বুধবার, ১৫ মার্চ, ২০২৩ ০০:০০ টা
বিদেশি হস্তক্ষেপ নিয়ে রাষ্ট্রদূত

বাংলাদেশের অবস্থান সমর্থন করে চীন

নিজস্ব প্রতিবেদক

ঢাকায় চীনের নবনিযুক্ত রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেছেন, বাংলাদেশের প্রতি চীন সব সময় ধারাবাহিক নীতি বজায় রেখেছে। চীন সব সময় বাংলাদেশের বিশ্বস্ত কৌশলগত অংশীদার। তিনি বলেন, অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বিদেশের হস্তক্ষেপ প্রত্যাখ্যানের ব্যাপারে বাংলাদেশের যে অবস্থান, চীন তা সমর্থন করে।

গতকাল দুপুরে রাজধানীর একটি হোটেলে বাংলাদেশ-চীন সিল্ক রোড ফোরাম আয়েজিত রাষ্ট্রদূতকে দেওয়া এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। গত বছরের ডিসেম্বরে বাংলাদেশে চীনের রাষ্ট্রদূত হিসেবে যোগ দেন ইয়াও ওয়েন। এ সময় থেকে দুই দেশের সম্পর্কের বিষয়ে বাংলাদেশের নানা স্তরের লোকজনের আন্তরিকতা তাঁকে মুগ্ধ করেছে বলে রাষ্ট্রদূত মন্তব্য করেন। অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথি আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য এবং ১৪ দলের সমন্বয়ক ও মুখপাত্র আমির হোসেন আমু চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের দীর্ঘ সম্পর্কের কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে চীন ইতিবাচক ভূমিকা রাখলে বাংলাদেশের জনগণ আরও বেশি সন্তুষ্ট হবে। তিনি বলেন, ’৫০-এর দশকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান চীন সফর করেন। সেই থেকে চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের সূচনা। ১৯৯৬ সালের আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও চীন সফর করেন। তাঁর নেতৃত্বে চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কে আরও বেশি হৃদ্যতাপূর্ণ হচ্ছে। তিনি রাশিয়া এবং ইউক্রেনের বর্তমান যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে চীনের সক্রিয় ভূমিকা প্রত্যাশা করেন। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে চীনা রাষ্ট্রদূত আর বলেন, ঢাকা-বেইজিংয়ের সম্পর্কের যে ভবিষ্যৎ আর সম্ভাবনা, তা সরকারকে ছাড়িয়ে জনগণের মাঝে বিস্তৃত। রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেন, উন্নয়নের লক্ষ্য অর্জনে দুই দেশের স্বার্থ অভিন্ন। ফলে বাংলাদেশের উন্নয়নে চীনের আরও ভূমিকা রাখার সুযোগ রয়েছে।

বিশেষ করে বাংলাদেশের রূপকল্প-২০৪১ ও স্মার্ট বাংলাদেশের অভীষ্ট লক্ষ্য অর্জনে আমরা সহযোগিতা করতে পারি। দুই দেশ একসঙ্গে বিকশিত হতে পারে। ইয়াও ওয়েন বলেন, অভ্যন্তরীণ বিষয়ে মতপার্থক্য থাকলেও চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের বিষয়ে এ দেশের রাজনীতিবিদদের মতপার্থক্য নেই। মঞ্চে উপস্থিত তিনটি দলের প্রতিনিধিরা তার প্রমাণ দিচ্ছেন। তাঁরা সবাই এ সম্পর্কের সমর্থক। তিনি বলেন, চীন বাংলাদেশের সব রাজনৈতিক দল ও জনগণের সঙ্গে সম্পর্কে বিশ্বাসী। চীনের মধ্যস্থতায় সৌদি আরব ও ইরানের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনঃস্থাপনের প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, এর মধ্য দিয়ে মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি স্থাপনের পাশাপাশি বিরোধী দেশগুলো সংলাপ ও আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের পথ খুঁজে নিতে পারে। সেই দৃষ্টান্ত স্থাপিত হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে সংলাপ ও শান্তির বিজয় হয়েছে। অনুষ্ঠানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান বলেন, চীন এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় উন্নয়ন অংশীদার। চীন যেভাবে বাংলাদেশকে এখন পর্যন্ত সহযোগিতা করে যাচ্ছে, তা কারও পক্ষে করা সম্ভব নয়। এমনকি যুক্তরাষ্ট্রেরও সেটা করার সামর্থ্য নেই। সাবেক রাষ্ট্রদূত মুন্সী ফয়েজ আহমেদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে যে অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রা হচ্ছে, চীন তাতে বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্ত থাকবে। এটাই বাংলাদেশের মানুষের প্রত্যাশা।

স্বাগত বক্তব্যে বাংলাদেশ-চীন সিল্ক রোড ফোরামের চেয়ারম্যান দিলীপ বড়ুয়া বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের অর্থনীতিকে যেভাবে এগিয়ে নিতে চেষ্টা করছেন তাতে চীন আমাদের পাশে থাকবে এটাই জনগণ প্রত্যাশা করে। এ দেশের জনগণ চীনকে বিশ্বস্ত বন্ধু মনে করে। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে আরও বক্তৃতা করেন কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম ও ওয়ার্কার্স পার্টির পলিটব্যুরোর সদস্য কামরুল আহসান।

সর্বশেষ খবর