বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে ব্যবসা, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন নতুন সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে যৌথ উদ্যোগ গ্রহণের ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন উভয় দেশের ব্যবসায়ীরা। গতকাল রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে এফবিসিসিআই আয়োজিত দি ফেডারেশন অব পাকিস্তান চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফপিসিসিআই) ব্যবসায়ী প্রতিনিধি দলের সঙ্গে ‘বাংলাদেশ-পাকিস্তান বিজনেস ফোরাম’ শীর্ষক সভায় দুই দেশের ব্যবসায়ী নেতারা সম্ভাবনাময় বিভিন্ন খাতে যৌথ উদ্যোগ গ্রহণের আগ্রহ ব্যক্ত করেন। সভায় সভাপতিত্ব করেন এফবিসিসিআই প্রশাসক মো. হাফিজুর রহমান। এ সময় দি ফেডারেশন অব পাকিস্তান চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফপিসিসিআই)-এর সভাপতি আতিফ ইকরাম শেখ, সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট সাকিব ফায়াজ মাগুন, ঢাকায় নিযুক্ত পাকিস্তানের ডেপুটি হাইকমিশনার মোহাম্মদ ওয়াসিফ, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (বাণিজ্য উইং) নাজনীন কাওসার চৌধূরী, এফবিসিসিআইর সাবেক পরিচালক ও সহায়ক কমিটির সদস্য গিয়াসউদ্দিন চৌধুরী (খোকন), এফবিসিসিআইর মহাসচিব মো. আলমগীর, এফবিসিসিআইর সাবেক পরিচালক ও অন্যান্য ব্যবসায়ী নেতৃত্ববৃন্দ, এফপিসিসিআইয়ের ব্যবসায়ী প্রতিনিধি দলের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
স্বাগত বক্তব্যে এফবিসিসিআই প্রশাসক মো. হাফিজুর রহমান বলেন, বিগত বছরগুলোয় বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্যে ধারাবাহিক প্রবৃদ্ধি দেখা গেলেও কৃষি, বস্ত্র, ওষুধ, আইসিটিসহ সম্ভাবনাময় অনেক খাত এখনো অনাবিষ্কৃত থেকে গেছে। যৌথ উদ্যোগের মাধ্যমে উভয় দেশের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য বহু গুণ বৃদ্ধি করা সম্ভব। বাংলাদেশ-পাকিস্তান বাণিজ্য সম্পর্ক জোরদারের লক্ষ্যে দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থা (সার্ক) এবং ইসলামি সহযোগিতা সংস্থা (ওআইসি)-কে কাজে লাগানোর ওপর গুরুত্ব দেন মো. হাফিজুর রহমান। এফবিসিসিআই প্রশাসক বলেন, চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় জ্বালানি, শিক্ষা, প্রযুক্তি, মানবসম্পদ উন্নয়ন, গবেষণা ও উদ্ভাবন প্রভৃতি খাতে দুই দেশের নিবিড়ভাবে কাজ করার সুযোগ রয়েছে। এফবিসিসিআই এবং এফপিসিসিআই সম্মিলিতভাবে বিভিন্ন কর্মশালা, সেমিনার, বিটুবি মিটিংসহ ‘সিঙ্গেল কান্ট্রি ট্রেড ফেয়ার’ আয়োজনের উদ্যোগ নিতে পারে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। এ সময় দি ফেডারেশন অব পাকিস্তান চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফপিসিসিআই)-এর সভাপতি আতিফ ইকরাম শেখ বলেন, বাংলাদেশ-পাকিস্তানের মধ্যে বিপুল বাণিজ্য সম্ভাবনা রয়েছে। বিশেষ করে কৃষি, ওষুধ, চামড়া, মেশিনারি, কেমিক্যাল, আইসিটি খাতে দুই দেশের একসঙ্গে কাজ করার যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে। এ ক্ষেত্রে আঞ্চলিক যোগাযোগের সুবিধাকে কাজে লাগানো যেতে পারে। একই সঙ্গে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যের ক্ষেত্রে বেশকিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে উল্লেখ করে তিনি অবকাঠামো, বন্দর ও লজিস্টিকস সক্ষমতা উন্নয়নের ওপর জোর দেন। কৃষি খাতে যৌথভাবে কাজ করার পাশাপাশি দুই দেশের মধ্যে প্রযুক্তিগত জ্ঞান আদান-প্রদানের মাধ্যমে অর্থনীতিতে বিরাট পরিবর্তন আনা সম্ভব বলে মন্তব্য করেন এফপিসিসিআইয়ের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট সাকিব ফায়াজ মাগুন। সভায় বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে বাণিজ্য শক্তিশালীকরণের লক্ষ্যে এফবিসিসিআই এবং এফপিসিসিআইয়ের মধ্যে জয়েন্ট বিজনেস কাউন্সিল গঠনের বিষয়ে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়।