চীন, ভারতসহ প্রতিবেশী দেশগুলোতে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। দ্রুত ছড়াচ্ছে ভাইরাসটির ওমিক্রন ধরনের আরেকটি উপধরন বিএফ.৭। দেশে এখন পর্যন্ত এই উপধরনে আক্রান্ত রোগী মেলেনি। তাই সংক্রমণ ছড়ানোর আগেই অভিজ্ঞতা থেকে প্রতিরোধে জোর দিয়ে সতর্ক দৃষ্টি রাখছে স্বাস্থ্য অধিদফতর।
গতকাল চীন ফেরত চার যাত্রীর শরীরে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি শনাক্ত হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক (সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ) অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলাম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ওমিক্রনের উপধরন বিএফ.৭-এ আক্রান্ত রোগী শনাক্তে বন্দরগুলোতে সতর্ক দৃষ্টি রাখতে বলা হয়েছে। সন্দেহভাজন রোগী পেলে প্রথমে অ্যান্টিজেন্ট টেস্ট করতে হবে। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত শনাক্ত হলে জিনোম সিকোয়েন্সিং করে ধরন দেখা হবে। তিনি আরও বলেন, ‘চীন ফেরত চার যাত্রী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত বলে অ্যান্টিজেন্ট টেস্টে জানা গেছে। তাদের রাজধানীর মহাখালী ডিএনসিসি কভিড হাসপাতালে পাঠানো হচ্ছে। ভাইরাসের ধরন জানতে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের টিম আরটিপিসিআরে করোনা পরীক্ষার জন্য তাদের নমুনা সংগ্রহ করবে। এরপর জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের জন্য নমুনা সংগ্রহ করা হবে। জিনোম সিকোয়েন্সিং শেষে তারা করোনাভাইরাসের কোন ধরনে আক্রান্ত তা জানা যাবে।’ জানা যায়, গতকাল বিকালে এই চার যাত্রী চায়না ইস্টার্ন এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে ঢাকায় আসেন। ওই ফ্লাইটে আসা ২০ জন চীনা নাগরিকের মধ্যে প্রথমে কয়েকজনের কান অতিরিক্ত লালচে দেখে সন্দেহ হয় বিমানবন্দরের স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের। পরে র্যাপিড অ্যান্টিজেন কিটে তাদের নমুনা পরীক্ষা করা হলে চারজনের টেস্ট পজিটিভ আসে। চীন থেকে আসার সময় তারা করোনা পরীক্ষা করেই এসেছেন। আরটিপিসিআরে পরীক্ষা করে নিশ্চিত হওয়ার জন্য তাদের রাজধানীর ডিএনসিসি করোনা হাসপাতালে আইসোলেশনে রাখা হয়েছে।
করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিতে চলছে বিভিন্ন গ্রুপ বৈঠক ও আলোচনা। এর মধ্যেই করণীয় নির্ধারণে পরামর্শ দিয়েছে কভিড-১৯ জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি। স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবীর বলেন, ‘চীন, ভারতসহ বিশ্বের কয়েকটি দেশে আবারও করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ছে। চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা চালু আছে। এ নিয়ে কারিগরি কমিটি বৈঠক করে কিছু পরামর্শ দিয়েছে। নতুন ভ্যারিয়েন্ট টিকা না নেওয়া ব্যক্তিদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। তাই যারা টিকা নেয়নি তাদের দ্রুত নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে কারিগরি কমিটি। ফ্রন্টলাইন কর্মী, অন্তঃসত্ত্বা নারী ও ষাটোর্ধ্বদের দ্বিতীয় বুস্টার ডোজ দ্রুততম সময়ে নিতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মানার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।’