সোমবার, ৩০ জানুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

উপনির্বাচনে বাগযুদ্ধ, জমজমাট প্রচারণা

প্রতিদিন ডেস্ক

আর এক দিন পরই বিএনপির ছেড়ে দেওয়া আসনগুলোতে উপনির্বাচন। প্রার্থীরা এখন শেষ মুহূর্তের প্রচার-প্রচারণায় ব্যস্ত। তাদের প্রচারণায় একে-অপরকে নিয়ে বাগযুদ্ধও জমেছে। আমাদের প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-

চাঁপাইনবাবগঞ্জ : চাঁপাইনবাবগঞ্জের দুটি আসনের উপনির্বাচন ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে নির্বাচনী সমীকরণ পাল্টাতে শুরু করেছে। চায়ের  দোকান আর হাটবাজারগুলোতে চলছে কথার যুদ্ধ। এ উপনির্বাচনে বিএনপি-জামায়াত অংশ না নেওয়ায় নৌকা ও ধানের শীষ আর জামায়াতের মধ্যে লড়াই হচ্ছে না। তবে ভোটাররা বলছেন, যারা এলাকার উন্নয়নে কোনো ভূমিকা রাখেন না, তাদের বয়কট করে এলাকার উন্নয়নের স্বার্থে ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীদের নির্বাচিত করা হবে।  এবার দুটি আসনে মোট ভোটার রয়েছেন ৮ লাখ ১৬ হাজার ৯৪৫ জন। চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ (সদর) আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন নৌকার প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাবেক সংসদ সদস্য আবদুল ওদুদ, স্বতন্ত্র প্রার্থী গত পৌরসভা নির্বাচনে দলের বিদ্রোহী হয়ে বহিষ্কৃত সাবেক যুবলীগ নেতা আপেল প্রতীকের সামিউল হক লিটন এবং বিএনএফের টেলিভিশন প্রতীকে কামরুজ্জামান খান। এরই মধ্যে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা প্রচার-প্রচারণা শেষ করে ফেলেছেন। মূলত এ আসনটিতে লড়াইয়ের সম্ভাবনা নৌকা আর আপেল প্রতীকের প্রার্থীর মধ্যে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা। এ নিয়ে চলছে ভোটারদের চুলচেরা বিশ্লেষণও। অন্যদিকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ (নাচোল-গোমস্তাপুর ও ভোলাহাট) আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন সাবেক এমপি ও জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি জিয়াউর রহমান, বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী মাথাল প্রতীকের খুরশিদ আলম বাচ্চু, আপেল প্রতীকের মোহাম্মদ আলী সরকার, জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীকের মোহাম্মদ আবদুুর রাজ্জাক, বিএনএফের টেলিভিশন প্রতীকের নবিউল ইসলাম এবং জাকের পার্টির গোলাপ ফুল প্রতীকের গোলাম মোস্তফা। এ আসনে ছয়জন প্রার্থী ভোটযুদ্ধে নামলেও মূলত নৌকা ও বিদ্রোহী আপেল প্রতীক ও বিদ্রোহী মাথাল প্রতীকের মধ্যে লড়াইয়ের সম্ভাবনা দেখছেন ভোটাররা।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া : কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন বলেছেন, ‘সরাইল-আশুগঞ্জের মানুষ আবদুস সাত্তারের কলার ছড়ি মার্কায় ভোট দিয়ে আবারও সাত্তার ভূঁইয়াকে সংসদে পাঠিয়ে তারেকের ষড়যন্ত্রের জবাব দেবে। রাজনীতিতে শেষ কথা বলব না, আজকের কলারছড়ি আগামী নির্বাচনে নৌকা হয়ে বেরিয়ে আসবে।’ তিনি সবাইকে ভোট কেন্দ্রে গিয়ে ভোট প্রদানের জন্য আহ্বান জানান। তিনি উকিল সাত্তারের পক্ষের লোকদের ইউনিয়নে ইউনিয়নে গিয়ে ভোটারদের ভোট কেন্দ্রে যাওয়া নিশ্চত করতে এবং সঠিকভাবে ভোট প্রদান নিশ্চিতে কাজ করে যেতে বলেন। তিনি বলেন, আজকের এ সমাবেশে জনগণের উপস্থিতি সিগন্যাল দিচ্ছে আগামী দিনে শেখ হাসিনা আবারও প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন। আর বিএনপি নির্বাচনমুখী দল নয়। তারা নির্বাচন বন্ধ করতে জানে। মাছ যেমন পানি ছাড়া বাঁচে না, তেমনি ইলেকশন পার্টি ইলেকশন ছাড়া বাঁচে না। বিএনপি ইলেকশন পার্টি না, তারা সন্ত্রাসের পার্টি। কাজেই বিএনপি এখন সমাধিস্থ হতে যাচ্ছে, তারা আর কোনোদিন ক্ষমতায় আসতে পারবে না।

তিনি গতকাল বিকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনের উপনির্বাচনে বিএনপির বহিষ্কৃত উকিল আবদুস সাত্তার ভূঁইয়ার সমর্থক গোষ্ঠী আয়োজিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। সভায় সরাইল উপজেলার অরুয়াইল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট শফিকুল ইসলাম গাজীর সঞ্চালনায় ও সভাপতি হাজী আবু তালেবের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি র আ ম উবায়দুল মোক্তাদির চৌধুরী এমপি, সাধারণ সম্পাদক আল-মামুন সরকার, সংরক্ষিত নারী আসনের (৩১২) এমপি উম্মে ফাতেমা নাজমা বেগম, সরাইল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রফিক উদ্দিন ঠাকুর, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মাহাবুবুল বারী চৌধুরী মন্টু, সাবেক যুগ্ম সম্পাদক মঈন উদ্দিন মঈন প্রমুখ।

সভায় অন্য বক্তারা বলেন, বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ উকিল আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া বেগম খালেদা জিয়ার ছেলে তারেক জিয়ার বেয়াদবি, ষড়যন্ত্র ও রূঢ় আচরণের কারণেই বিএনপি থেকে পদত্যাগ করেছেন। আর তারেকের বেয়াদবির প্রতিবাদ জানিয়েছেন তিনি। তাই আমরা কেন্দ্রের নির্দেশে ন¤্র, ভদ্র, বয়োজেষ্ঠ এই মুরুব্বির পক্ষে মাঠে নেমেছি। পরিচ্ছন্ন ও সাহসী মানুষ হিসেবে আমরা উকিল সাত্তারকে সমর্থন দিয়েছি। উনাকে ভোট দিয়ে গণতন্ত্রের বিজয় ঘোষণা করুন। উনাকে ধন্যবাদ জানাতে হয়। কারণ তিনি বৃদ্ধ বয়সে শিরদাড়া শক্ত করে মাথা উঁচু করে তারেক জিয়ার বেয়াদবি ও ষড়যন্ত্রের দাঁতভাঙা জবাব দিয়েছেন।

হাজার হাজার মানুষের অংশগ্রহণে এ নির্বাচনী সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ, জেলা আওয়ামী লীগ, সরাইল ও আশুগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাসহ সরাইল উপজেলার অরুয়াইল, পাকশিমুল ও চুন্টা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মী, বিএনপির পদবঞ্চিত নেতা-কর্মী ও সাত্তার সমর্থক লোকেরা উপস্থিত হন।

সর্বশেষ খবর