প্রতীক পেয়েই আনুষ্ঠানিকভাবে প্রচারণায় নেমেছেন সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনের মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা। প্রতীক আনতে গতকাল সকাল থেকে কর্মী-সমর্থক নিয়ে নির্বাচন অফিসে ভিড় করেন প্রার্থীরা। প্রতীক বরাদ্দ পাওয়ার পর উৎসবমুখর পরিবেশে তারা প্রচারণা শুরু করেন। কোনো কোনো প্রার্থী আগে থেকেই প্রতীক দিয়ে পোস্টার, লিফলেট ও ব্যানার ছাপিয়ে রেখেছিলেন। আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতীক বরাদ্দের পর তাদের কর্মী-সমর্থকরা পোস্টার ও ব্যানার টানানো শুরু করেন। এ ছাড়া দুপুর ২টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত বিভিন্ন প্রার্থীর পক্ষে মাইকিং করা হয়। কোনো কোনো প্রার্থীর সমর্থকরা খন্ড খন্ড মিছিলও করেন। এ ছাড়া গতকাল আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী ও জাতীয় পার্টির নজরুল ইসলাম বাবুল তাদের প্রধান নির্বাচনী কার্যালয় উদ্বোধন করেন। প্রতীক বরাদ্দ উপলক্ষে গতকাল সকাল থেকে আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে মেয়র, সাধারণ ও সংরক্ষিত ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী এবং তাদের কর্মী-সমর্থকদের উপস্থিতিতে উৎসবমুখর পরিবেশের সৃষ্টি হয়। সাতজন মেয়র প্রার্থীর মধ্যে আওয়ামী লীগের আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী নৌকা, জাতীয় পার্টির নজরুল ইসলাম বাবুল লাঙ্গল, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের হাফেজ মাওলানা মাহমুদুল হাসান হাতপাখা, জাকের পার্টির মো. জহিরুল আলম গোলাপফুল, স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. আবদুল হানিফ কুটু ঘোড়া, মো. সালাহউদ্দিন রিমন ক্রিকেট ব্যাট এবং মো. শাহজাহান মিয়া বাস প্রতীক পান।
প্রতীক বরাদ্দের পর দুপুর ২টার পর নগরীর প্রায় সব ওয়ার্ড থেকে নৌকা ও লাঙ্গলের পক্ষে প্রচারণা মাইক বের করা হয়। এ ছাড়া বিভিন্ন ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থীও মাইকিং করেন। দুপুর থেকেই নগরীর ব্যস্ততম এলাকাগুলোয় প্রার্থীদের পোস্টার ও ব্যানার লাগানো শুরু হয়।
জাতীয় পার্টির কর্মীর ওপর হামলার অভিযোগ : সিলেট নগরীর শামীমাবাদ আবাসিক এলাকায় লাঙ্গল প্রতীকের লিফলেট বিতরণকালে নজরুল ইসলাম বাবুলের এক সমর্থকের ওপর হামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। সিলেট মহানগর জাতীয় পার্টির সদস্য সচিব আবদুস শহিদ লস্কর বশির জানান, লাঙ্গল প্রতীকের লিফলেট বিতরণকালে রাইয়ান আহমদ নামের এক কর্মীকে বাধা দেন ১০ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সরুজ মিয়া। এ সময় তুষার নামের একজনের নেতৃত্বে রাইয়ানের ওপর হামলা চালিয়ে তার কাছে থাকা লিফলেট ছিনিয়ে নেওয়া হয়। পরে আহতাবস্থায় তাকে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
আনোয়ার ও বাবুলের প্রধান নির্বাচনী কার্যালয় উদ্বোধন : প্রতীক বরাদ্দের দিনই সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী ও জাতীয় পার্টির নজরুল ইসলাম বাবুলের প্রধান নির্বাচনী কার্যালয় উদ্বোধন করা হয়েছে। গতকাল সন্ধ্যা ৭টায় নগরীর মির্জাজাঙ্গালে হোটেল নির্ভানা ইনে উদ্বোধন করা হয় আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর প্রধান নির্বাচনী কার্যালয়। উদ্বোধনকালে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের বিপুল সংখ্যক নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন। রাত ৮টায় নগরীর কুমারপাড়ায় উদ্বোধন করা হয় জাতীয় পার্টির মেয়র প্রার্থী নজরুল ইসলাম বাবুলের প্রধান নির্বাচনী কার্যালয়।
আনোয়ার, বাবুল ও মাহমুদুলের দিনভর প্রচারণা : গতকাল দিনভর প্রচারণা চালিয়েছেন আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী, জাতীয় পার্টির নজরুল ইসলাম বাবুল ও ইসলামী আন্দোলনের হাফেজ মাওলানা মাহমুদুল হাসান। নগরীর ১২ নম্বর ওয়ার্ডের শেখঘাটে গণসংযোগ করেন আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী। এরপর তিনি ১১ নম্বর ওয়ার্ডের মধুশহীদ জামে মসজিদে জুমার নামাজ আদায় করেন এবং স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। সন্ধ্যা ৭টায় নির্বাচনী কার্যালয় উদ্বোধন শেষে রাত ৮টায় তিনি সিলেটে মৌলভীবাজার সমিতির সঙ্গে মতবিনিময় করেন। রাত ১০টায় ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের গোলাপবাগ আবাসিক এলাকায় উঠান বৈঠকে অংশ নেন। এদিকে, গতকাল সকালে প্রতীক গ্রহণ করে প্রচারণায় নামেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী হাফেজ মাওলানা মাহমুদুল হাসান। সকাল ১১টা থেকে জুমার নামাজের পূর্ব পর্যন্ত তিনি নগরীর সোবহানীঘাট, ধোপাদিঘীর পূর্বপাড়, কোর্ট পয়েন্ট, নাইওরপুল ও শিবগঞ্জ এলাকায় গণসংযোগ করেন। সোনারপাড়া জামে মসজিদে জুমার নামাজ আদায় করে তিনি ওই এলাকায় গণসংযোগ করেন। বিকাল ৪টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত তিনি নগরীর ৩৩ ও ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডে গণসংযোগ করেন। রাত ৯টায় তিনি ২১ নম্বর ওয়ার্ডের লামাপাড়ায় উঠান বৈঠকে অংশ নেন।