সিলেট সীমান্তের ওপারে ভারতের আসাম। ১৯৪৭ সালে সিলেট যুক্ত হয় তৎকালীন পাকিস্তানের সঙ্গে। তবে সীমান্তরেখা আলাদা করলেও আসামের সঙ্গে থেকে যায় সিলেটবাসীর আত্মিক সম্পর্ক। এখনো সেই সম্পর্ক বিদ্যমান। সিলেট ও আসামের ভাষা-সংস্কৃতি প্রায় একই। সিলেটের কেউ আসাম বেড়াতে গেলে খুঁজে পান হারিয়ে যাওয়া আঞ্চলিক আদিভাষা। প্রতি বছরই দুই দেশের শিল্পী ও সংস্কৃতিকর্মীর মিলনমেলা বসে এপার-ওপারে। ব্যবসা-বাণিজ্যেও রয়েছে দুই সীমান্তপারের মানুষের জোরালো সম্পর্ক; যা আরও দৃঢ় করতে প্রথমবার আসামের শিলচরে আয়োজন করা হয়েছিল ‘সিলেট-শিলচর উৎসব’। ২-৪ ডিসেম্বর এ উৎসবে বসেছিল ‘সিলেটীদের’ মিলনমেলা। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেনের নেতৃত্বে এতে অংশ নিয়েছিলেন বাংলাদেশের কয়েকজন মন্ত্রীসহ কয়েক শ অতিথি। ভারতের আসামেরও বেশ কয়েকজন মন্ত্রী ও এমএলএ অংশ নেন এ উৎসবে। সিলেট ও আসামের সম্পর্ক অটুট রাখতে উৎসবে দুই অঞ্চলের মানুষের মধ্যে সেতুবন্ধ আরও দৃঢ় করতে জোর দেওয়া হয় যোগাযোগব্যবস্থার উন্নয়নে। সিলেট-শিলচর বাস এবং গুয়াহাটি-সিলেট-ঢাকা ফ্লাইট চালুর ব্যাপারে আগ্রহ ব্যক্ত করেছেন বাংলাদেশ ও আসামের মন্ত্রীরা। নিজ নিজ সরকারের উচ্চপর্যায়ে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করে দ্রুত এ উদ্যোগ বাস্তবায়নেরও আশ্বাস দিয়েছেন তাঁরা। উৎসবে দুই দেশের জনপ্রতিনিধি, ব্যবসায়ী ও সংস্কৃতিকর্মীদের দাবির প্রতি একাত্মতা পোষণ করেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন এমপি, আসামের বন, পরিবেশ ও মৎস্য বিষয়ক মন্ত্রী চন্দ্রমোহন পাটোয়ারী ও শিলচরের সংসদ সদস্য ড. রাজদীপ রায়। ‘সিলেট-শিলচর উৎসব’ সিলেটীদের প্রাণের মেলায় পরিণত হয়েছিল বলে মন্তব্য করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন। তিনি বলেন, সিলেট-শিলচর বাস চলাচল শিগগিরই শুরু হবে। এ সময় আসাম ও সিলেটের মধ্যে ফ্লাইট চালুতে গুরুত্ব দেন ড. মোমেন। আসামের বন, পরিবেশ ও মৎস্য বিষয়ক মন্ত্রী চন্দ্রমোহন পাটোয়ারী বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের বাণিজ্যিক সম্পর্ক সুদৃঢ়। শিলচর-সিলেট বাস ও গুয়াহাটি-সিলেট-ঢাকা বিমান চলাচল শিগগিরই চালু করতে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে চিঠি পাঠাবে আসাম সরকার। শিলচরের সংসদ সদস্য ড. রাজদীপ রায় বলেন, গুয়াহাটি-সিলেট-ঢাকা ফ্লাইট চালু হলে সিলেট ও আসামের মানুষের মধ্যে যোগাযোগ সহজ হবে।