রাজশাহীর তানোরে পরকীয়ার ফাঁদে পড়ে সর্বস্ব হারিয়ে বিয়ের দাবিতে অনশন করছিলেন এক গৃহবধূ। বিয়ে তো করেননি, উল্টো খুঁটির সঙ্গে দড়ি দিয়ে বেঁধে গৃহবধূকে নির্যাতন করেন পরকীয়া প্রেমিক শাহিন ও তার চাচাতো ভাই সোহেল। শনিবার বিকালে এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হলে সেটি নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়।
রাজশাহীর তানোর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুর রহিম জানান, খবর পেয়ে পুলিশ পাঠিয়ে গৃহবধূকে উদ্ধার করা হয়েছে। পরে চিকিৎসার জন্য তাকে স্থানীয় হাসপাতালে পাঠানো হয়। এ ঘটনার পর তার স্বজনদের থানায় লিখিত অভিযোগ দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। অভিযোগ পেলে পুলিশের পক্ষ থেকে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তবে পুলিশের কাছে ওই গৃহবধূ মৌখিক অভিযোগ করেছেন, বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে উপজেলার বাধাইড় ইউনিয়নের গাল্লা বৈদ্যপুর গ্রামের শাহিন তার সঙ্গে ১১ বছর ধরে প্রেমের সম্পর্ক রাখেন। একপর্যায়ে শাহিন বিদেশ যান। এর ফাঁকে তার অন্যত্র বিয়ে হয়। শাহিন বিদেশ থেকে এসে আবারও পরকীয়ার সম্পর্ক গড়ে তোলেন। এ সুবাদে একাধিকবার শারীরিক সম্পর্কও গড়ে তোলেন শাহিন। একপর্যায়ে তিনি গর্ভবতী হয়ে পড়েন। কিন্তু শাহিন ও তার চাচাতো ভাই সোহেলের পরামর্শে গর্ভপাত ঘটান। এরপর থেকে একাধিকবার ওই গৃহবধূ শাহিনকে বিয়ের কথা বলেন। কিন্তু বিয়ে না করে উল্টো তাকেই নানা ধরনের ভয়ভীতি ও প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেন। গত বুধবার শাহিনকে তানোরের মুন্ডুমালা বাজারে দেখে বিয়ের দাবিতে গৃহবধূসহ স্বজনরা চাপ দেওয়া শুরু করেন। কিন্তু শাহিনের চাচাতো ভাই সোহেল স্থানীয় ইউপি সদস্য সোহরাবের মধ্যস্থতায় বিয়ের কথা বলে শাহিনকে ছাড়িয়ে নেন। তারপর থেকেই শাহিন ও সোহেল নানাভাবে হুমকি দেওয়া শুরু করেন। বাধ্য হয়ে তিনি মুন্ডুমালা পুলিশ ফাঁড়িতে লিখিত অভিযোগ দেন। এ ছাড়া পরদিন ২৯ আগস্ট ওই গৃহবধূ শাহিনকে বিয়ে করার জন্য তার বাড়িতে অনশন শুরু করেন। কিন্তু শাহিন ও তার চাচাতো ভাই সোহেল তাকে মারধর করে দড়ি দিয়ে খুঁটির সঙ্গে বেঁধে রাখেন।
তিনি আরও অভিযোগ করেন, বুধবার জানতে পারেন শাহিন দু-এক দিনের মধ্যে অন্য কাউকে বিয়ে করবে। কিন্তু কোনো উপায় না থাকায় তিনি শাহিনকেই বিয়ে করতে চান। এ নিয়ে তিনি থানায় মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানান।