বৃহস্পতিবার, ১৮ মে, ২০২৩ ০০:০০ টা
জাতিসংঘে রেজুলেশন

কমিউনিটি ক্লিনিকের বৈশ্বিক স্বীকৃতি

যুক্তরাষ্ট্র প্রতিনিধি

জাতিসংঘে কমিউনিটিভিত্তিক স্বাস্থ্যসেবাবিষয়ক একটি রেজুলেশন সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়েছে। ‘কমিউনিটিভিত্তিক প্রাথমিক স্বাস্থ্যব্যবস্থা : সর্বজনীন স্বাস্থ্যপরিষেবা অর্জনের লক্ষ্যে একটি অংশগ্রহণমূলক এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক পদ্ধতি’ শিরোনামে ১৬ মে গৃহীত এ ঐতিহাসিক রেজুলেশনটি সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিতে বাংলাদেশে কমিউনিটি ক্লিনিকভিত্তিক মডেল প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অসামান্য উদ্ভাবনী নেতৃত্বের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি। বাংলাদেশ কর্তৃক প্রস্তাবিত রেজুলেশনটিতে জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলো কমিউনিটি ক্লিনিক প্রতিষ্ঠায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফল উদ্ভাবনী উদ্যোগের ব্যাপক স্বীকৃতি দিয়ে এ উদ্যোগকে ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। এটি জনগণের স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়ন এবং বৈশ্বিক স্বাস্থ্যসেবায় সাম্য আনয়নে বাংলাদেশের দৃঢ় প্রতিশ্রুতিকে প্রতিফলিত করে। নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দফতরে সাধারণ পরিষদে ওই দিন রেজুলেশনটি উপস্থাপন করেন বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আবদুল মুহিত। কমিউনিটি ক্লিনিকভিত্তিক স্বাস্থ্যব্যবস্থার প্রতি অকুণ্ঠ সমর্থনস্বরূপ জাতিসংঘের ৭০টি সদস্য রাষ্ট্র এ রেজুলেশনে কো-স্পন্সর ছিল। রাষ্ট্রদূত মুহিত তাঁর বক্তব্যে সর্বজনীন স্বাস্থ্যপরিষেবা অর্জনে এ রেজুলেশনের ইতিবাচক প্রভাব তুলে ধরেন। তিনি জাতিসংঘ সদস্য রাষ্ট্রগুলো কর্তৃক এ রেজুলেশনের অনুমোদনকে ২০৩০ সালের মধ্যে সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা অর্জনের বৈশ্বিক প্রচেষ্টায় এক অবিস্মরণীয় মাইলফলক হিসেবে উল্লেখ করেন। রাষ্ট্রদূত মুহিত বলেন, রেজুলেশনটির সফল বাস্তবায়ন কমিউনিটি ক্লিনিকভিত্তিক স্বাস্থ্যব্যবস্থা প্রবর্তনের মাধ্যমে বিশ্বের কোটি কোটি মানুষের স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

রাষ্ট্রদূত মুহিত আরও বলেন, সর্বজনীন স্বাস্থ্যপরিষেবা এবং জাতিসংঘ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের নিমিত্ত আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বৃদ্ধিতে এ রেজুলেশনের সুদূরপ্রসারী প্রভাব রয়েছে। কারণ সদস্য দেশগুলোয়, বিশেষ করে উন্নয়নশীল দেশগুলোয় এ কমিউনিটি ক্লিনিকভিত্তিক মডেল স্বাস্থ্যব্যবস্থা প্রবর্তন ও বাস্তবায়নে আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠান, বহুপক্ষীয় এবং আঞ্চলিক উন্নয়ন ব্যাংক ও দাতাদের যথাযথ কারিগরি ও আর্থিক সহযোগিতা প্রদানের জন্য আমন্ত্রণ জানায়। উল্লেখ্য, দেশের সব মানুষকে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার আওতায় আনার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৮ সালে এ অনন্য কমিউনিটি ক্লিনিকভিত্তিক স্বাস্থ্যব্যবস্থা চালু করেছিলেন; যা সারা দেশের তৃণমূল পর্যায়ের মানুষের দোরগোড়ায় সরকারের প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার সুফল সরবরাহে বিপ্লব ঘটিয়েছে। মানুষকে নিরবচ্ছিন্ন স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের লক্ষ্যে সরকার এ পর্যন্ত সারা দেশে পাবলিক-প্রাইভেট অংশীদারিতে ১৪ হাজারের বেশি কমিউনিটি ক্লিনিক প্রতিষ্ঠা করেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের অদম্য উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় এ স্বীকৃতি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি আরও উজ্জ্বল করবে। জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের পক্ষ থেকে রেজুলেশনটি সদস্য রাষ্ট্রের সঙ্গে নেগোসিয়েশন করেন উপ-স্থায়ী প্রতিনিধি ড. মো. মনোয়ার হোসেন। মিশন কয়েক বছর ধরে স্বাস্থ্য কূটনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে এবং এর ধারাবাহিকতায় এ রেজুলেশনটি এ বছরের শুরুর দিকে সদস্য রাষ্ট্রের বিবেচনার জন্য প্রস্তাব করে। সদস্য রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে বিগত চার মাস নিবিড় আলোচনা ও নেগোসিয়েশনের পর ১৬ মে প্রস্তাবটি সর্বসম্মতভাবে গৃহীত হয়েছে। রেজুলেশনটি পাসের সংবাদ জেনে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাকে প্রাণঢালা অভিনন্দন জানিয়েছেন বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের যুক্তরাষ্ট্র শাখার সেক্রেটারি আবদুল কাদের মিয়া, ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. জাফর উল্লাহ, সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম-মুক্তিযুদ্ধ ’৭১-এর যুক্তরাষ্ট্র শাখার সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা লাবলু আনসার এবং সেক্রেটারি বীর মুক্তিযোদ্ধা রেজাউল বারি। পৃথক বিবৃতিতে তাঁরা উল্লেখ করেছেন, মানবতার কল্যাণে উদ্ভাবনী চিন্তা-চেতনার সুফল আসায় এভাবেই শেখ হাসিনা বাংলাদেশের নেতা থেকে বিশ্বনেতায় পরিণত হচ্ছেন। শেখ হাসিনার বিচক্ষণতাপূর্ণ নেতৃত্বগুণে বাংলাদেশের উন্নয়ন-অভিযাত্রাকে বিশ্বের রোল মডেল হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে।

 

সর্বশেষ খবর