রাজশাহী নগরীর ছোট বনগ্রাম এলাকায় চারটি সড়কের মিলনস্থল ‘বারো রাস্তার মোড়’ নামে পরিচিত। রাস্তার চারপাশ চকচক করলেও প্রতিনিয়ত ঘটছে মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। স্থানীয়রা বলছেন, গত এক মাসে ডজনখানেকের ওপর দুর্ঘটনা ঘটেছে। ফলে তারা এ মোড়ের নাম দিয়েছেন মরণ রাস্তার মোড়। অভিযোগ আছে, দীর্ঘদিন থেকে মোড়ে গোল চত্বর নির্মাণের দাবি জানানো হলেও কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ।
এ ব্যাপারে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (ভারপ্রাপ্ত) আল মঈন খান বলেন, ‘এই মোড়ে গোল চত্বরের পরিকল্পনা আছে। বড় একটি প্রকল্পের মেয়াদ বৃদ্ধির প্রক্রিয়া অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে। অনুমোদন হলেই কাজটা করা সম্ভব হবে। আশা করি এ মাসের সভায় অনুমোদন হয়ে যাবে। চত্বর নির্মাণের পূর্বে সেখানে ঝুঁকি কমাতে দ্রুতই কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’
এর আগে, গত বছর সেপ্টেম্বরে এ মোড়ে দুর্ঘটনার শিকার হন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক গোলাম রব্বানী। তিনি রক্ষা পেলেও তার গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। গত ৩০ ডিসেম্বর দুর্ঘটনার শিকার হন রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক হাসান আহমদ। গত ১৩ জানুয়ারি মেয়েকে স্কুল থেকে নিতে যাওয়ার পথে এ মোড়ে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষক পুরনজিত মহালদার মৃত্যুবরণ করেন। এ ঘটনায় ওই মোড় সংস্কারের দাবি তুলেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। সরেজমিনে দেখা গেছে, ছোটবোন গ্রামের এই মোড়ে চারটি সড়কের প্রান্তসীমা এসে মিলিত হয়েছে। সড়কের চারদিক থেকে প্রবল গতিতে ছোট-বড় যানচলাচল করছে। সেখানে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ ও স্পিড ব্রেকার নেই। রাস্তার ওপর বালির আস্তরণ পড়ে আছে। নেই পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা। হাতের ইশারায় রাস্তা পারাপার করছে মানুষ ও যানচালকরা। মোড়ের কিছু দুর্ঘটনার ছবি সংবলিত প্ল্যাকার্ড টানানো হয়েছে। এতে লেখা আছে ‘মরণ রাস্তা থেকে গোল চত্বর চাই’।
জানা গেছে, কয়েক দিন আগে মোড়ে গোল চত্বর নির্মাণের দাবিতে মানববন্ধন করেন স্থানীয়রা। ফলে দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণে ট্রাফিক পুলিশ রাখা হয়। তবে এই পুলিশের সক্রিয় কার্যক্রম নেই বলে অভিযোগ আছে।
এ ব্যাপারে মহানগর ট্রাফিক পুলিশের উপকমিশনার মো. নূর আলম সিদ্দিকী বলেন, ‘ওই মোড়টা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। ট্রাফিক পুলিশ রাখাটাও নিরাপদ নয়। এই বিষয়টি দেখে সিটি করপোরেশন ও রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (আরডিএ)। তবে এই এলাকার ঝুঁকির বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হয়েছে।