বৃহস্পতিবার, ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

অভিযুক্তরা হাতে-পায়ে ধরে ক্ষমা চেয়েছে

বললেন ইবিতে নির্যাতনের শিকার ফুলপরী

ইবি প্রতিনিধি

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) নির্যাতনের শিকার নবীন ভুক্তভোগী ছাত্রী ফুলপরী বলেছেন, ‘অভিযুক্তরা আমার হাতে-পায়ে ধরে ক্ষমা চেয়েছেন। আমি বলেছি, আমি এ বিষয়ে কিছু বলতে চাই না। প্রশাসন যা ব্যবস্থা নেবে তা-ই হবে। তাদের কান্না কান্না ভাব ছিল।’ গতকাল তদন্ত কমিটির জিজ্ঞাসাবাদ শেষে এ কথা বলেন ভুক্তভোগী ছাত্রী। তবে অভিযুক্তরা মুখ খোলেননি। জানা যায়, গতকাল দুপুর ১২টার দিকে তদন্ত কমিটির ডাকে ভুক্তভোগী তার বাবাসহ ক্যাম্পাসে আসেন। প্রক্টরিয়াল বডির নিরাপত্তায় তাকে দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলে নেওয়া হয়। ভুক্তভোগীকে দুপুর ১২টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত প্রায় তিন ঘণ্টা বিভাগীয় তদন্ত কমিটি জিজ্ঞাসাবাদ করে। এরপর ভুক্তভোগী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের তদন্ত কমিটির ডাকে কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক রেবা মণ্ডলের কক্ষে যান। এ সময় আরও এক ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় তাকে। এ সময় অভিযুক্ত পাঁচ শিক্ষার্থীও উপস্থিত ছিলেন। পরে বিকাল ৫টার দিকে বাড়ি ফিরে যান ভুক্তভোগী ও তার বাবা। ভুক্তভোগীর বাবা আতাউর রহমান বলেন, ‘আজকে নিয়ে চার দিন ক্যাম্পাসে এলাম। আমার মেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। শারীরিক-আর্থিক দুই ধরনেরই ক্ষতি হচ্ছে। কষ্ট হলেও সুষ্ঠু বিচারের জন্য আসতে হবে। প্রশাসন চাইলে এখানে নিরাপত্তা দিয়ে রেখে কাজ করতে পারত।’ হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. শামসুল আলম বলেন, ‘তদন্তের স্বার্থে ওই ছাত্রীকে ডাকা হয়েছিল। কষ্ট হলেও তদন্তের স্বার্থে আসতে হচ্ছে।’ সহকারী প্রক্টর ড. শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘প্রভোস্টের নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা ওই ছাত্রীকে সঙ্গে নিয়ে হলে দিয়ে এসেছি। আমরা তাকে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দেব।’ এদিকে ছাত্রী নির্যাতনের ঘটনায় জড়িতদের শাস্তির দাবিতে শিক্ষক সংগঠন সাদা দল মানববন্ধন করেছে। গতকাল বেলা ১১টার দিকে অনুষদ ভবনের সামনে এ মানববন্ধন করে তারা। এ সময় সাদা দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. এ কে এম মতিনুর রহমানের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান, সাদা দলের যুগ্ম-আহ্বায়ক অধ্যাপক মোহাম্মদ সেলিম, উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুজাহিদুর রহমান, অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাসউদ আল মাহদী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া জাতীয়তাবাদী কর্মকর্তা ফোরামের সভাপতি আবদুল মঈদ বাবুল, সাধারণ সম্পাদক ইয়ারুল ইসলাম ও কর্মচারী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক আমিরুল ইসলামসহ অন্য নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। শিক্ষক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ছাত্রী নির্যাতনের ঘটনায় বিশ্ববাসীর কাছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে। অতি দ্রুত এ ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় নিয়ে আসতে হবে। যদি তা না হয়, তাহলে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটতে থাকবে। প্রসঙ্গত, রবিবার দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলের গণরুমে ডেকে রাত ১১টা থেকে ৩টা পর্যন্ত নবীন এক ছাত্রীকে বিবস্ত্র করে মারধর ও শারীরিকভাবে নির্যাতন করা হয় বলে অভিযোগ ওঠে শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সানজিদা চৌধুরী অন্তরা ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে। নির্যাতনের পরদিন ভয়ে ক্যাম্পাস থেকে পালিয়ে যান ভুক্তভোগী ছাত্রী।

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর