নাটোরে মাওলানা সাইদুল ইসলাম (৩৮) নামে এক শিক্ষককে মাদরাসা থেকে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে হাতুড়িপেটা করে চার কিলোমিটার দূরে সড়কের পাশে ফেলে গেছে মুখোশধারী দুর্বৃত্তরা। তিনি মাঝদিঘা নূরানি হাফিজিয়া মাদরাসার সুপারিনটেনডেন্ট এবং ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের কর্মী। শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এলাকাবাসী গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে নাটোর আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। তিনি নাটোর সদর উপজেলার মাঝদিঘা পূর্ব পাড়ার আবদুর রহমানের ছেলে।
জানা গেছে, নাটোর সদর উপজেলার মাঝদিঘা হাফেজিয়া নূরানি মাদরাসার শিক্ষক সাইদুল ইসলাম মাগরিবের নামাজ পড়ে মাদরাসার অফিস কক্ষে কোরআন তিলাওয়াত করছিলেন। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে মুখোশধারী পাঁচ-ছয়জন দুর্বৃত্ত তাকে একটি সাদা মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যায়। খবর পেয়ে মাদরাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও ছাতনী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তোফাজ্জল হোসেনসহ তার সহকর্মীরা ঘটনাস্থলে আসেন এবং থানা-পুলিশকে খবর দেন। ঘটনাস্থল থেকে প্রায় চার কিলোমিটার দূরে নাটোর-নলডাঙ্গা সড়কের চিকুর মোড়ে তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় রেখে গেছে দুর্বৃত্তরা। রাত ৮টার দিকে খবর পেয়ে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে।
ছাতনী ইউপি চেয়ারম্যান তোফাজ্জল হোসেন জানান, সন্ধ্যার পরে এলাকায় একটি সভা করার সময় তিনি সাইদুল ইসলামকে তুলে নিয়ে যাওয়ার খবর পান। পরে খোঁজখবর নিয়ে চিকুর মোড় থেকে তাকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। তার হাত-পায়ে হাতুড়ি দিয়ে বেধড়ক পেটানো হয়েছে। তিনি গুরুতর আহত। সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাছিম আহমেদ জানান, তিনি কিছুটা অসুস্থ থাকায় বিট কর্মকর্তা উপপরিদর্শক আমিনুল ইসলামকে ঘটনাস্থলে পাঠিয়েছিলেন। তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে জানিয়েছেন, সাইদুল ইসলামকে তুলে নিয়ে গুরুতর আহত করা হয়েছে। ভুক্তভোগীর পরিবারের পক্ষ থেকে এখনো কোনো অভিযোগ দাখিল করেনি। মামলা করলে পুলিশ মামলা নেবে। এ ঘটনায় তদন্ত করে দায়ী ব্যক্তিদের শনাক্ত করে বিচারের আওতায় আনা হবে।উল্লেখ্য, চলতি বছরে এক মাসে নাটোরের চার উপজেলায় ১০ জনকে তুলে নিয়ে পিটিয়ে, কুপিয়ে, হাত-পায়ের রগ কেটে, গুলি করে গুরুতর জখম করা হয়েছে। আগের ৯ জনের মধ্যে একজন বিএনপি ও দুজন যুবদলের নেতা। বাকি ছয়জন জামায়াতে ইসলামীর নেতা-কর্মী ও সমর্থক। ওই ৯টি হামলার ঘটনার ছয়টি ঘটেছে নলডাঙ্গা উপজেলায়। বাকি তিনটি নাটোর সদর, সিংড়া ও লালপুর উপজেলার।