সোমবার, ২২ মে, ২০২৩ ০০:০০ টা
সরগরম সিটি নির্বাচনের মাঠ

কর্মব্যস্ত লিটন, জাপার মনোনয়নপত্র জমা

রাজশাহী

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

কর্মব্যস্ত লিটন, জাপার মনোনয়নপত্র জমা

দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব নিয়ে মেয়র হিসেবে গতকাল শেষ কর্মদিবস ছিল এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটনের। শেষ দিন তিনি কাটিয়েছেন কর্মব্যস্ত। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে বৈঠক ও দাফতরিক ফাইলে স্বাক্ষর করেছেন। অংশ নিয়েছেন কয়েকটি কর্মসূচিতে।

মনোনয়ন নিশ্চিত করার পর থেকেই নানা কৌশলে প্রচারণার মাঠে লিটন। তুলে ধরছেন তার এই মেয়াদে নেওয়া প্রকল্পগুলোর অগ্রগতি। লিটনের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির মিডিয়া কমিটির মুখপাত্র আহসানুল হক পিন্টু বলেন, পাঁচ বছর আগের দেখা নগর এবং বর্তমান রাজশাহীর নগরচিত্রই বলে দেয় মেয়র লিটনের পরিকল্পনায় নগরীতে কতটা পরিবর্তন হয়েছে। দেশি-বিদেশি বিনিয়োগসহ বহুমাত্রিক উন্নয়ন কর্মকান্ডে গতিশীল হয়েছে নগর অর্থনীতি। দ্বিতীয় মেয়াদে এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন মেয়র হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর প্রায় ২ হাজার ৭০০ কোটি টাকা ব্যয়ে রাজশাহী মহানগরীর সমন্বিত নগর অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ব্যাপক উন্নয়ন কাজ হয়েছে। এখনো চলমান আছে উন্নয়ন। এর মধ্যে ১ হাজার ২০০ কোটি টাকার কাজ বাস্তবায়ন হয়েছে। বাকি আরও অনেক কাজ চলছে। সিটি করপোরেশনের তথ্য বলছে, নগরীর বিমান চত্বর থেকে বিহাস পর্যন্ত নতুন চার লেন সড়ক, তালাইমারী থেকে আলুপট্টি পর্যন্ত চার লেন সড়ক, বিলসিমলা রেলক্রসিং মোড় থেকে কাশিয়াডাঙ্গা পর্যন্ত চার লেন সড়ক, ভদ্রা রেলক্রসিং থেকে নওদাপাড়া বাস টার্মিনাল পর্যন্ত চার লেন সড়ক, বিলসিমলা থেকে সিটি হাট পর্যন্ত চার লেন সড়ক করা হয়েছে। আগে দুই লেনের এই সড়কগুলোতে দুর্ভোগ ছিল নগরবাসীর নিত্যদিনের সঙ্গী। অনুন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে নগরীতে ব্যক্তি বিনিয়োগও ছিল খুবই নগণ্য। তবে টেকসই উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়নে শুধু যোগাযোগ ব্যবস্থায় আধুনিকায়ন হয়নি; প্রতিটি রাস্তার ফুটপাতকে ঘিরে পরিচালিত হচ্ছে নিম্ন আয়ের মানুষের বাড়তি আয়ের সুযোগ। পর্যটন স্পট হিসেবেও এই রাস্তাগুলো ব্যবহার হচ্ছে। শুধু এই প্রধান সড়কগুলোই নয়, নগরীর বুধপাড়া এলাকায় ফ্লাইওভার নির্মাণ, সপুরা থেকে পোস্টাল একাডেমি পর্যন্ত সড়ক, সাগরপাড়া বটতলা মোড় থেকে রুয়েটের সীমানা প্রাচীর, উপশহর মালোপাড়া-রানীবাজার সড়ক, মণিচত্বর থেকে জাদুঘর মোড় সড়ক, বঙ্গবন্ধু হাইটেক পার্কসংলগ্ন সড়কসহ পদ্মাপাড়জুড়ে যোগাযোগ ও সৌন্দর্যবর্ধনে যে কাজ হয়েছে, তা এই নগরীকে বাসযোগ্য গ্রিন, ক্লিন ও হেলথি সিটি হিসেবে খ্যাতি অর্জনের পাশাপাশি স্মার্ট রাজশাহীর পথকেও ত্বরান্বিত করেছে। রাজশাহী চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি মাসুদুর রহমান রিংকু জানান, একটি এলাকার অর্থনীতি কোন দিকে যাবে তা নির্ভর করে সে অঞ্চলের যোগাযোগ ও ব্যবসা-বাণিজ্যের ওপর। রাজশাহীর ব্যবসা-বাণিজ্যের পরিস্থিতিতে কতটা উন্নতি হয়েছে তা দৃশ্যমান। রাসিক ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ তৈরি করায় নারীরাও আর ঘরে বসে নেই। অনলাইনে ঘরে বসে বিভিন্ন পণ্য কেনাবেচা করছেন। এক কথায় ব্যবসা-বাণ্যিজের ক্ষেত্রেও নীরব বিপ্লব এসেছে, যা এ অঞ্চলের অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করেছে। রাসিক মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, একটি অঞ্চলের মানুষের জীবনমান কেমন হবে- তা সে অঞ্চলের অর্থনীতির ওপর নির্ভর করে। রাজশাহী এক সময় অনেক পিছিয়ে ছিল। উন্নয়নের ক্ষেত্রে বৈষম্য ছিল। জনগণের ভোটে প্রথম মেয়াদে মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পরপরই টেকসই উন্নয়ন নিয়ে কাজ শুরু করি। দ্বিতীয় মেয়াদে নির্বাচিত হওয়ার পর গত পাঁচ বছরে টেকসই উন্নয়ন পরিকল্পনার অনেক কাজই বাস্তবায়ন হয়েছে। অনেক কাজ বাকি আছে। কুচক্রী মহল প্রথম দিকে নানা অপপ্রচার চালালেও এর সুফল এখন সাধারণ মানুষ পাচ্ছে। বিনিয়োগ বেড়েছে। কর্মসংস্থান বেড়েছে। মানুষের জীবনমান উন্নত হয়েছে। এদিকে গতকাল দুপুরে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন জাতীয় পার্টির প্রার্থী সাইফুল ইসলাম স্বপন। দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে তিনি মনোনয়নপত্র জমা দেন রিটার্নিং কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেনের কাছে। সাইফুল ইসলাম স্বপন বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচন হলে তিনি বিজয়ী হবেন। নির্বাচিত হলে নগর উন্নয়নে কী কী পদক্ষেপ নেবেন, সেগুলো আগেই জানিয়েছেন। লাঙলের প্রতি মানুষের আস্থা আছে। মানুষ তাদের ভোট দিতে অপেক্ষায় আছে বলে দাবি করেন জাতীয় পার্টির প্রার্থী।

সর্বশেষ খবর