মৃত্যুর সাত মাস পর কবর থেকে লাশ উত্তোলন করা হয়েছে বর্ষা নামে এক তরুণীর। গতকাল সকালে রংপুর নগরীর খামবাগ এলাকার পারিবারিক কবরস্থান থেকে ওই লাশ উত্তোলন করে ময়নাতদন্তের জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (রমেক) মর্গে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ ও মামলা সূত্রে জানা গেছে, নগরীর খাসবাগের বেলাল হোসেনের মেয়ে বর্ষা হোসাইন (২০) আউটসোর্সিংয়ের কাজ করতেন। মা শাহিনা বেগম দুই সন্তান বর্ষা ও বাঁধন মিয়াকে বাড়িতে রেখে ঢাকায় পাসপোর্ট অফিসে আয়ার কাজ করেন। একই এলাকার রিপন মিয়ার ছেলে জিয়াদ হোসেনের সঙ্গে বর্ষার সুসম্পর্ক ছিল। এরই সূত্র ধরে জিয়াদ তার নানির বাড়ি এনে বর্ষাদের বাসা ভাড়া দেন। একপর্যায়ে জিয়াদ বিয়ের আশ্বাসে বর্ষার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন। পরে তাকে ধর্ষণ করেন। বর্ষা গর্ভবতী হয়ে পড়েন। বিষয়টি জিয়াদ ও তার পরিবারকে জানানো হলে তারা বর্ষাকে পেটের বাচ্চা নষ্ট করতে বলেন। বর্ষা রাজি না হওয়ায় তাদের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি ঘটে। তারা বিভিন্নভাবে বর্ষাকে নির্যাতন করতে থাকেন। বাচ্চা নষ্ট না করলে মরে যাওয়ার কথা বলে নানা ধরনের কটূক্তি করতে থাকে তারা। জিয়াদ ও তার পরিবারের কটূক্তি সহ্য করতে না পেরে গত বছর ২ সেপ্টেম্বর রাতে বর্ষা আত্মহত্যা করেন। এ ঘটনায় অপমৃত্যু মামলা হয়। বর্ষার মা ১১ সেপ্টেম্বর থানায় মামলা করতে গেলে থানা মামলা নেয়নি। পরে রংপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ আদালতে ছয়জনকে আসামি করে শাহিনা বেগম মামলা করেন। মামলার আসামিরা হলেন জিয়াদ হোসেন, ছবি বেগম, মণি বেগম, সিরাজউদ্দিন, সাজু মিয়া ও মো. রিফাত। এদিকে মামলার সুষ্ঠু তদন্ত ও প্রকৃত রহস্য উদ্ঘাটনের স্বার্থে ১২ জানুয়ারি আদালত আদেশ দেন পারিবারিক কবরস্থান থেকে লাশ উত্তোলন করার জন্য। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল সকালে বর্ষার লাশ কবর থেকে উত্তোলন করা হয়।