সোমবার, ২২ মে, ২০২৩ ০০:০০ টা

৯ মাস পর যুবকের লাশ ফেরত বিএসএফের

পঞ্চগড় প্রতিনিধি

পঞ্চগড়ের ভারতীয় সীমান্তের অভ্যন্তরে গরু চোর সন্দেহে পিটিয়ে হত্যার প্রায় ৯ মাস পর বাংলাদেশি যুবক আবদুস সালামের লাশ ফেরত পেয়েছে পরিবারের লোকজন। গত শনিবার সন্ধ্যার দিকে জেলার তেঁতুলিয়া উপজেলার বাংলাবান্ধা সীমান্তের ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে তার লাশ গ্রহণ করেন পরিবারের লোকজন। এ সময় বিজিবি, বিএসএফ সদস্য ছাড়াও জনপ্রতিনিধি ও নিহতের পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। পরে ওই রাতেই তার মরদেহ বাসায় নিয়ে আসেন পরিবারের সদস্যরা। রাতে সালামের লাশ বাসায় আসতেই কান্নার রোল পড়ে যায়। স্ত্রী ও তার মায়ের আর্তনাদে আকাশ-বাতাস ভারী হয়ে যায়। এদিকে শেষ বারের মত নিহত আবদুস সালামকে দেখতে তার বাসায় ছুটে যান আত্মীয়-স্বজনসহ স্থানীয়রা। পরে রাতেই জানাজা শেষে লাশ স্থানীয় কবরস্থানে দাফন করা হয়। নিহতের পরিবার জানায়, গত বছরের ২৪ আগস্ট ভোরে নীলফামারী-৫৬ বিজিবি ব্যাটালিয়নের আওতাধীন পঞ্চগড় উপজেলা সদরের অমরখানা সীমান্তের বিপরীত ভারতের বড়ুয়াপাড়া সীমান্ত এলাকায় বাংলাদেশি যুবক আবদুস সালামসহ তিন যুবককে ধাওয়া করে স্থানীয়রা। এ সময় অন্য দুজন পালিয়ে গেলেও আবদুস সালামকে আটক করে স্থানীয়রা। ওই স্থানেই গরু চোর সন্দেহে পিটিয়ে হত্যা করে ভারতের নাগরিকরা। পরে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) ও ভারতীয় পুলিশ বাংলাদেশি ওই যুবকের লাশ উদ্ধার করে। নিহত আবদুস সালামের বাড়ি উপজেলা সদরের সাতমেরা ইউনিয়নের কাহার পাড়ায়। ঘটনাটি ভারতীয় বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রচার হলে নিহতের পরিবার বিষয়টি জানতে পারেন এবং লাশ ফেরতের জন্য বিজিবির মাধ্যমে ভারতের কাছে আবেদন করে। দুই দেশের আইনি জটিলতা এবং দীর্ঘ প্রক্রিয়া শেষে নিহতের এক ভাই ভারতে গিয়ে শনিবার সন্ধ্যায় তার লাশ নিয়ে আসেন। নিহত সালামের মা আলেমা খাতুন বলেন, আমার ছেলে ওইদিন রাতে ভাত খেয়ে শুয়ে পড়েছিল। পরে স্থানীয় দুজন তাকে ডেকে নিয়ে যায়। পরে সকালে উঠে শুনি সালাম বাসায় নেই।

 পরে ওইদিন দুপুরে তার মৃত্যুর সংবাদ পাই। আমার ছেলেকে যারা পিটিয়ে মারল আল্লাহ তুমি তাদের বিচার কর। সাতমেড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম রবি বলেন, ভারতে গরু আনতে গিয়ে স্থানীয় সালাম নামে একজন মারা গেছেন বলে জানা গিয়েছিল। লাশটি ভারতের জলপাইগুড়ি হাসপাতালে বিশেষ ব্যবস্থায় (ফ্রিজিং করে) রাখা ছিল। এরপর নিহত সালামের মেঝ ভাই আলিম উদ্দীন ভিসা পাসপোর্টের মাধ্যমে ভারতে গিয়ে লাশ শনাক্ত করেন। দীর্ঘ ৯ মাস পর আইনি প্রক্রিয়া শেষে পরিবারের সদস্যদের কাছে লাশটি হস্তান্তর করে বিএসএফ ও ভারতীয় পুলিশ। সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল লতিফ মিঞা বলেন, দীর্ঘ প্রায় ৯ মাস পর নিখোঁজ আবদুস সালামের লাশ পেয়েছে তার পরিবার। লাশ নিয়ে আসার সময় পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে পুলিশও ছিল। এ ঘটনায় লাশ উদ্ধারের একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে।

সর্বশেষ খবর