বুধবার, ৭ জুন, ২০২৩ ০০:০০ টা

মহাসড়কে সাড়ে ৩ ঘণ্টা নৈরাজ্য

কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহত ৫০, হাসপাতাল মার্কেট ভাঙচুর, গাড়িতে ছিনতাই আগুন সড়ক বন্ধ যাত্রীরা ভোগান্তিতে

মহিউদ্দিন মোল্লা, কুমিল্লা

মহাসড়কে সাড়ে ৩ ঘণ্টা নৈরাজ্য

কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে আওয়ামী লীগের এমপি বনাম মেয়র গ্রুপের সংঘর্ষে পুলিশসহ কমপক্ষে ৫০ জন আহত হয়েছেন। গতকাল সকাল ৯টায় শুরু হওয়া নৈরাজ্যে সাড়ে ৩ ঘণ্টা বন্ধ ছিল ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক। মহাসড়কে ৩০ কিলোমিটার এলাকায় যানজট ছড়িয়ে পড়ে। আটকা পড়ে অ্যাম্বুলেন্স, লাশবাহী, যাত্রীবাহী গাড়িসহ অন্যান্য যানবাহন। তীব্র দাবদাহের মাঝে দুর্ভোগে পড়েন নারী-শিশুসহ হাজারো যাত্রী। অনেকে পরিবহন থেকে নেমে হেঁটে পথ পাড়ি দিতে থাকেন। মহাসড়কে ককটেল বিস্ফোরণ ও গুলির ঘটনা ঘটে। চলে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া। এ সময় অস্ত্রের প্রদর্শনী দেখা দেয়। মহাসড়কে থমকে থাকা গাড়িতে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও ছিনতাই ঘটে। এতে পরিবহনের যাত্রী, চালক ও বাজারের ব্যবসায়ীদের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এ ছাড়া মহাসড়কসংলগ্ন চৌদ্দগ্রাম বাজারের হাসপাতাল ও মার্কেটে ভাঙচুর চালানো হয়। সরেজমিনে দেখা গেছে, মহাসড়কের পাশে লাঠিহাতে দাঁড়িয়ে আছে লোকজন। প্রত্যেকের হাতে লাঠি, দেশি অস্ত্র ও আগ্নেয়াস্ত্র। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল চৌদ্দগ্রাম পৌরসভার সাবেক মেয়র আওয়ামী লীগ নেতা মিজানুর রহমান বিএনপির নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে সমাবেশের আয়োজন করেন। তার সমর্থকরা যাতে সমাবেশে আসতে না পারেন সেজন্য মহাসড়কের মোড়ে মোড়ে তল্লাশি চালান স্থানীয় সংসদ সদস্য মুজিবুল হকের সমর্থকরা। এ সময় মহাসড়কে প্রাইভেট কার, মাইক্রোবাস, ট্রাক, পিকআপ ও অ্যাম্বুলেন্সও তল্লাশি করতে দেখা যায়।

চৌদ্দগ্রামের সাবেক মেয়র আওয়ামী লীগ নেতা মিজানুর রহমান বলেন, আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে হুমকির প্রতিবাদে মিছিল করতে একত্র হয়েছিলাম। এ সময় স্থানীয় সংসদ সদস্য মুজিবুল হকের সমর্থকরা লোকজনের ওপর হামলা করে। আমাদের ৩০ জনের মতো কর্মী আহত হয়েছেন। তারা ব্যাপক ভাঙচুর চালায় ও অগ্নিসংযোগ করে। স্থানীয় সংসদ সদস্য মুজিবুল হক সমর্থিত চৌদ্দগ্রাম পৌরসভার মেয়র জি এম মীর হোসেন মীরু বলেন, আমরা বিএনপি-জামায়াতের নৈরাজ্যের প্রতিবাদে সভার আয়োজন করেছি। বাধা দিতে এলে তাদের প্রতিহত করা হয়েছে। নিজেদের কয়েকজন আহত হয়েছেন বলেও তিনি দাবি করেন। চৌদ্দগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. গোলাম কিবরিয়া বলেন, আমাদের হাসপাতালে ৩০ জনের মতো চিকিৎসা নিয়েছেন। অনেকে চিকিৎসা নিয়ে চলে গেছেন। এর মধ্যে একজনকে গুরুতর অবস্থায় কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। হেলাল ফকির নামে একজন লরিচালক জানান, তিনি চট্টগ্রাম থেকে লরি নিয়ে ঢাকা যাচ্ছেন। চৌদ্দগ্রামে দেখেছেন মহাসড়কে অবস্থান করা লোকজন রামদা দেখিয়ে বিভিন্ন গাড়িতে ছিনতাই করেছে। গাড়ির গ্লাস ভাঙচুর করছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাউকে ভূমিকা নিতে তিনি দেখেননি। মিয়াবাজার হাইওয়ে পুলিশের ইনচার্জ লোকমান হোসেন বলেন, চৌদ্দগ্রাম বাজারে যানজট ছিল। আমরা যানজট নিরসনে কাজ করেছি। চৌদ্দগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শুভরঞ্জন চাকমা বলেন, আমরা দুই পক্ষের উত্তেজনা নিরসনে চেষ্টা করেছি। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক। এ সময় আমাদের চারজন সদস্য আহত হয়েছেন। কোনো পক্ষ লিখিত অভিযোগ দেয়নি বলেও তিনি জানান।

সর্বশেষ খবর