মৃত অবস্থায় ও আরেক শিশুকে আহত অবস্থায় দেখতে পান। আহত শিশুটিকে হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যায়। পরে খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে পুলিশ। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী হাজী মোহাম্মদ বাদল মাতুব্বর বলেন, আমি প্রথমে আগুন দেখে দৌড়ে এসে ঘরের দরজা খুলে ভিতরে ঢুকি। ভিতরে শুধু ধোঁয়া আর আগুন ছিল। ঘরের ভিতরে একটি শিশুকে আহত অবস্থায় পেয়ে আমরা হাসপাতালে পাঠাই। আগুন নেভানোর পরে আরেকটি বাচ্চাকে আগুনে পোড়া অবস্থায় দেখতে পাই। স্থানীয় ইউপি সদস্য ইকবাল দর্জি বলেন, ঘটনাটি শুনে আমি ছুটে এসেছি। এটি একটি মর্মান্তিক ঘটনা। আমরা চাই এ ঘটনার রহস্য উদঘাটন হোক। এ বিষয়ে মাদারীপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনোয়ার হোসেন চৌধুরী বলেন, আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। স্থানীয়দের মাধ্যমে জানতে পারি, সকালে শিশু দুটির মা ও নানি বাড়ি থেকে বের হওয়ার পর ঘরের চালা দিয়ে ধোঁয়া উঠতে দেখা গেছে। তবে বাইরে থেকে কোনো আগুন লাগেনি। লাশ সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এটি পারিবারিক কলহের কারণে হয়েছে নাকি দুর্ঘটনা, তা আমরা তদন্ত করে দেখছি। তবে ঘটনার পর থেকে শিশু দুটির মা ও নানি পলাতক রয়েছেন।
