সোমবার, ১৩ মার্চ, ২০২৩ ০০:০০ টা

২৭ দিন পর নতুন হলে উঠলেন ফুলপরী

ইবি প্রতিনিধি

২৭ দিন পর নতুন হলে উঠলেন ফুলপরী

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলে নির্যাতনের ঘটনার ২৭ দিন পর ক্যাম্পাসে ফিরে নতুন হলে উঠেছেন ভুক্তভোগী ছাত্রী ফুলপরী খাতুন। প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব হলের ৫০১ নম্বর রুমে উঠেছেন তিনি। আজ থেকে ক্লাস শুরু করবেন তিনি। গতকাল দুপুর ১২টার দিকে বাবার সঙ্গে গ্রামের বাড়ি পাবনা থেকে ক্যাম্পাসে আসেন তিনি। ভুক্তভোগীর বাবা আতাউর রহমান বলেন, ‘মেয়েকে হলে রাখতে ক্যাম্পাসে এসেছি। প্রশাসন আমাদের নিরাপত্তা দিয়েছে। এখন থেকে সে হলেই থাকবে।’

এর আগে উচ্চ আদালত থেকে পছন্দের হল বরাদ্দের নির্দেশের পর গত ৪ মার্চ (শনিবার) ক্যাম্পাসে এসে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব হলে বরাদ্দের জন্য আবেদন করেন ভুক্তভোগী ছাত্রী। পরে ওই হলের একটি কক্ষে তাকে বরাদ্দ দেওয়া হয়। হল বরাদ্দ দেওয়া হলে সেদিন বাড়ি ফিরে যান তিনি।

প্রসঙ্গত, গত ১২ ফেব্রুয়ারির নির্যাতনের ঘটনার পর থেকে প্রায় এক মাস শ্রেণিকার্যক্রমে অংশ নিতে পারেননি নির্যাতনের শিকার ছাত্রী। এই সময়ে তার সহপাঠীরা নিয়মিত ক্লাস করলেও ভুক্তভোগীকে বাড়ি থেকে ক্যাম্পাস ঘুরে বেড়াতে হয় নির্যাতনের বিচার পেতে। ফলে অন্যদের থেকে একাডেমিক পড়াশোনায় পিছিয়ে পড়েছেন তিনি। ক্যাম্পাস সূত্রে জানা গেছে, ৮ ফেব্রুয়ারি ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের নতুন বর্ষের ক্লাস শুরু হয়। দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলে অতিথি হিসেবে উঠে ক্লাস শুরু করেন ভুক্তভোগী। পরে ১১ ও ১২ ফেব্রুয়ারি নির্যাতনের শিকার হয়ে ১৩ তারিখ সকালে ক্যাম্পাস ছেড়ে বাড়ি চলে গিয়েছিলেন। ১৪ ফেব্রুয়ারি লিখিত অভিযোগ দিতে ক্যাম্পাসে আসেন তিনি। এরপর তদন্ত কমিটির কাছে বক্তব্য দিতে হল পছন্দ করতে কয়েক দফা ক্যাম্পাসে এলেও ক্লাসে ফেরা হয়নি তার। গতকাল নতুন হলে ওঠার পর সময় পেলে ক্লাসে অংশ নেবেন বলে জানায় তার পরিবার। ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের সভাপতি ড. বখতিয়ার হাসান বলেন, ‘আমরা ওই ছাত্রীর খোঁজখবর রাখছি। একাডেমিক কমিটির মিটিংয়েও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছি। ওই ছাত্রী ক্লাসে এলে যেন কোনো ধরনের নিরাপত্তাজনিত সমস্যায় না পড়ে এবং কোনো ধরনের বিব্রত পরিস্থিতিতে পড়তে না হয় এ নিয়ে আমরা শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেছি। এ ছাড়া গত মাসে ক্লাসে অংশ না নিলেও যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয় আমরা বিষয়টি দেখব।’ এদিকে ছাত্রী নির্যাতনের ঘটনায় সিসি ক্যামেরা ফুটেজ সরবরাহ করতে ব্যর্থ হওয়ার পেছনে হল প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের চিহ্নিত করা এবং ক্যামেরা সিস্টেম কার্যকরভাবে পরিচালনা করার বিষয়ে এক সদস্যের কমিটি গঠন করেছে কর্তৃপক্ষ। আইসিটি সেলের পরিচালক অধ্যাপক ড. আহসান-উল আম্বিয়াকে সদস্য করা হয়। তাকে আগামী সাত দিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। হাই কোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান এ কমিটি গঠন করেছেন। ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশ থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

সর্বশেষ খবর